ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে: এরদোগান
Published: 12th, February 2025 GMT
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতিশ্রুতি রক্ষায় বরাবরের মতোই ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান। মঙ্গলবার মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। খবর ডেইলি সাবাহর।
এর আগে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান তিন দেশে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ হিসেবে সোমবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে যান এরদোগান।
মঙ্গলবার পুত্রজায়ায় দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান জানান, গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক সংহতির গুরুত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, যদি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবগুলো দেশ এগিয়ে আসে, তবে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনি ভূমির ওপর থেকে ইসরায়েলের আবশ্যিকভাবে দখলদারত্ব ছাড়তে হবে। পূর্ব জেরুসালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন, সার্বভৌম ও অখণ্ড এক ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি।
সংবাদ সম্মেলনে গাজা প্রসঙ্গে তুরস্কের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তিনি বলেন, গাজার প্রসঙ্গ সামনে এলেই তুরস্ক নেতৃত্বের অবস্থানে চলে আসে। অন্য কোনো দেশ তুরস্কের মতো মানবিক সহায়তা সরবরাহের ক্ষেত্রে কাজ করতে পারেনি।
আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সহযোগিতা সংস্থা- আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে গাজার পুনর্গঠনে এগিয়ে আসার জন্য উৎসাহিত করতে কাজ করবেন তিনি।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সব গরু বিক্রি করে দিলেন সেই ডিআইজি প্রিজন
নিজের বাংলোতে গড়ে তোলা খামারের সব গরু বিক্রি করে দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) টিপু সুলতান। গতকাল মঙ্গলবার ১২ লাখ টাকায় তিনি খামারে থাকা গরু–বাছুর বিক্রি করে দেন। ফলে সরকারি বেতনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আর ডিআইজি প্রিজনের গরুর খামারে কাজ করতে হচ্ছে না।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবদুর রশিদ আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্যারের খামারে থাকা সব গরু বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের গরুর খামারে আর কোনো কাজ নেই।’
গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘চট্টগ্রাম কারাগারে দুধ বিক্রি করছেন ডিআইজি প্রিজন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাবিধি অনুযায়ী, কোনো কারা কর্মকর্তা-কর্মচারী বন্দীদের কাছে কোনো সামগ্রী বিক্রি কিংবা ভাড়া দিতে পারেন না। তা ছাড়া এভাবে তরল দুধ সরবরাহ করা বন্দীদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সাবেক কারা কর্মকর্তারা। অভিযুক্ত চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) টিপু সুলতান চট্টগ্রামে যোগ দেন গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি। ময়মনসিংহ থেকে বদলি হয়ে আসার সময় গরুগুলো সঙ্গে নিয়ে আসেন তিনি। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব সীমানাদেয়াল–সংলগ্ন এলাকায় নিজের কার্যালয় ও বাংলোর পাশে খামার গড়ে তোলেন তিনি। খামারে উৎপাদিত দুধ তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে বিক্রি করে আসছিলেন।
কারাগারে বাইরে থেকে দুধসহ রান্না করা কোনো খাবার কারাবন্দীদের দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ডিআইজি প্রিজন টিপু সুলতান সে নিয়ম মানেননি। ১০ মাস ধরে নিয়মিত তাঁর খামার থেকে গড়ে ২০ লিটার করে দুধ কারা ক্যানটিনে সরবরাহ করা হতো। বাইরে খুচরা মূল্য ৮০ টাকা লিটার, পাইকারি দর ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। ডিআইজি প্রিজন কারাগারে বিক্রি করেছেন ১০০ টাকা দরে। সেই হিসাবে দৈনিক ২ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করতেন তিনি।
প্রথম আলোয় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরপর কারাগারে দুধ বিক্রি বন্ধ করে দেন ডিআইজি প্রিজন টিপু সুলতান। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি দেশের ৬৮ কারাগারে গরু পালনে সরকারি কর্মচারী ও অর্থ ব্যবহার না করতে নির্দেশনা জারি করেছে কারা অধিদপ্তর। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেনের পক্ষে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের সই করা এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, কারা কর্মকর্তারা গরু পালনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিধিবিধান অনুসরণ করছেন না। এখন থেকে গরু পালনের ক্ষেত্রে কারা অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তাকে কারা মহাপরিদর্শকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। পাশাপাশি মানতে হবে কিছু শর্ত। এগুলো হলো কারাগারে দুটির বেশি গরু পালন করা যাবে না, কারা এলাকায় গরু পালনের ক্ষেত্রে কারাগারের পরিবেশ কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না, গরু পালনের ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারী নিযুক্ত করা যাবে না, ব্যয় করা যাবে না সরকারি কোনো অর্থ, ব্যক্তিগত গরু পালনের কাজে বন্দীদের ব্যবহার করা যাবে না, সরকারি কোনো স্থানে ঘাস চাষ করা যাবে না, গরু পালন কাজে ব্যবহৃত পানি ও বিদ্যুৎ বিল ব্যক্তিগতভাবে পরিশোধ করতে হবে, গরুর সংখ্যা দুইয়ের অধিক নেই এবং নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে—প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বিষয়ে লিখিত প্রত্যয়ন দিতে হবে।