দুদক চেয়ারম্যানের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণা
Published: 12th, February 2025 GMT
একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নামে ফেসবুক আইডি এবং হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে অবাধে প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রেজোয়ানুল হক নামের এক ব্যক্তি দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলেছেন।
বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.
জানা যায়, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তৎপরতায় প্রতারক চক্রের অপতৎপরতা ধরা পড়ে। দুদকের নামে প্রতারণা অভিযোগে ওই রেজোয়ানুল হককে আগে একবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন। পরে তিনি জামিনে বের হয়ে যান। রেজোয়ানুলের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জে। তার বাবার নাম মো. আল আমিন ও মা নুরজাহান।
দুদক জানায়, রেজোয়ানুলের নেতৃত্বে প্রতারক চক্রের সদস্যরা দুদকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নাম, পদবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে দুদকের মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং সাধারণ জনগণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। ইদানীং তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রেজোয়ানুল তার সহযোগী ইয়াসমিন আক্তারের নামে রংপুর সদরের নবাবগঞ্জ এলাকার আজহার প্লাজায় ডাচ বাংলা ব্যাংকে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। ওই হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। যা কমিশনের গোয়েন্দা কার্যক্রমে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এছাড়াও তার অপর সহযোগী জরিনা বেগমের নগদ অ্যাকাউন্টে অবৈধ অর্থ জমা করিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতারক চক্র সাধারণ মানুষকে হয়রানি করাসহ দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করছে। দুদক কারও বিরুদ্ধে অনুসন্ধান বা তদন্ত শুরু করলে পত্র মারফত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানানো হয়। টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয় না। পত্রটি ভুয়া কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয় অথবা নিকটস্থ দুদকের বিভাগীয় অথবা জেলা কার্যালয়ে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অন্য কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে বা রেজোয়নুল ও তার সহযোগীদের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য কারও কাছে থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে দুদক হট লাইন-১০৬ নম্বরে জানানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করারও আহ্বান জানিয়েছে দুদক।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষক লীগ নেতা ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে
রংপুরের পীরগঞ্জে মদনখালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে কৃষক লীগের নেতা শাহজাহান আলীকে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মী। এ ছাড়া একই উপজেলার চৈত্রকোল ইউপিতেও তপশিল ঘোষণার পরও পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে রংপুরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন চৈত্রকোল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি সদস্য মমিনুর রহমান এবং মদনখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি মদনখালী ইউপিতে নির্বাচনের জন্য তপশিল ঘোষণা করে উপজেলা কমিটি। ৯ ফেব্রুয়ারি কাদিরাবাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর আগেই পকেট কমিটি করে ওয়ার্ডের সভাপতি-সম্পাদকসহ স্থানীয় সবার রেজুলেশনে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে নির্বাচনের দিন সন্ধ্যায় কৃষক লীগ নেতা শাহজাহান আলীকে সাধারণ সম্পাদক ও রফিকুল ইসলাম সাজুকে সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
মমিনুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে রাজনীতি করার সময়ে হামলা-মামলাসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপির রাজনীতি করার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ কিছুই করতে পারেননি। কিন্তু ইউনিয়ন বিএনপির নির্বাচনে প্রার্থী হতে তপশিল অনুযায়ী সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেও নির্বাচনের দিন তারা নিজ স্বার্থে পকেট কমিটি গঠন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পদবঞ্চিত দু’জন নেতা অনিয়মতান্ত্রিক এবং ভোটাধিকার হরণ করে চৈত্রকোল ও মদনখালী ইউনিয়নে কমিটি গঠনের তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অনৈতিকভাবে গঠিত কমিটি বাতিলসহ গণতান্ত্রিকভাবে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ বিএনপির সদস্য সচিব জাকির হোসেন বলেন, শাহজাহান আলী দীর্ঘদিন আগে কৃষক লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন তা ঠিক। সঠিক কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্য পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। পদ না পেলে এমন অভিযোগ আসাটাই স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কয়েকবার যোগাযোগ করা হয়। তিনি ফোন ধরেননি।