আওয়ামী লীগের আরও তিন সাবেক মন্ত্রীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট–বিএফআইইউ। এরা হলেন– খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ ও নুরুজ্জামান আহমেদ। 

এছাড়া আয়নাঘরের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের মেয়ে তাসফিয়া আহসান জইতার অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করা হয়েছে। সম্প্রতি সব ব্যাংকে আলাদা চিঠির মাধ্যমে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিএফআইইউর চিঠিতে–সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ব্যক্তিগত হিসাব অবরুদ্ধ করতে বলা হয়েছে। আর নুরুল ইসলাম নাহিদের নিজ হিসাব ছাড়াও তার স্ত্রী কে ইউ জোহরা জেসমিন, সন্তান ড.

নাদিয়া নন্দিতা ইসলাম ও নাজিরা সামানথা ইসলামের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাবেক সমাজ কল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের স্ত্রী হেসনে আরা বেগম, ছেলে রকিবুজ্জামান আহমেদ, রকিবুজ্জামানের প্রথম স্ত্রীর সন্তান জান্নাতুল ফেরদৌসী, দ্বিতীয় ঘরের সন্তান নাফিউজ্জামান আহমেদ ওয়াসি ও সুহাইমা বিনতে রাকিবের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করতে বলা হয়।

অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ ছাড়াও প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টের লেনদেন, হালনাগাদ বিবরণী, কেওয়াইসি, অ্যাকাউন্ট খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে কোনো হিসাব থাকলে তাও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে বলা হয়েছে।

ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার সময়ে দায়িত্ব পালন করা সব মন্ত্রী, এমপি পালিয়েছেন। অন্তবর্তীকালীন সরকার শেখ পরিবারসহ অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। যেখানে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওয়া গেছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তির অর্থ পাচারের তথ্য অনুসন্ধান করছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ জ ম ন আহম দ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

বছরের প্রথম দিনেই সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৪ টাকা বেশিতে      

বাংলা নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে আনন্দ নিয়ে ঘরে ফেরা হবে না সাধারণ মানুষের। বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়েই হোঁচট খেতে হবে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল রোববার (১৩ এপ্রিল) থেকেই সয়াবিন তেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হয়েছে।

রোববার বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। 

এর আগে ভোজ্যতেল দাম বড়ানো নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কয়েক দফা সভা হয়। তবে, সে সময় দাম বাড়ানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি তারা। সরকার এবং ভোজ্যতেল উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দফায় দফায় দর কষাকষির পর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৪ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বর্ধিত নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে হবে ১৮৯ টাকায়, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা।

নতুন ঘোষণা অনুসারে, পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা। বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি লিটার ১৬৯ টাকা, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা। 

এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর সর্বশেষ বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। তখন লিটার প্রতি দাম নির্ধারণ করা হয় ১৭৫ টাকা।

ঈদুল ফিতরের আগে গত ২৭ মার্চ নতুন করে ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেন মিলমালিকরা। তখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৮ টাকা বাড়াতে চেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া, খোলা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন লিটারে ১৩ টাকা। ভোজ্যতেলের কর-সুবিধার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরদিন ১ এপ্রিল থেকে এ দর কার্যকরের ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। কারণ হিসেবে তারা জানান, কর সুবিধা বাতিল ও আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে তারা দাম বাড়াতে চান। ওই দিন দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে লিখিতভাবে জানিয়েছিল সংগঠনটি। এর পর থেকেই সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে কয়েক দফা সভা হয় এবং দর কষাকষি চলতে থাকে।

গত রমজানের আগে ভোজ্যতেলের দাম সহনীয় রাখতে সরকার ভোজ্যতেলের ওপর যে শুল্ক-কর ছাড় দিয়েছিল, তার মেয়াদ গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়ায় দাম বাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ঈদের ছুটি শেষে গত সপ্তাহের শুরু থেকে দফায় দফায় আলোচনা হয়। তখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি হবে নাকি কম, তা নিয়ে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা চলে। গত সপ্তাহের রবি, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার এ সভাগুলো হয়। সভায় দর কষাকষি হলেও তখন কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে, কারখানার মালিকদের দাবির আগেই ভোজ্যতেলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কর ছাড়ের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। তবে, এনবিআর এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। ফলে নববর্ষের দিন বাজার করতে গিয়ে ক্রেতাদেও হোঁচট খেতে হবে সয়াবিন তেলের নতুন দাম শুনে।

ঢাকা/হাসনাত/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ