বিতর্কের মধ্যেই রণবীরের বিচ্ছেদের গুঞ্জন
Published: 12th, February 2025 GMT
বিপাকে পড়েছেন জনপ্রিয় ইউটিউবার রণবীর আল্লাহবাড়িয়া। সময় রায়নার শো ‘ইন্ডিয়াস গট ল্যাটেন্ট’-এ বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে। এবার ব্যক্তিগত জীবনেও পড়ল এই বিতর্কের প্রভাব। শোনা যাচ্ছে, এ ঘটনার জেরে প্রেমিকা নিক্কি শর্মার সঙ্গে রণবীরের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রণবীর ও নিক্কি একে অপরকে ইনস্টাগ্রামে আনফলো করে দিয়েছেন। আনফলো করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই এই ব্রেকআপের গুঞ্জন আরও বেশি জোরালো হয়েছে। সম্প্রতি নিকির পোস্ট করা একটি লেখা পড়লে বোঝা যায়, তাঁদের সম্পর্ক হয়তো আর নেই।
সম্প্রতি নিক্কি একটি পোস্ট করেন যেখানে লেখা, ‘আপনার শরীর যে শুধু খারাপ খাবারকে প্রত্যাখ্যান করে তা নয়, আপনার শরীর খারাপ এনার্জিকেও প্রত্যাখ্যান করে। যখন কোনো নির্দিষ্ট জায়গা, মানুষ অথবা জিনিস আপনার শরীর প্রত্যাখ্যান করতে শুরু করে, তখন তাতে সাড়া দেওয়া উচিত। আপনার মনের কথা শুনুন এবং বিশ্বাস করুন।’
কিছুদিন আগেই গোয়ায় ঘুরতে গিয়েছিলেন রণবীর ও নিক্কি। গোয়ায় একটি ভয়ানক ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন তাঁরা। মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছিলেন রণবীর ও নিক্কি। সবকিছুই তাঁদের মধ্যে ভালো চলছিল, কিন্তু আচমকাই যেন সবকিছু পাল্টে গেল।
আরও পড়ুনআপত্তিকর মন্তব্য, ক্ষমা চেয়েও পার পাচ্ছেন না রণবীর৫ ঘণ্টা আগেএদিকে রণবীরের বিতর্কিত মন্তব্যের পর তাঁর অনুসারীর সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই’
রাজকী বেগমের চোখের সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। তাঁর ছেলেমেয়েদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহাজারি করতে করতে রাজকী বেগম বলছিলেন, ‘আমার তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, আমার স্বামী হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।’
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজকী বেগমের স্বামী হাসিম মোল্যা (৩৮)। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে হাসিম মোল্যার মরদেহ এসে পৌঁছায়। আসরের নামাজ পর জানাজা শেষে স্থানীয় বাগমারা কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়ার হামিদপুর ইউনিয়নের শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ঠান্ডু মোল্যা ও জনি মোল্যা পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৩ জন ও ২ পুলিশ সদস্য আহত হন৷ স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত জনি মোল্যা ও তাঁর ভাই হাসিম মোল্যাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিম মোল্যা মারা যান। ওই ঘটনায় সিরাজ মোল্যা ও আজিজার শেখ নামের দুজনকে ১টি একনলা বন্দুক, ২০টি গুলিসহ আটক করা হয়।
গতকাল বিকেলে শিলিমপুরে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার পরিবেশ থমথমে। নিহত ব্যক্তির প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানো হয়েছে। মরদেহ আসার খবরে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছেন হাসিম মোল্যাদের বাড়িতে। অঝোরে কাঁদছেন বৃদ্ধ মা জাহিদা বেগম। তাঁর পাশেই কাঁদছেন হাসিম মোল্যার স্ত্রী রাজকী বেগম।
রাজকী বেগমের অভিযোগ, বাড়ির পাশে তাঁর সামনেই প্রতিপক্ষের লোকজন স্বামী ও সন্তানকে কুপিয়েছিলেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী মারা গেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাজকী বেগম বলেন, ‘আমার সামনেই ওরা (প্রতিপক্ষ) স্বামীর মাথায় কোপ দেয়, হাত কেটে ফেলে। আমি কইছি, আর মারিস না, আমার কথা শুনল না। পাশেই আমার সন্তানরেও ওরা কোপাইয়ে ফেলাই থুইছে। ওই সময় আমার কেয়ামত হয়ে যাচ্ছে। আমি স্বামীর কাছে আসব, নাকি সন্তানের কাছে যাব। আমার ছেলের এক পায়ে তিনটে কোপ দেছে। আমি এসবের বিচার চাই।’
নিহত হাসিম মোল্যার বোন নাজনীন আক্তার বলেন, ‘প্রতিপক্ষ আমার এক ভাইয়ের হাত কেটে দেছে, ভাতিজাকে কুপিয়েছে। আমার আরেক ভাইকে খুন করিছে যারা, তাদের ফাঁসি চাই।’
এদিকে হাসিম মোল্যার মৃত্যুর পর প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের লোকজন এলাকায় না থাকায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
গতকাল রাত ১০টার দিকে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক। নিহত হাসিমের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি। তবে পুলিশকে মারধর এবং অস্ত্র, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে।