টাঙ্গাইলে মরা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক ব্যক্তিকে এক মাসের জেল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পৌরসভার সুপারিবাগান ওয়াল্টন মোড় বাজারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এ অভিযান পরিচালনা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম আনোয়ার। তিনি পৌরসভার ভাল্লুককান্দি এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে।

এলাকাবাসী জানান, বেড়াডোমা এলাকায় বাছেরের একটি বকরা গরু মারা গেলে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তিন জন মিলে ওই গরুর মাংস বাজারে নিয়ে বিক্রি করছিল। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পৌর এলাকার সুপারিবাগান ওয়াল্টন মোড় বাজারে দিলু মিয়ার মাংসঘরে মরা গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানতে পারি। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে মাংস ব্যবসায়ী দিলু মিয়া পালিয়ে যায়। এসময় হাতেনাতে মরা গরুর মাংস জব্দ করে দুজনকে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনে নিয়ে আসা হয়।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘পরে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মাংস বিক্রেতা আনোয়ারকে এক মাসের জেল ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন।’’

ঢাকা/কাওছার/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ডাকাত অপবাদ দিয়ে তিন জেলেকে মারধর

হাতিয়ায় তিন জেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে জাহাজমারা ইউনিয়নের কাদেরিয়া স্লুইসগেট এলাকার সরকারি ব্যারাক হাউসে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগীদের স্বজন জানিয়েছেন, কারামুক্ত স্থানীয় এক বিএনপি নেতার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার জের ধরে অপর এক বিএনপি নেতার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা নির্যাতনের পর তিনজনকে ডাকাত সাজিয়ে পুলিশে তুলে দেয়। 

হাতিয়া থানার ওসি জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে অতীতে অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বুধবার তিনজনকেই স্বজনের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী জেলেরা হলেন– চরকাদেরিয়া গ্রামের আলী আজ্জমের ছেলে ফখরুউদ্দিন (২৮), মো. দিলুর ছেলে শাহারাজ (২৭) ও কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. কাউসার (২৭)। তারা তিনজনই পেশায় জেলে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তাদের ভাষ্য, দু-এক দিন আগে দীর্ঘ কারাভোগ শেষে এলাকায় ফেরেন জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হাসান মাঝি। মঙ্গলবার অন্য কয়েকজনের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে দেখা করতে যান ফখরুদ্দিন, শাহারাজ ও কাউসার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের স্বজন জানান, জসিম উদ্দিনের লোকজন মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ফখরুদ্দিন, শাহারাজ ও কাউসারকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। কাদেরিয়া স্লুইসগেট এলাকার সরকারি ব্যারাক হাউসে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে তাদের বেধড়ক পেটায় জসিমের লোকজন। পরে তাদের কাছ থেকে জোর করে ডাকাত হিসেবে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। পরে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয় মারধরকারীরা। এ সময় তাদের রক্ষায় এগিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদেরও লাঞ্ছিত করা হয়। 

জসিম উদ্দিনের লোকজন ঘণ্টাখানেক তিনজনকে পেটানোর পর হাতিয়া থানায় সংবাদ দেন। পুলিশ এলে তাদের সঙ্গে একটি অস্ত্র সদৃশ বস্তু দিয়ে ডাকাত হিসেবে ধরিয়ে দেয়। এ বিষয়ে বিএনপি নেতা হাসান মাঝি বলেন, ‘এখানে সরকারি ব্যারাকের অনেক মানুষ আমাকে দেখতে এসেছেন। এরই মধ্যে তিনজনকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া হয়েছে।’ এ ঘটনায় তিনি নিজ দলের প্রতিপক্ষ জসিম উদ্দিনকে দায়ী করেন।

বুধবার থানার প্রধান ফটকে দেখা হয় জেলে কাউসারের মা জাহেরা খাতুনের সঙ্গে। সাংবাদিক দেখে তিনি হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন। জাহেরা বলেন, তাঁর ছেলেসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত কিংবা মৌখিক কোনো অভিযোগ কখনও আসেনি। তারা সবসময় নদীতে থাকেন। রাতে তাদের ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় বারবার কয়েকজনের পায়ে ধরেও ছেলেকে তিনি পিটুনির হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিনের মোবাইল ফোন নম্বরে দফায় দফায় কল দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসী জানিয়েছে, তিনি অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন। কিন্তু তাঁর লোকজন এলাকায় রয়েছে।

জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, থানায় যে তিনজনকে সোপর্দ করা হয়েছে, তারা সরাসরি ডাকাতিতে জড়িত বলে কখনও শোনেননি। আগের সরকারের আমলে অপকর্মে জড়িত থাকতে পারে।

হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা বলেন, ডাকাত হিসেবে থানায় সোপর্দ করা তিনজনের বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন। তাদের অতীতের রেকর্ডে ডাকাতি বা অপরাধের প্রমাণ এখনও মেলেনি। তাদের কাছে রকেট লাঞ্চার হিসেবে যে বস্তুটি পাওয়া গেছে, সেটি সমুদ্রে ব্যবহৃত প্যারাস্যুট সিগনাল বাতি। এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তিনজনকেই বুধবার স্বজনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে জাহাজমারা ফাঁড়ির ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ