পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনাকে বৈচিত্র্যময় করার যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, প্লাস্টিক পণ্য সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘‘বাস্তবতার নিরীখে আমাদের নীতি নির্ধারণ করা দরকার, যার বিনিময়ে আমরা খারাপ প্লাস্টিককে রোহিত করব ও ভালো প্লাস্টিকের সঙ্গে বাস করব। দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভালো প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’’

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) ৪ দিনব্যাপী ১৭তম ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক, প্যাকেজিং ও প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফেয়ার অনুষ্ঠানে এ তিনি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘২০২৬ সালের নভেম্বরে আমাদের দেশ এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েট হতে যাচ্ছে। এর ফলে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা যে প্রিফারেনশিয়াল অ্যাক্সেস (অগ্রাধিকার সুবিধা) পাই তা থাকবে না। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইনসেন্টিভও (প্রণোদনা) দিতে পারব না। এক্ষেত্রে পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে; উৎপাদনশীলতা ও পণ্যের উৎপাদন ব্যয়ে প্রতিযোগিতা সক্ষম হতে হবে। সক্ষমতা না থাকলে দারুণভাবে বিপদে পড়ে যাব।’’

বাংলাদেশ প্লাস্টিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের জ্যেষ্ঠ সহ-সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন এক্সপোর্ট কমপিটিটিভনেস ফর জবস প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট ডাইরেক্টর শেখ মো.

আবদুর রহমান, ইয়র্কর্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেডের আকাই লিন, সার্ক চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। বাংলাদেশ প্লাস্টিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামীম আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন ও হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইওর্কর্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস যৌথভাবে আয়োজন করছে এ মেলাটি। ইন্টারন্যাশনাল প্লাস্টিক ফেয়ারে ৮০০টিরও বেশি স্টল থাকছে, যেখানে ১৮টি দেশ থেকে ৩৯০টিরও বেশি ব্র্যান্ড অংশগ্রহণ করছে। চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপান, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশের কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য ও প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে এই মেলায়।

ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’

নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।

একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’

অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।

‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।

আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ