রুবি ফুডের ১,২৪৪ কোটি টাকা আদায়ে নিলামে উঠেছে জমি
Published: 12th, February 2025 GMT
ঋণের টাকা আদায়ে চট্টগ্রামের রুবি ফুড প্রোডাক্টসের সম্পত্তি নিলাম তুলেছে বেসরকারি খাতের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি)। প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংকের পাওনা ১ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ব্যাংকে বন্ধক দেওয়া চট্টগ্রামের পটিয়া ও কর্ণফুলী এলাকার সাড়ে ছয় একর জমি নিলামে তোলা হচ্ছে। আজ বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইউসিবি। আগামী ১০ মার্চের মধ্যে আগ্রহী ক্রেতাদের ব্যাংকটির খাতুনগঞ্জ শাখায় নিলামের দরপ্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে।
রুবি ফুড প্রোডাক্টস হলো চট্টগ্রামের বিএসএম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। গ্রুপটির চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী। খাতুনগঞ্জের বিএসএম সেন্টারে গ্রুপটির কার্যালয়।
জানা গেছে, ইউসিবির পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর কাছে যাওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে রুবি ফুডকে অর্থায়ন করা হয়। ধীরে ধীরে এই অর্থায়ন বাড়তে থাকে। ডলারের সংকট, সময়মতো ঋণপত্র খুলতে না পারা ও বিভিন্ন কারণে ঋণগুলো পরে খারাপ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে পাওনা টাকা আদায়ে ব্যাংক আইনি পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা সম্পদ নিলামে তুলেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডলার–সংকটের কারণে আমাদের ব্যবসা খারাপ হয়েছে। ব্যাংক সময়মতো ঋণপত্র খোলেনি। জাহাজ পণ্য নিয়ে এসে ঘুরে গেছে। ব্যাংকগুলো সহায়তা করলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিলুপ্তপ্রায় গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজননে সাফল্য
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিলুপ্তপ্রায় সুস্বাদু দেশীয় গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদনে প্রাথমিক সফলতা পেয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) একদল বিজ্ঞানী।
মিঠাপানির জলাশয় বিশেষ করে পাহাড়ী ঝর্ণা ও অগভীর স্বচ্ছ নদী এদের আবাসস্থল হিসেবে চিহ্নিত। উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, আত্রাই ছাড়াও নেত্রকোনার সোমেশ্বরী, কংস, সিলেটের পিয়াইন, পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে এক সময় মাছটির প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত। এখন মাছটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
মাছটির কৃত্রিম প্রজনন এবং পোনা তৈরির কলাকৌশল উদ্ভাবনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন বিএফআরআইয়ের পাবলিকেশন অফিসার এসএম শরীফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ২৬১ প্রজাতির মিঠাপানির মাছের মধ্যে গোটালি (বৈজ্ঞানিক নাম Crossochelius latius) একটি গুরুত্বপূর্ণ সুস্বাদু ছোট মাছ। মাছটি অঞ্চলভেদে কালাবাটা নামেও পরিচিত।”
তিনি আরও বলেন, “জলাশয় দূষণ, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, নদীতে বান ও কারেন্ট জালের ব্যবহার, খরা মৌসুমে জলাশয় শুকিয়ে মাছ ধরা এবং নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা, বাসস্থান ও প্রজননক্ষেত্র বিনষ্ট হওয়াসহ নানা কারণে অন্যান্য দেশীয় ছোট মাছের ন্যায় এ মাছের প্রাপ্যতাও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তথ্য মতে, ২০১৫ সালে মাছটি বিপন্ন প্রজাতির তালিকায় অন্তর্ভূক্ত।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রজাতিটি বিপন্নের হাত থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে তিস্তা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকা থেকে মাছটি সংগ্রহ করেন। এরপর উপকেন্দ্রের গবেষণা পুকুরে অভ্যস্তকরণ ও কৃত্রিম প্রজননের জন্য গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে দেশে প্রথমবারের মত কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদনে সফলতা অর্জিত হয়।
এ গবেষণায় নেতৃত্বে দেন বিএফআরআইয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আজহার আলী। এছাড়াও গবেষক দলে ছিলেন, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকতা ড. সোনিয়া শারমীন, মালিহা হোসেন মৌ ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্রীবাস কুমার সাহা।
এসএম শরীফুল ইসলাম বলেন, “বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ এ মাছটির কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় মাছটি চাষের আওতায় চলে আসবে। এতে উত্তর জনপদে তথা দেশের মৎস্য খাতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে এবং মাছটি বিলুপ্তির হাত থেকেও রক্ষা পাবে।”
ঢাকা/মেহেদী