নারী চা-শ্রমিকদের জীবনব্যবস্থার কথা শুনলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা
Published: 12th, February 2025 GMT
সিলেটে নারী চা-শ্রমিকদের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে নগরের শাহী ঈদগাহ এলাকায় দলদলি চা-বাগানের নারী চা-শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
‘চা–বাগানের নারী শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে নেতৃত্ব বিকাশ’ শীর্ষক এ উঠান বৈঠকে নারী চা-শ্রমিকেরা নিজেদের কর্মক্ষেত্রের নানা সমস্যা, সমাধান ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। দলদলি চা–বাগানের অভ্যন্তরে একটি টিলার উঠানে চা-বাগানের পঞ্চায়েতের নেতৃত্বে থাকা নারী সদস্য ও চা-শ্রমিকেরা উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সংস্থা অক্সফামের প্রতিনিধিদলের আগমন উপলক্ষে এ বৈঠকের আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন ‘এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (একডো)’।
এ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশে নিযুক্ত দূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার, পরামর্শক ইউরাটে স্মলস্কাইট মারভেলি, গভর্ন্যান্স ও মানবাধিকার শাখার কর্মসূচি ব্যবস্থাপক লায়লা জেসমিন বানু, জুই চাকমা, অক্সফামের কান্ট্রি ডিরেক্টর আশীষ ধামলী, অ্যাডভোকেসি ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান মো.
উঠান বৈঠকে চা-বাগান পঞ্চায়েতের নারী সদস্য অনিতা দাশ বলেন, ‘আমরা এমন এক জায়গায় বাস করছি, যেখানে আমাদের অধিকারগুলো কী, তা জানি না। এই যে আমরা চা–পাতা তোলার কাজ করে ১৭৮ টাকা দৈনিক বেতন পাই, এটা দিয়ে তো সংসার চালানো যায় না। বাগানে টয়লেটের কোনো ব্যবস্থা নেই। পানির ব্যবস্থা অপ্রতুল। অনেক কষ্টে চলাফেরা ও কাজ করতে হচ্ছে।’ চিকিৎসাব্যবস্থার অপ্রতুলতার দিকটিও তুলে ধরেন এই নারী। অনিতা দাশ বলেন, ‘এখানে সূর্য ক্লিনিক নামের একটি চিকিৎসালয় আছে। কিন্তু স্বাস্থ্যসেবা খুবই বাজে। এতে কোনো টয়লেট ও বসার ব্যবস্থা নেই। আমরা চাই, এটির উন্নয়ন হোক।’
প্রতিনিধিদলকে বরণ করে নেন নারী চা-শ্রমিকেরাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ওসি, আ.লীগ ও বিএনপি নেতা, মিশ্র প্রতিক্রিয়া
ইন্টারনেটে আপলোড হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে সবাই অনুষ্ঠানে উপস্থিত। প্রত্যেকের বুকে লাগানো লাল-হলুদ-সবুজ ফিতা দিয়ে বানানো ‘অতিথি ব্যাচ’। অনুষ্ঠানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন থানার ওসি, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা।
গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার দলদলী ইউনিয়নের জে. কে পোল্লাডাঙ্গা এলাকার খেলার মাঠে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছেন স্থানীয়রা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা প্রতিক্রিয়া।
অনুষ্ঠানটি ছিল ‘স্বর্ণ কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধন। এ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রতিবছর স্থানীয়ভাবে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করায় সববয়সী মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করার ইঙ্গিত দিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে কটূক্তি করছেন।
আরো পড়ুন:
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতেই হবে: দুলু
মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস, আরো ৫ বিএনপি নেতা কারামুক্ত
ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য মো. মোজাম্মেল হক (চুটু), ভোলাহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আতাউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাব্বুল হোসেন, দলদলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাচ্চু, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন যুবদল নেতা সামিরুল ইসলাম গাজী। তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘খেলা মানেই আনন্দ। দলমত নির্বিশেষে এ টুর্নামেন্ট সফল করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এখন কোনো দলীয় সরকার ক্ষমতায় নেই। অন্তর্বর্তী সরকার আছে। তাই খেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।’’
এ মঞ্চে ভোলাহাট থানার ওসি শাহিনুর রহমান প্রতিযোগিতার পক্ষে সাফাই গেয়ে অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য দেন।
এ প্রতিযোগিতার একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে অনেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখান। মুনসুর আলী নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘‘ধন্যবাদ টুর্নামেন্ট কমিটিকে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মিলে তোমরা খেলাটাকে পরিচালনা করছ।’’ তবে শাহজামাল খান স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘‘ভোলাহাটেও তাহলে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন হলো। কাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাব সেটাই চিন্তায় পড়ে গেলাম। উনাদের, না পুনর্বাসনকারীদের?’’
এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কয়েকজন নেতার মোবাইল নম্বরে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি ভোলাহাট থানার ওসি শাহিনুর রহমানের ব্যবহৃত নম্বরে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/মেহেদী/বকুল