মেয়াদোত্তীর্ণ নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী ফোরাম কমিটি বিলুপ্ত
Published: 12th, February 2025 GMT
বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের গতিশীলতা আনয়নের জন্য অনুতাপে নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এড. জয়নুল আবেদীন ও মহাসচিব সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এড.
ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এড. মো. জিয়াউর রহমানের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়।
জানাগেছে, ২০২০ সালের ৯ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের আদালতপাড়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছিলো জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নির্বাচন। এদিন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ সভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই পাঁচটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। নির্বাচনে সভাপতি পদে এড. সরকার হুমায়ুন কবীর, সাধারণ সম্পাদক পদে এড. আবুল কালাম আজাদ জাকির, সিনিয়র সহ সভাপতি পদে এড. আজিজুল হক হান্টু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে এড. একেএম ওমর ফারুক নয়ন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বিপুল ভোটে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছিলেন।
এরপর ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর নির্বাচিত এই পাঁচজনকে রেখেই বিএনপির আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার পূর্নাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার কায়সার কামাল ১২৫ সদস্যের এই কমিটির অনুমোদন দেন। পূর্নাঙ্গ কমিটিতে উপদেষ্টা ৩৫ জনকে। ১২৫ জনের কমিটিতে সভাপতি ১ জন, সহ সভাপতি ১৯ জন, যুগ্ম সম্পাদক ১৩ জন, সহ সাধারণ সম্পাদক ৭ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক ১ জন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ১১ জন, বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে ৩৮ জন ও কার্যকরী সদস্য করা হয়েছে ৩৫ জনকে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আইনজ ব ফ র ম ন র য়ণগঞ জ জ ল আইনজ ব স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
বোনকে ফ্ল্যাট দিতে সই জালিয়াতি করেন টিউলিপ
যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের কাছে বাংলাদেশে সম্পত্তি হস্তান্তরের সময় জাল নোটারি নথি ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির তদন্তে জানা গেছে, বোনের কাছে ঢাকায় ফ্ল্যাট হস্তান্তর করতে টিউলিপ জাল নোটারি পাবলিক ব্যবহার করেছেন। নোটারি পাবলিকে ব্যবহৃত আইনজীবীর সইটিও ছিল জাল।
গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দুদকের দাবি, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে তাঁর রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের সরকারি প্লট নিজ ও তাঁর পরিবারের জন্য নিশ্চিত করেন। এর মাধ্যমে তিনি অবৈধভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির বরাদ্দ থেকে উপকৃত হয়েছেন। সংস্থাটির আরও দাবি, টিউলিপ একটি ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট তাঁর বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেছেন।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুদক এখন আদালতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করবে, যা প্রসিকিউশনের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকবে। অভিযোগ গ্রহণ হলে মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করবে।
এর আগে বিতর্কের মুখে গত জানুয়ারিতে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ– তিনি বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী ছিলেন। এ অভিযোগ প্রকাশিত হলে তিনি যুক্তরাজ্যে ব্যাপক রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েন। টিউলিপ বরাবরই তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।
ব্রিটিশ গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন কর্তৃত্বপরায়ণতা জন্য পরিচিত, যা গত আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন ঘটে। এর পরই হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি, ভূমি দখল ও অবৈধ আর্থিক লেনদেনের নানা অভিযোগ সামনে আসতে থাকে।
দুদক জানায়, তারা শেখ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন। সংস্থাটি আরও জানায়, এ অভিযোগের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অবৈধ ব্যবহারের তদন্ত আরও বিস্তৃত করা হচ্ছে। শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা সরকারি জমি বরাদ্দের জন্য নিয়ম ভেঙেছেন এবং প্রচলিত বরাদ্দ পদ্ধতিকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের জন্য জমি নিশ্চিত করেছেন।
কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, এটা তো কেবল ‘টিপ অব দ্য আইসবার্গ’। আরও অনেক অভিযোগ এখন দুদকের তদন্তাধীন, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ পরিবারের বিশাল দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরবে। ঢাকার উপকণ্ঠে পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্প নিয়ে দুদক বলছে, এ প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা, তাঁর সন্তান ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে অবৈধভাবে ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তদন্তকারীদের অভিযোগ, ঢাকায় ইতোমধ্যে একটি সম্পত্তির মালিক হওয়ার কারণে টিউলিপ সিদ্দিক পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না। তবে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিয়ম পরিবর্তন ও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এ জমি বরাদ্দ নিয়েছেন। তারা সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নির্ধারিত জমি লটারির পদ্ধতি পাশ কাটিয়ে প্লটের মালিক হন।
দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে, ঢাকার গুলশান এলাকায় একটি ফ্ল্যাট আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেন টিউলিপ। এতে ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করা হয়েছে। এ নোটারি নথিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের সিল ব্যবহার করা হয়। তিনি এ নথি সইয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি জানিয়েছেন, যদিও সিলটি আমার নামে, কিন্তু স্বাক্ষরটি আমার নয়। তিনি শুধু তাঁর চেম্বারে বসে নোটারি নথি অনুমোদন করেন। টিউলিপ কিংবা আজমিনা সিদ্দিকের সঙ্গে তার আগে কোনো পরিচিতি ছিল না।
বিতর্কিত নথিটি ২০১৫ সালের, যখন টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির সংসদ সদস্য ছিলেন। তবে তখনও তিনি যুক্তরাজ্যের সরকারের মন্ত্রী হননি। দুদকের দাবি, প্রকৃত সম্পত্তির মালিকানা গোপন করা ছিল এ জালিয়াতির উদ্দেশ্য।