কিছুদিন আগে নানার বাড়িতে যাওয়ার জন্য মায়ের সঙ্গে বায়না ধরেছিল শিশু রোহান মিয়া (৯)। কিন্তু, পারিবারিক কাজের চাপে ছেলেকে নিয়ে যেতে পারছিলেন না মোসলেমা বেগম। অবশেষে জেদ সহ্য করতে না পেরে ছেলেকে নিয়ে চার্জার ভ্যানযোগে বাবার বাড়িতে (শিশুটির নানার বাড়ি) রওনা দেন তিনি। কিন্তু, নানার বাড়িতে আর যাওয়া হয়নি তার। পিকনিক বাসের ধাক্কায় পিষ্ট হয়ে লাশ হয়ে ফিরেছে বাড়িতে।

বুধবার দুপুরে লালবাগ-ভেন্ডাবাড়ি জেলা সড়কের রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শাল্টিপাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, নিহত শিশুর নাম মো.

রোহান মিয়া (৯)। সে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শাল্টিপাড়া গ্রামের আক্তারুল ইসলামের ছেলে। স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করত রোহান। এ ঘটনায় চার্জার ভ্যানের আরও ২ যাত্রী আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন- নিহতের মা মোসলেমা বেগম ও ফরমুদেরপাড়া গ্রামের লাইজু মিয়া।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের শাল্টিপাড়া গ্রাম থেকে পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ীর চেতনাপাড়ায় চার্জার ভ্যানে যাচ্ছিলেন মোসলেমা। পথে উপজেলার রাঙ্গাপুকুর এলাকায় ভেন্ডাবাড়ি থেকে রংপুরগামী একটি পিকনিক বাস সামনে এসে ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশুটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আহত ওই ২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

মিঠাপুকুর থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

রোহানের বাবা আক্তারুল ইসলাম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ম্যালা সখ করি ছনলটাক (ছেলেকে) হাফিজিয়া মাদ্রাসায় দিছনু। মানুষ করমো। হামার সখ কোটে গেলো? মোর ছইল কোটে গেলো?’ 

শিশুটির দাদা রাজা মিয়া বলেন, ‘মোর একটায় নাতী। দিন-আইত (রাত) মোরে কাছে আছিলো (ছিল)। দাদা দাদা কয়া ডাকছিল। আইজ থাকি আর কে মোক দাদা কয়া ডাকপে’?

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ