দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আগামী ত্রয়োদশ সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি জয়ী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘‘জনগণের পাশে খাকুন, ভালো আচারণ করুন, তাদের মধ্যে আস্থা তৈরি করুন। জনগণের সমস্যা সমাধান করতে না পারলে পতিত ফ্যাসিস্ট ফিরে আসবে।’’
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির আয়োজনে ইসলামিয়া সরকারি কলেজ মাঠে জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘বিএনপির নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আগামী নির্বাচনে আর কারো চান্স নেই। বেগম খালেদা জিয়া বছরের পর বছর জেল খেটেছেন গণতন্ত্রের জন্য। বিগত ১৬ বছরে দেশের অনেক মানুষ গুম হয়েছে, খুন হয়েছে; তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’’
আরো পড়ুন:
ইউএনও, আ.
বাগেরহাটে বিএনপির দু’ গ্রুপের পৃথক সংঘর্ষে আহত ২৫
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা এবং দেশ দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি করেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি রোমানা মাহমুদ।
জনসভায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ বার বার জীবন দিয়েছে কিন্তু পতিত ফ্যাশিস সরকার বার বার তাদের বঞ্চিত করেছে। আমরা লড়াই করে, সংগ্রাম করে অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছি। দেশের এ পরিবর্তন মানুষ স্বাগত জানিয়েছে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা জাতীয় বেঈমান। বার বার দেশে গণতন্ত্র হরণ করেছেন। আন্দোলন সংগ্রাম করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে বিএনপি। জুলাই-আগস্ট আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। দেশের মানুষ ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৩১ দফা হলো রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কারের দফা।’’
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি রাজশাহী বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলিম।
জনসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য আব্দুল মান্নান তালুকদার, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এম আকবর আলী, জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য কণ্ঠশিল্পী কনকচাপা, জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা, অমর কৃষ্ণ দাস, জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামীম খান প্রমুখ। এর আগে বিভিন্ন উপজেলা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে এসে উপস্থিত হয়।
ঢাকা/অদিত্য/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র ল ইসল ম খ ন স র জগঞ জ জ ল গণতন ত র ন ত কর ম র সদস য ব এনপ র কম ট র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন লেখক-অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেছেন, অনেকে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছেন। এই প্রীতি আসছে তাঁকে মুক্তিযুদ্ধের উত্তরাধিকার মনে করার মাধ্যমে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন শেখ হাসিনা।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সম্মেলনকক্ষে এক সেমিনারে সলিমুল্লাহ খান এ কথা বলেন। ইনিশিয়েটিভ ফর দ্য প্রমোশন অব লিবারেল ডেমোক্রেসির (আইপিএলডি) আয়োজনে ‘বাংলাদেশে টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রতিবন্ধকতা’ শিরোনামের এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান বক্তার বক্তব্যে সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে ফ্যাসিজম কোথায় কোথায় হয়েছে। আগের রেজিম মনে করেছে তাদের শাসন বৈধ, কারণ তারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে। এই যে মুক্তিযুদ্ধকে বিক্রি করা, মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু করা এবং গুম, খুন, ক্রসফায়ার করার জন্য মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করা; এটিই ফ্যাসিজমের উদাহরণ। মুক্তিযুদ্ধ যদি আইনের শাসন প্রবর্তনে আপনাকে সাহায্যই না করে, তাহলে মুক্তিযুদ্ধ করাই আপনার ঠিক হয়নি।’
সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, আজ বাংলাদেশের সবাই মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছে, কিন্তু সেটা শুধু কথার ফুলঝুরি। মুক্তিযুদ্ধের মূল আদর্শ ছিল—সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। অথচ এই আদর্শকেই ১৯৭২ সালে হত্যা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের গণতন্ত্র কতটা টেকসই তা বুঝতে হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে তাকাতে হবে উল্লেখ করে সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে আমরা যা করেছি, তা ঔপনিবেশিক ফ্যাসিজমের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেদিন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন বাংলাদেশেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
সলিমুল্লাহ খান বলেন, ঢাকা শহরের ৫ শতাংশ লোককে স্পর্শ করে না সে রকম একটা মেট্রোরেল চালু করা হয়েছে। সেটাও ভালো। কিন্তু বাকি ৯৫ শতাংশ লোক কী অপরাধ করল? সাধারণ গণপরিবহন নেই কেন আমাদের? আপনি ইচ্ছে করলে বাসে উঠতে পারছেন না কেন? এটা কোনো সভ্য দেশের মাপকাঠি হতে পারে? এটি গণতন্ত্রের মাপকাঠি হতে পারে? যেখানে আপনার ঢাকা শহরে উত্তর থেকে দক্ষিণে যেতে ছয় ঘণ্টা লাগে।’
সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হলে আমাদের কিছু সংস্কার করতে হবে। আমাদের অর্ডারটা জবরদস্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। সুতরাং এটি গণতান্ত্রিক নয়। কেন র্যাব গঠিত হলো, বিশেষ ক্ষমতা আইন করা হলো, কেন জরুরি অবস্থা জারি করা হলো—সবই হলো কাঠামোবদ্ধ ভায়োলেন্স। গণতন্ত্র মানে শুধু ভোটের অধিকার নয়।’
আইপিএলডির সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন আইপিএলডির ট্রাস্টি মেম্বার তাহমিন বানু এবং নির্বাহী সদস্য এহসান শামীম। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইপিএলডির নির্বাহী সদস্য ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।