ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বিএনপির এক পক্ষের হামলায় অপর পক্ষের লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পণ্ড হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার বিকেলে উপজেলার বাইপাস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সায়মন (২৫) ও সাব্বির (২২) নামের ছাত্রদলের দুজন কর্মী আহত হয়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি মো.

হাবিবুর রহমান (সেলিম রেজা) ঝালকাঠি-১ (রাজাপুর-কাঠালিয়া) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (জামাল) একই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনি ২০০৯ সালে বিএনপির মনোনয়নে এ আসনে নির্বাচন করেছিলেন। উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দুই নেতার পক্ষ হয়ে রাজনীতি করেন।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে অনুসারীরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আওতায় রাষ্ট্রমেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করছিলেন। বিকেলের দিকে রাজাপুর বাইপাস এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় তাঁদের কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।

হাবিবুর রহমানের অনুসারী কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আজম প্রথম আলোকে বলেন, সদ্য স্থগিত হওয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নাসিম উদ্দিন আকনের নেতৃত্বে হামলায় তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পণ্ড হয়ে গেছে। হামলায় ছাত্রদলের দুজন কর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁরা রাজাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হবে।

অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা নাসিম উদ্দিন আকনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে ঘটনার পর সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স মিলনায়তনে রফিকুল ইসলামের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সংবাদ সম্মেলন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আজকে যাঁরা বিএনপির পক্ষে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করেছেন, তাঁরা বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত শাহজাহান ওমরের অনুসারী। তাঁদের রাজাপুর উপজেলাবাসী চেনেন না। তাঁরা উপজেলা বিএনপির নেতাদের না জানিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন। রাজাপুরের মানুষ তাঁদের প্রতিহত করেছেন।

রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় বিএনপির একটি পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র এ ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি কর্মচারীকে পিটিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বললেন, ‌‌‌‘রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি’

দিনাজপুরের বিরামপুরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলার সময় বিএনপির নেতাদের সামনেই উপজেলা পরিষদের কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল নামের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। তারা বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার দুপুরে দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্ত মঞ্চ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল বলেছেন, ‘আমি রাগ কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছি। খাবার বিতরণের অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অপমান করায় এমনটি হয়েছে। তবে আমার ভুল হয়েছে।’

আহতরা হলেন, উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক, আবু হোসেন, ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম ওরফে রনি। তাদের মধ্যে এমদাদুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

ঘটনার সময় বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও এ ঘটনার সত্যতা  নিশ্চিত করে বলেছেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হাজার লোকের আয়োজন ছিল। সেখানে এমন ঘটনা ঠিক হয়নি। আহত তিন কর্মচারীকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, এ ঘটনায় ইউএনওর কার্যালয়ের কর্মচারীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। 

জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সোমবার উপজেলা পরিষদের ভেতর মুক্তমঞ্চে চলছিল। অনুষ্ঠানের ফাঁকে উপজেলা পরিষদ ও ইউএনও অফিসের কয়েকজন কর্মচারী আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য পান্তা, মাছ ,ভর্তা ও পানি আপ্যয়নের ব্যবস্থা করছিলেন। এ সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল ও তার সহযোগীরা খাবার নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনেই তারা বেধড়ক মারপিট করে তিনজনকে আহত করেন।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনওর কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি বলেন, সুন্দর পরিবেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। এর ফাঁকে অতিথিদের জন্য পান্তা উৎসব শুরু করার জন্য আমরা কয়েকজন নিয়োজিত ছিলাম। আমাদের কাজের ফাঁকে বিএনপির পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল নিজেই খাবার নিতে শুরু করে। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের পিটিয়ে আহত করে।

অনুষ্ঠানের সামনের অংশে আমরা ছিলাম। ঘটনা আমাদের থেকে অনেক দূরে উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, এমন একটি অনুষ্ঠানে এই আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন আচরণের পর আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে এসেছি।

অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে রয়েছি, ওরা পৌর কমিটির। তারপরও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ