ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শটগানের ৬৭টি কার্তুজসহ জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দুই কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা শহরের কাউতলী এলাকায় ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। আজ বুধবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে দুজনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযানের সময় দুজনের কাছ থেকে ২৭টি ভারতীয় শাড়ি, এক জোড়া হাতকড়া ও একটি নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন সাখাওয়াত হোসেন (২৯) ও সোহরাব হোসেন (৩০)। তাঁরা দুজনই জেলা ডিবি পুলিশের কনস্টেবল।

ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডিবির কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন ও সোহরাব হোসেন জেলা শহরের কাউতলী এলাকার ভাড়া বাসার চতুর্থ তলায় থাকতেন। এক তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অভিযান) মো.

ওবায়দুর রহমানের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলামসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করেন। পরে এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল আহমেদ বাদী হয়ে দুজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে সদর থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ইকবাল হোছাইন প্রথম আলোকে বলেন, কীভাবে ও কোথায় থেকে এসব তাঁরা পেলেন এবং কেন এসব তাঁদের সংরক্ষণে ছিল—সবই তদন্ত হবে। নিয়মানুসারে তাঁরা চাকরিচ্যুত হবেন। তিনি আরও বলেন, ‘ডিবি পুলিশ কোনোভাবে তাঁদের কাছে কার্তুজ আছে জানতে পেরে ঊর্ধ্বতন স্যারকে জানিয়েছে। স্যারের নির্দেশেই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ জনক

এছাড়াও পড়ুন:

আলাদীনস পার্কে ঢাকার স্কুলের পিকনিকে রক্তাক্ত সংঘাত

ঢাকার ধামরাইয়ে আলাদীনস পার্ক নামে বিনোদনকেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের পিকনিকের আনন্দ শেষ হলো সেখানকার কর্মচারীদের সঙ্গে রক্তাক্ত সংঘাতের মধ্য দিয়ে।

পিকনিকে আসা শিক্ষার্থীদের মোবাইল হারানোকে কেন্দ্র করে পার্ক কর্মচারীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোকজন আহত হয়েছে। 

ধামরাই থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ঘটনা সম্পর্কে অবহিত। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আহতদের নাম ও বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। তবে ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

কাশেমের মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে গাজীপুর, রাতেই মশাল মিছিল

ধামরাইয়ের সড়কে ঝরল প্রাণ

সংঘর্ষের মধ্যে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিনোদনকেন্দ্রের বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালান। আর শিক্ষার্থীদের বহনকারী কয়েকটি বাস ভাঙচুর করেন পার্কের কর্মচারীরা।

ঢাকার মিরপুরের বনফুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আলাদীনস পার্কে পিকনিক করতে আসেন। 

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের সিতি এলাকায় আলাদীনস পার্কে এই সংঘাত হয়েছে। 

সকাল ১০টার দিকে ঢাকার মিরপুরের বনফুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আলাদীনস পার্কে পিকনিক করতে আসেন।

সকাল ১০টার দিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৬৫০ জন ১২টি বাসে আলাদীনস পার্কে আসেন। দুপুরের দিকে শিক্ষার্থীরা তাদের মোবাইল ও অন্যান্য জিনসপত্র লকারে রেখে ওয়াটার পার্কে নামেন। তবে পানি থেকে উঠে কয়েকজন শিক্ষার্থী লকার খোলা ও সেখানে মোবাইল খুঁজে পাননি। 

শিক্ষার্থীরা এ জন্য পার্ক কর্মচারীদের দায়ী করলে উভয় পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকদের মধ্যস্ততায় মীমাংসা হয়, তবে মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিকেল ৫টার দিকে বিনোদনকেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন না নিয়ে সেখান থেকে যেতে রাজি হন না। 

একপর্যায়ে তারা বিনোদনকেন্দ্রের কয়েকটি স্থাপনায় ভাঙচুর করেন। এ সময় বিনোদনকেন্দ্রের কর্মচারীরা তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় সংঘর্ষ বেঁধে যায। 

সংঘর্ষে আহত পার্কের পক্ষের এক তরুণ। ছবি: রাইজিংবিডি

পার্কের কর্মচারীরা শিক্ষার্থীদের অন্তত আটটি বাসে ভাঙচুর চালিয়েছেন। সংঘর্ষে ২৫-৩০ শিক্ষার্থী ও ১০-১৫ জন পার্কের কর্মচারী রক্তাক্ত হন। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

আহতদের উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়।

বনফুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক নাসির আফজাল বলেন, “আমাদের ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা মামলা করব। ক্ষতিপূরণের বিষয় রয়েছে।”

আলাদীনস পার্কের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা নকিবুল হাসান রনি বলেন, “আমাদের ১৫-১৬ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবারই শরীরে রক্তাক্ত জখম। আহত সবাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/সাব্বির/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ