ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের অব্যহতি দেওয়া চেয়ারম্যান ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমকে স্বপদে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা বিভাগের কক্ষগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষকদের কক্ষ, অফিসসহ সব কক্ষে তালাবদ্ধ।

এছাড়া, দরজায় পোস্টার সেঁটে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পোস্টারে লেখা, ‘জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ড.

মো জাহাঙ্গীর আলমকে তার স্বপদে পুনর্বহাল না করা অবধি টোটাল শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

জানা গেছে, বুধবার জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সব ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সম্মতিক্রমে পূর্ববর্তী কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তালা লাগিয়ে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে প্রফেশনাল মাস্টার্সে পরীক্ষা ছাড়া ছাত্রলীগ কর্মীকে ভর্তির অভিযোগে এনে তাকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অপসারণ করা হয়। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “এ অভিযোগের প্রতিবাদে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিভাগের ৯০ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষরসহ উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। পরে প্রশাসন থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। কিন্তু এখনো কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।”

চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল বলেন, “মীমাংসিত একটি বিষয় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পুনরায় সামনে আনা হয়েছে। চেয়ারম্যানকে পুনর্বহাল না করা অবধি আন্দোলন চলবে। আগামী রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি আমরা। পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত না আসলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

ঢাবি প্রশাসন থেকে কোন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কমপ্লিট শাটডাউন (সকল প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম) কর্মসূচি চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা বর্বর হামলা অব্যাহত

ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় নারী-শিশুসহ ৪০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে পশ্চিম তীরেই প্রাণ গেছে ২২ জনের। বরাবরের মতোই দখলদার বাহিনী বেসামরিক লোকজনকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতি সম্প্রদায়ের যুদ্ধবিরতির আহ্বানকে দখলদাররা উপেক্ষা করেছে।

একজন হামাস নেতাকে হত্যা করতে প্রয়োজনে তারা ১০০ সাধারণ মানুষকে হত্যা করবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহুর সংসদ বিচারক নিয়োগের ওপর রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে আইনও পাস করেছে। এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে ইসরায়েলের নাগরিকরা।   

ইসরায়েলি হামলায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৫০ হাজার ২০৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও আহত হয়েছে অন্তত ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১০ জন। ইসরায়েলের বর্বর আচরণ বন্ধ করে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।  

আলজাজিরা জানায়, গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি ব্যস্ত বাজারে ইসরায়েলি হামলায় সাত ফিলিস্তিনি নিহত হন। এতে করে গত এক দিনে এই যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় নিহতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে বলেছে, গাজায় হাজার হাজার মানুষ তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির মুখোমুখি। টানা তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কোনো মানবিক সহায়তা গাজায় প্রবেশ করতে পারেনি। মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য খাদ্য মজুত রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।

এদিকে মিসরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ অবরুদ্ধ গাজায় হামলা চালায় ইসরায়েল। আকস্মিক এই হামলায় নিহত হয় সাত শতাধিক মানুষ।

একদিকে হামলা অন্যদিকে জোর করে বসতি স্থাপন চালিয়ে যাচ্ছে দখলদাররা। পবিত্র রমজানে বহু ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। প্রায়ই তারা দখলদার ইসরায়েলিদের হামলার শিকার হয়েছে। বাড়িঘর থেকে উৎখাত করা হয়েছে। এমনকি ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর জোর করে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।  

গাজায় দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘের সহায়তা সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। তারা বলছে, সহায়তা তহবিল কমানো হলে গাজায় মানুষের জীবন খাদ্যাভাবে বিপন্ন হবে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, গত বছরের তুলনায় এবার সহায়তা তহবিল ৪০ শতাংশ কমে যেতে পারে।   

দোহা ইনস্টিটিউট ফর গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজের মোহাম্মদ এলমাসরি বলেন, বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করা ইসরায়েলের সামরিক মতবাদের অংশ। হামলার ভয়ে সাহায্য সংস্থা ও কর্মীরা ফিলিস্তিনি ছিটমহল ছেড়ে চলে যাচ্ছে।  

এদিকে লেবানন থেকে গতকাল শুক্রবার সকালে ইসরায়েলে আঘাত হানে দুটি রকেট। এতে ইসরায়েল তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বৈরুতে বিমান হামলার হুমকি দেন এবং একটু পরই বিমান হামলা করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েল লেবাননে জোর করে যুদ্ধ চাপিয়ে দিচ্ছে। গত নভেম্বরে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো হামলা করা হলো।   

ইয়েমেনে হুতিদের ৪০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সানাসহ ইয়েমেনজুড়ে হুতিদের এসব ঘাঁটি বিদ্যমান। হামলায় অন্তত সাতজন আহত হয়েছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, বৈরুতে ইসরায়েলি হামলা অগ্রহণযোগ্য। এটা যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন। লেবাননের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বলেছেন, বৈরুতে হামলার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখল ইসরায়েল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ