ভারতকে হারিয়ে ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জেতে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার ওই বিশ্বকাপ বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অর্জন। ওই দল এরই মধ্যে বেশ ক’জন ভবিষ্যত তারকার জন্ম দিয়েছে। তানজিদ তামিম, মাহমুদ হাসান জয়, শরিফুল ইসলাম, শামীম পাটোয়ারি, তানজিম সাকিব ও পারভেজ ইমন এরই মধ্যে জাতীয় দলে খেলে ফেলেছেন। 

অনূর্ধ্ব-১৯-এর ওই বিশ্বকাপ দলে ছিলেন প্রান্তিক নওরোজ নাবিল। তখন তার বয়স ছিল ১৭। যুবা দলের অন্যতম কনিষ্ঠ ক্রিকেটার ছিলেন। বিশ্বকাপে ম্যাচ না পেলেও তাকে ভবিষ্যত তারকা মনে করা হচ্ছিল। ২০২০ বিশ্বকাপের পরের বছরই ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে ১১৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নাবিল। 

ওই নাবিল ফুল হয়ে ফোঁটার আগেই ঝরে গেলেন। বুধবার মাত্র ২১ বছর বয়সেই ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন তিনি। ব্যক্তিগত কারণ উল্লেখ করেছেন তিনি। জানা গেছে, শারীরিক কিছু জটিলতায় ভুগছেন তিনি। যে কারণে মনোযোগ বাড়াতে চান পড়াশুনায়। 
 
খুলনার ছেলে নাবিল বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। ক্লাস-পড়াশুনার সঙ্গে ক্রিকেট চালিয়ে যাওয়া কঠিন হচ্ছে তার জন্য। শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে বলেও জানা গেছে। যে কারণে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে পড়াশুনায় মনোযোগ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

নাবিল ৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ৩০৫ রান করেছেন। সর্বোচ্চ ইনিংস ৯০। ২৮টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলে ৬৩৩ রান করেছেন বাঁ-হাতি এই ব্যাটার। অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলাকালীন ভালো ছাত্র হিসেবে সুনাম ছিল নাবিলের। তিনি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ইংরেজি ভাষায় স্বর্তস্ফূর্ত কথা বলে প্রশংসা পেয়েছিলেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা

মুরাদনগরে বৈশাখী মেলা ঘিরে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মৃৎশিল্পীরা। সারা বছর এই কাজের কদর না থাকলেও বৈশাখ রাঙাতে এই সময়টাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় আগের মতো চাহিদা নেই মৃৎশিল্পের। এই পেশায় নেই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। তাই প্রায় সারাবছরই অধিকাংশ নারী মৃৎশিল্পীকে অবসর সময় কাটাতে হয়। পুরুষ মৃৎশিল্পীদের অধিকাংশ চলে গেছেন অন্য পেশায়। তবে নববর্ষের আগে সব কাজ ফেলে তারা ছুটে আসেন পুরোনো এই পেশায়। মৃৎশিল্প থেকে সারা বছর কারিগররা আয়ের মুখ না দেখলেও বৈশাখী মেলা ঘিরে থাকে বাড়তি উপার্জনের সম্ভাবনা। এবারও মাসজুড়ে প্রতিটি কুমারপাড়ায় ছিল ব্যস্ততা।

কামাল্লা ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের পালপাড়ায় দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। জরাজীর্ণ আবাসগুলোতে কেউ মাটি ঘুটছেন, কেউ সেই মাটি ছাঁচে দিয়ে তৈজসপত্র তৈরি করছেন। কেউবা খেলনা শুকানোর পর রংতুলির আঁচড় দিচ্ছেন। বিশেষ করে শিশুদের চাহিদা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িপাতিল, মাটির চুলা, শিলপাটা, কড়াই, কলস, কুলা, পুতুল, হাতি, ঘোড়া, নৌকা, টিয়া, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, মাছ, হাঁসসহ নানা রকম ফল, ফুল আর বাহারি মাটির ব্যাংক, প্লেট, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ। এ ছাড়া রয়েছে মাটির তৈরি গৃহস্থালি জিনিসপত্র।

কামাল্লা গ্রামের সন্ধ্যা রানী পাল ও শিখা রানী পাল জানান, এখন মাটির জিনিসের তেমন কদর না থাকায় সারাবছর টানাপোড়েনের মধ্যে চলে তাদের সংসার। পূর্বপুরুষের পেশা হওয়ায় ইচ্ছা হলেও ছাড়তে পারছেন না। সারাবছর অবসর সময় পার করলেও বৈশাখী মেলায় মাটির তৈরি খেলনা ও জিনিসপত্রের চাহিদা থাকায় এই সময়ে ব্যস্ততা থাকে তাদের।
কথা হয় মৃৎশিল্পী হরি ভূষণ পালের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বছরের এই একটি উৎসব ঘিরে তাদের অনেক আশা থাকে। বৈশাখ মাস এলে মেলায় মাটির খেলনা সামগ্রীর চাহিদা বাড়ে। তাই এ সময় কিছু আয় হয়। তিনি হতাশার সুরে বলেন, ‘সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করত, তাহলে ব্যবসাটা ভালোভাবে করতে পারতাম।’
মৃৎশিল্পী কানন বালা জানান, পহেলা বৈশাখে বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। এই মেলা থেকে শখের বসে অনেকে মাটির সামগ্রী, বিশেষ করে মাটির খেলনা কেনেন। তাই এই সময়ে কর্মব্যস্ততা বাড়ে তাদের।
রামচন্দ্রপুর গ্রামের খুশি পাল বলেন, ‘আমার বয়স ৫০ ছুঁই ছুঁই। বিয়ের পর থেকেই এই পেশার সঙ্গে জড়িত। আগে মাটির সামগ্রীর প্রচুর চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমন নেই। এই শিল্পের সঙ্গে আমাদের জীবনজীবিকা নির্ভরশীল।’
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমানের ভাষ্য, আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্প যে হারিয়ে গেছে, বিষয়টি তা নয়। বরং আধুনিকতার ছোঁয়ায় শিল্পকারখানার মাধ্যমে তৈরি হওয়া মাটির তৈজসপত্রর চাহিদা এখন প্রচুর। মুরাদনগরে যদি বেসরকারি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এসব মৃৎশিল্পীকে কাজে লাগানো যায়, তাহলে অবশ্যই এই শিল্প থেকে ভালো সুফল পাওয়া সম্ভব। পাশাপাশি মৃৎশিল্প বাঁচিয়ে রাখতে বিআরডিবি ও সমবায় কার্যালয় থেকে যেন সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু মুরাদনগরে কোনো মৃৎশিল্পের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নেই, তাই মৃৎশিল্পীদের এই পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে সহজে সরকারি সহায়তা দিতে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রনেতাকে ৪৭ দিন গুম করে রাখার মামলায় চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান সোহায়েলকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
  • অস্ত্র মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে
  • পুরোদমে চলছে বাংলাদেশের প্রস্তুতি, জিম্বাবুয়ে আসছে মঙ্গলবার
  • মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা