রিভিউ নিয়ে সফল শ্রীলঙ্কা। সিদ্ধান্ত বদলে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ব্যাটসম্যান স্পেন্সার জনসনকে আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি এলবিডব্লিউ দিতেই লঙ্কানদের আনন্দ দেখে কে! ধারাভাষ্যকার রাসেল আরনল্ড বলতে লাগলেন, ‘শ্রীলঙ্কার জন্য এটা স্মরণীয় এক জয় এবং এটা অবশ্যই তারা দীর্ঘ সময় ধরে মনে রাখবে।’

এখনকার দিনে টি-টোয়েন্টিতেই হরহামেশা ২০০-এর বেশি রান ওঠে। শ্রীলঙ্কা সেখানে ৫০ ওভারের ওয়ানডে ম্যাচে করতে পারল ২১৪ রান। এত অল্প সংগ্রহ নিয়েও অস্ট্রেলিয়াকে তারা গুটিয়ে দিল ১৬৫ রানে। কলম্বোয় দুই ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে স্বাগতিকেরা জিতল ৪৯ রানে।

প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের শুকনো-মন্থর পিচে আগে ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলঙ্কা ৫৫ রানে হরিয়ে ফেলেছিল ৫ উইকেটে। অষ্টম উইকেটের পতন হয় ১৩৫ রানে। স্বাগতিকেরা ১৫০ করতে পারবে কি না এ নিয়েই সংশয় ছিল।

কিন্তু চারিত আসালাঙ্কার অধিনায়কোচিত সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২০০-এর গণ্ডি পেরিয়ে যায়। এরপরও লক্ষ্যটা অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের জন্য খুব বড় হওয়ার কথা নয়। তবে মহীশ তিকশানার ‘বিষ মাখানো’ স্পিন তা হতে দেয়নি।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি হিসেবে আয়োজিত এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়াই এখন পিছিয়ে। সেটাও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, যারা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি!

ব্যাট হাতে আসালাঙ্কার একার লড়াই কতটা দৃষ্টিনন্দন ছিল, তা বোঝার জন্য লঙ্কানদের ইনিংসে শীর্ষ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের ব্যবধান দেখলেই চলবে। ১৪ চার ও ৫ ছক্কায় আসালাঙ্কা উপহার দিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা ১২৭ রানের ইনিংস, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান এসেছে দুনিত ভেল্লালাগের ব্যাট থেকে। মানে, আসালাঙ্কার চেয়ে ৯৭ রান কম!

ষষ্ঠ উইকেটে আসালাঙ্কা-ভেল্লালাগের ৬৭ রানের জুটিতেই দলীয় শতরান পেরোয় শ্রীলঙ্কা। কিন্তু নবম উইকেটে ঈশান মালিঙ্গার সঙ্গে ৭৯ রানের জুটিকে ‘আসালাঙ্কা স্পেশাল’ বললেও প্রশংসা কম হয়ে যায়। এই জুটির ৭৯ রানের মধ্যে ৭৭-ই যে লঙ্কান অধিনায়কের একার! ঈশানের অবদান ২৬ বলে ১।  

রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কার মতোই শুরুতে বিপর্যয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। সফরকারীরা প্রথম পাওয়ার প্লেতেই হারায় ৪ উইকেট। এর মধ্যে আছেন স্টিভেন স্মিথও, প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে যিনি আজ সকালেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অধিনায়ক ঘোষিত হয়েছেন।

পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৫২ রান যোগ করে অস্ট্রেলিয়াকে আশা দেখাচ্ছিলেন মারনাস লাবুশেন ও অ্যালেক্স ক্যারি। কিন্তু ১৮তম ওভারে তিকশানা লাবুশেনকে এলবিডব্লিউ করে এই জুটি ভাঙার পরপরই সফরকারীদের জয়ের আশা ফিকে হয়ে যায়। এরপর ক্যারিও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। বল হাতে তুলে নিয়ে ক্যারিকে পাতুম নিশাঙ্কার ক্যাচ বানিয়েছেন আসালাঙ্কা।

লোয়ার মিডল ও লোয়ার অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান অ্যারন হার্ডি, শন অ্যাবট ও অ্যাডাম জাম্পা যথাসাধ্য চেষ্টা করলেও শুধু হারের ব্যবধানই কমাতে পেরেছেন। ৪০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বোলার লঙ্কান স্পিনার থিকশানা। আসিতা ফার্নান্ডো ও ভেল্লালাগে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।

ব্যাট হাতে ১২৭ রান, ‘গোল্ডেন আর্ম’ হয়ে ক্যারির উইকেট, সঙ্গে দক্ষ নেতৃত্ব—অবশ্যম্ভাবীভাবে ম্যাচসেরার পুরস্কারটা চারিত আসালাঙ্কার হাতেই উঠেছে। অস্ট্রেলিয়া দুঃখ করতে পারে এটা ভেবে যে, তাদের কেউই আজ আসালাঙ্কা হয়ে উঠতে পারেননি।

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামেই সিরিজের শেষ ম্যাচ আগামী শুক্রবার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শ্রীলঙ্কা: ৪৬ ওভারে ২১৪ অলআউট
(আসালঙ্কা ১২৭, ভেল্লালাগে ৩০, কুশল মেন্ডিস ১৯; অ্যাবট ৩/৬১, হার্ডি ২/১৩, এলিস ২/২৩, জনসন ২/৪৪)।

অস্ট্রেলিয়া: ৩৩.

৫ ওভারে ১৬৫
(ক্যারি ৪১, হার্ডি ৩২, জাম্পা ২০*, অ্যাবট ২০; তিকশানা ৪/৪০, আসিতা ২/২৩, ভেল্লালাগে ২/৩৩)।

ফল: শ্রীলঙ্কা ৪৯ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: চারিত আসালাঙ্কা।

সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে শ্রীলঙ্কা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

অপারেশন ডেভিল হান্টে ৫৯১ জনসহ সারাদেশে গ্রেপ্তার এক হাজার ৬৮৬

সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

চলমান বিশেষ অপারেশন ডেভিল হান্টে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ৫৯১ জনসহ মোট এক হাজার ৬৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, অভিযানে অন্যান্য মামলা ও ওয়ারেন্টের আওতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরও এক হাজার ৯৫ জনকে।

অপারেশন ডেভিল হান্টে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো হলো- একটি বিদেশি পিস্তল, একটি চায়না রাইফেল (পুলিশ থেকে লুট করা), দুইটি এলজি, চারটি ওয়ান শুটারগান, একটি ম্যাগাজিন, তিন রাউন্ড গুলি, ১৭ রাউন্ড কার্তুজ, ২০টি ককটেল, ছয়টি ছুরি, একটি তলোয়ার, একটি হাতুড়ি, একটি গুটি রেঞ্জ, একটি প্লায়ার্স, একটি সেলাই রেঞ্জ, দুইটি লোহার পাইপ, একটি কাটার ও তিনটি কিরিচ।

প্রসঙ্গত, অপারেশন ডেভিল হান্ট একটি বিশেষ অভিযান ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত ডেভিল হান্ট বলতে, দেশবিরোধী চক্র, সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতে বুঝানো হয়েছে।

তবে ডেভিল অর্থ হচ্ছে ‘শয়তান’ আর হান্ট অর্থ ‘শিকার’। ডেভিল হান্ট, যার ইংরেজি শাব্দিক অর্থ গিয়ে দাঁড়ায় ‘শয়তান শিকার’ করা।

বিএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ