ঋণের টাকা আদায়ে চট্টগ্রামের রুবি ফুড প্রোডাক্টসের সম্পত্তি নিলাম তুলেছে বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংকের পাওনা ১ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ব্যাংকে বন্ধক দেওয়া চট্টগ্রামের পটিয়া ও কর্ণফুলী এলাকার সাড়ে ছয় একর জমি নিলামে তোলা হচ্ছে। আজ বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইউসিবি। আগামী ১০ মার্চের মধ্যে আগ্রহী ক্রেতাদের ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখায় নিলামের দরপ্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে।

রুবি ফুড প্রোডাক্টস হলো চট্টগ্রামের বিএসএম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। গ্রুপটির চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী। খাতুনগঞ্জের বিএসএম সেন্টারে গ্রুপটির কার্যালয়।

জানা গেছে, ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কাছে যাওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে রুবি ফুডকে অর্থায়ন করা হয়। ধীরে ধীরে এই অর্থায়ন বাড়তে থাকে। ডলারের সংকট, সময়মতো ঋণপত্র খুলতে না পারা ও বিভিন্ন কারণে ঋণগুলো পরে খারাপ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পাওনা টাকা আদায়ে ব্যাংক আইনি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পদ নিলামে তুলেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডলার–সংকটের কারণে আমাদের ব্যবসা খারাপ হয়েছে। ব্যাংক সময়মতো ঋণপত্র খোলেনি। জাহাজ পণ্য নিয়ে এসে ঘুরে গেছে। ব্যাংকগুলো সহায়তা করলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ময়মনসিংহে স্বামীকে হত্যার ১৪ বছর পর স্ত্রী ও তাঁর কথিত প্রেমিকের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী ও তাঁর কথিত প্রেমিককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আলী মনসুর এ রায় ঘোষণা করেন। ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন হাফিজা খাতুন (৪২) ও আবদুল্লাহ আল মাসুম (৩৬)। আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি দুজনকে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অপর আসামি মো. আরমান মামলার সাক্ষ্য চলাকালে মৃত্যুবরণ করায় তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। রায়ের সময় আদালতে হাফিজা খাতুন উপস্থিত ছিলেন। মামলার সাক্ষ্য চলাকালে জামিনে গিয়ে পলাতক থাকায় আবদুল্লাহ আল মাসুমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

আদালত ও মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৮ জুন মুক্তাগাছা উপজেলার ভাবকী এলাকার দুবাইপ্রবাসী হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হাফিজা খাতুন ও হেলাল উদ্দিনের ১৪ বছরের সংসারজীবনে দুটি কন্যাসন্তান ছিল। ঘটনার তিন বছর আগে হেলাল উদ্দিন দুবাই চলে যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী ডেসটিনিতে ভর্তি হন। ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চরঘাগড়া গ্রামের আবদুল্লাহ আল মাসুমের অধীনে কাজ করতেন। সেই সুবাদে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হাফিজাকে বিয়ের আশ্বাসে ব্যবসার জন্য আড়াই লাখ টাকা নেন মাসুম। হেলাল উদ্দিন ২০১১ সালের ২৫ মে দেশে আসেন। এরপর স্ত্রীর কাছে টাকার হিসাব চাইলে নিজেদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। হেলাল উদ্দিন স্ত্রীর জন্য সোনার হার ও চেইন নিয়ে আসেন। সেই স্বর্ণালংকারও বন্ধক রেখে মাসুমকে ৪৫ হাজার টাকা দেন তাঁর স্ত্রী। এরপর খুনের পরিকল্পনা শুরু হয়। ঘটনার দিন হাফিজা তাঁর স্বামীকে ছয়টি ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে মাসুমকে মুঠোফোনে খবর দেন। মাসুম ও তাঁর এক সহযোগী দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাড়িতে গিয়ে হেলাল উদ্দিনকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে মাসুমের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডাকাতের আক্রমণে খুন হয়েছেন বলে প্রচার চালানো হয়।

এ ঘটনায় নিহত হেলাল উদ্দিনের বোন সাফিয়া আক্তার বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় পুলিশ হাফিজা খাতুন, আবদুল্লাহ আল মাসুম ও মো. আরমান নামের তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।

ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক পিএসএম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। হত্যাকাণ্ডের পর হাফিজা খাতুন দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈষম্য শুধু প্রাণের বিনিময়ে দূর হবে না: আলী রিয়াজ
  • ঘুমানোর আগে কিছু আমল
  • ময়মনসিংহে স্বামীকে হত্যার ১৪ বছর পর স্ত্রী ও তাঁর কথিত প্রেমিকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
  • কালবিলম্ব না করে সময়মতো নির্বাচন দিন