গুমের শিকার মানুষদের মুক্তি অভ্যুত্থানের বড় প্রাপ্তিগুলোর একটি বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ বুধবার ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন শেষে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, নৃশংস! এটাই আমাদের দেখা সবচেয়ে ভয়ংকর আয়নাঘর। তিন ফুট বাই এক ফুটের সেল। দুই বিঘত জায়গায় টয়লেট। বাকি দুই ফুটে হাঁটু মুড়ে বসে থাকার জায়গা। আমার মনে হয় জুলাই অভ্যুত্থানের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিগুলোর একটি হলো গুমের শিকার মানুষদের মুক্তি। বাংলাদেশে যেন আর কখনো গুমের মতো মানবতাবিরোধী কিছু না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সরকার গঠনের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় গুম কমিশন গঠন করেছি, যারা দিনরাত কাজ করে নৃশংসতার বিবরণগুলো ডকুমেন্ট করেছেন। ২১ দিনের মাথায় আন্তর্জাতিক গুমবিরোধী কনভেনশনে সই করেছি। আজকে মিডিয়ার মাধ্যমে বিশ্ববাসী দেখবেন হাসিনার নৃশংসতার কিছু নমুনা। আরও শ শ নমুনা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে।

মাহফুজ আলম বলেন, গত ৬ মাস গুম কমিশন গুমের ভিক্টিমদের সাক্ষ্য নিয়ে, তদন্ত করে গুমের স্থান, কাল ও সত্যতা নিরূপণ করেছেন। সে সূত্রে আইসিটি ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। বিচারের কাজও শুরু হয়েছে। গুমের শিকার প্রতিটা মানুষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা গণঅভ্যুত্থানের সরকারের অঙ্গীকার।

উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসসহ ছয় উপদেষ্টা আজ বুধবার ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন। রাজধানীর তিনটি এলাকায় র‌্যাব ও ডিজিএফআইয়ের এসব গোপন বন্দীশালা পরিদর্শনের সময় সঙ্গে ছিল কয়েকটি গণমাধ্যমের প্রতিনিধি। পরিদর্শন শেষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ উপদ ষ ট কর ছ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রেডিওর আবেদন কমেনি আব্দুল মান্নানের কাছে

সময়টা ইন্টারনেট আর আকাশ সংস্কৃতির। এ যুগে রেডিওর ব্যবহার শহর তো দূরের কথা, গ্রামেও চোখে পড়ে না। তবে রেডিওর আবেদন একটুও কমেনি ঈশ্বরদী পৌর এলাকার সাঁড়াগোপালপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের কাছে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নানের বয়স ৮০ বছর। তিনি রিকশা-সাইকেলের মেকানিক। সাঁড়াগোপালপুর টিপু সুলতান রোডে রেলের জমিতে তাঁর বসবাস। সামান্য আয়ে জীবনযাপন করলেও রেডিওর প্রতি তাঁর আকর্ষণ কমেনি একটুও। প্রতিদিন টং দোকানে বসে কাজ করার সময় রেডিও ছেড়ে দেন। গান খবর শুনতে শুনতে কাজ করেন। আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব বেতার দিবস। এ দিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে আব্দুল মান্নানের কোনো ধারণা না থাকলেও রেডিও তাঁর নিত্যসঙ্গী। 

১৯৬০ সালে ৯ টাকা দিয়ে ছোট্ট একটি রেডিও কিনেন কিশোর আব্দুল মান্নান। সেই থেকে যন্ত্রটির প্রতি আকর্ষণ বাড়ে তাঁর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়ও রেডিওটি কাছে রাখতেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ‘বিবিসি’ বাংলা বিভাগের খবর শুনেছেন। সেই খবর অন্যদের পৌঁছে দিতেন। 

তিন ব্যান্ডের রেডিওর নব ঘোরাতে ঘোরাতে আব্দুল মান্নান বলেন, আগে বেতার বাংলাদেশে ভালো ভালো অনুষ্ঠান হতো। অনুরোধের আসর, ঘণ্টায় ঘণ্টায় খবর হতো। এখন গতানুগতিক কিছু অনুষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেডিও। এর পরও আমি নিয়মিত রেডিও শুনি। বিছানায় গেলে বালিশের পাশে রেডিও না থাকলে ঘুম হয় না আমার।

গবেষক ও কলাম লেখক মোশাররফ হোসেন মুসা বলেন, বেতার এখনও শক্তিশালী হাতিয়ার। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ সম্পাদন ও দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় বেতারের ভূমিকা অনন্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ