অনেক দিন ধ‌রে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা প‌রিচ‌য়ে মামলা-মোকদ্দমা থে‌কে বাঁচা‌নোর কথা ব‌লে ও ভয় দেখিয়ে প্রতারণা ক‌রে আস‌ছে এক‌টি সংঘবদ্ধ চক্র। এবার অভিনব পন্থায় প্রতারণায় নে‌মে‌ছে তারা। সামা‌জিক যোগা‌যোগ ম‌াধ্যমে দুদকের চেয়ারম‌্যা‌ন ও কমিশনারদের না‌মে খু‌লে‌ছে একা‌ধিক আইডি। এসব আইডি ব‌্যবহার ক‌রে হা‌তি‌য়ে নি‌চ্ছে লাখ লাখ টাকা।

সম্প্রতি এ প্রতারক চ‌ক্রের তিন সদস‌্যকে চি‌হ্নিত ক‌রে‌ছে গো‌য়েন্দা সংস্থা। তা‌দের ব‌্যাংক অ্যাকাউ‌ন্টে পাওয়া গে‌ছে লাখ লাখ টাকা। তারা দুদক চেয়ারম‌্যা‌ন ও ক‌মিশনার‌সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা‌দের না‌মে হোয়াটসঅ্যাপসহ অন্যান্য সামা‌জিক যোগা‌যোগ মাধ‌্যমে আইডি খু‌লে প্রতারণা ক‌রে মানু‌ষের কাছ থে‌কে বিপুল পরিমাণ টাকা হা‌তি‌য়ে নি‌য়ে‌ছে।

দুদক জানিয়েছে, দুদ‌কের না‌মে প্রতারণায় লিপ্ত তিন জন‌কে শনাক্ত করা হ‌য়ে‌ছে। তারা হ‌লেন—রংপুরের পীরগ‌ঞ্জের আল আমিনের ছে‌লে রেজোয়ানুল হক। তার সহ‌যো‌গী ইয়াস‌মিন আকতার ও জ‌রিনা বেগম।

রেজোয়ানুল হক তার সহযোগী ইয়াসমিন আক্তারের নামে রংপুরের নবাবগঞ্জ বাজারের আজহার প্লাজায় অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন, যার নম্বর—7017413367520। ওই অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে লাখ লাখ নেওয়া হয়ে‌ছে। গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে তা নিশ্চিত হওয়া গেছে। রেজোয়ানুলের অপর সহযোগী জরিনা বেগমের নগদ অ্যাকাউন্টে (01898611674) অবৈধ অর্থ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গে‌ছে।

দুদকের উপ-প‌রিচা‌লক (জনসং‌যোগ) আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রতারক চক্র অপকর্মের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করাসহ দুদকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করছে। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছে দুদক।

দুর্নীতি দমন কমিশন কারো বিরুদ্ধে অনুসন্ধান বা তদন্ত শুরু করলে চিঠি দিয়ে তাকে জানানো হয়; টেলিফোনে যোগাযোগ করা হয় না। চিঠি ভুয়া কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য দুদকের প্রধান কার্যালয় অথবা নিকটস্থ বিভাগীয়/জেলা কার্যালয়ে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

অন্য কোনো প্রতারণা বা অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেলে অথবা উল্লিখিত প্রতারক চক্রের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য থাকলে দুদকের টোল ফ্রি হটলাইন নম্বরে (১০৬) জানানো অথবা নিকটস্থ দুদক কার্যালয় বা স্থানীয় থানার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা গ্রহণ করার পরামর্শ দি‌য়ে‌ছে সংস্থা‌টি।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অবৈধ সিগারেট ও তামাকপণ্যের বিরুদ্ধে এনবিআরের সাঁড়াশি অভিযান

অবৈধ সিগারেট, বিড়ি ও তামাকজাতীয় পণ্য নির্মূলে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এনবিআর এক আদেশ জারি করে সার্কেল পর্যায়ে বিশেষ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয়।

জানা গেছে, এনবিআরের রাজস্বের প্রায় ২৫ শতাংশ আসে সিগারেট, বিড়ি ও তামাকজাতীয় পণ্য থেকে। অথচ অবৈধ পথে আসা দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের সিগারেট, গুল, জর্দা ও অন্যান্য তামাকজাতীয় পণ্য বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে, যা সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যও হুমকির মুখে পড়ছে। এ অবস্থায় অবৈধ তামাকপণ্যের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালাতে সব কমিশনারেটের অধীন সার্কেল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৫২টি অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (পশ্চিম) ২৪টি, রাজশাহী ১৭টি, ঢাকা (পূর্ব) ৪টি, কুমিল্লা ২টি এবং রংপুর ১টি অভিযান পরিচালনা করে। ফেব্রুয়ারির প্রথম ১১ দিনেই ১০৭টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ১ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩০টি, ১০ ফেব্রুয়ারি ২৩টি এবং ১১ ফেব্রুয়ারি একদিনেই ৫৪টি অভিযান চালানো হয়। এর মধ্যে ভ্যাট কমিশনারেট ঢাকা (দক্ষিণ) ৪টি, ঢাকা (উত্তর) ১টি, ঢাকা (পশ্চিম) ১০টি, চট্টগ্রাম ১২টি, রাজশাহী ১২টি এবং কুমিল্লা ৩টি অভিযান পরিচালনা করে।

এনবিআর জানিয়েছে, এসব অভিযানের ফলে বাজারে অবৈধ সিগারেট ও তামাকপণ্যের সংখ্যা কমেছে, ফলে বৈধভাবে ভ্যাট পরিশোধিত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যমে সরকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আশাবাদী। অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সিগারেট, বিড়ি ও তামাকপণ্য জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর সচেতন নাগরিক, সুশীল সমাজ, গোপন তথ্যদাতা এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেছে।

এনএফ/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ