একটি মিষ্টির দাম ১০ হাজার টাকা, ৩৫ হাজারে বিক্রি হলো একটি মাছ
Published: 12th, February 2025 GMT
শিমুল-পলাশের রং ছড়িয়ে প্রকৃতিতে উঁকি দিচ্ছে বসন্ত। সকালে রোদের তেজ ছড়িয়ে শীতের বিদায়লগ্নের জানান দিচ্ছে মাঘ। হালকা কুয়াশার সঙ্গে কমলা রঙের রোদের মনোমুগ্ধকর মিতালিতে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ইছামতী নদীর অদূরে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ সন্ন্যাসী মেলা বসেছে। ৪০০ বছরের পুরোনো এই মেলা স্থানীয়ভাবে জামাই মেলা নামে পরিচিত। মেলা উপলক্ষে ইছামতীর অদূরে বিস্তীর্ণ মাঠে বসেছে সারি সারি দোকান।
মেলার প্রধান আকর্ষণ নদী আর বিলের বিশাল আকৃতির হরেক রকমের মাছ। দোকানিরা বড় বড় মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই দোকানে দোকানে মানুষের ঢল। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরগরম এলাকা। মেলায় অন্যতম আকর্ষণ ছিল যমুনা নদীতে ধরা পড়া ২৭ কেজি ওজনের একটি বাগাড় ও ২৫ কেজি ওজনের কাতলা মাছ। মাছ দুটি যথাক্রমে ৩৫ হাজার ও ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
মাছ ছাড়াও হরেক পদের বাহারি মিষ্টান্ন, খেলনা, কাঠের আসবাব, প্রসাধনীর দোকানসহ বিনোদনের জন্য বসেছে চরকি, নাগরদোলা, মৃত্যুকূপে মোটরসাইকেল খেলা, সার্কাস, ম্যাজিক শোসহ নানা আনন্দ আয়োজন। মেলা ঘিরে শতাধিক গ্রামে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। মেলা উপলক্ষে জামাতাসহ আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়। মেলা থেকে শৌখিন মাছ কিনে শ্বশুরবাড়িতে নিমন্ত্রণ খেতে যাওয়ার চল আছে গাবতলী, সারিয়াকান্দি, ধুনটসহ এ অঞ্চলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেলা শুরুর সঠিক দিনক্ষণ কেউ জানেন না। তবে এলাকায় প্রচলিত আছে, ৪০০ বছরের বেশি সময় আগে পোড়াদহ-সংলগ্ন ইছামতী নদীতে প্রতিবছরের মাঘ মাসের শেষ বুধবার অলৌকিকভাবে বড় একটি কাতলা মাছ সোনার চালুনি পিঠে নিয়ে ভেসে উঠত। অলৌকিক এ ঘটনা দেখতে অনেকে জড়ো হতেন। পরে স্থানীয় এক সন্ন্যাসী স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে অলৌকিক মাছের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য নিবেদনের জন্য সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেন। সন্ন্যাসীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পোড়াদহ বটতলায় মাঘের শেষ বুধবার স্থানীয় লোকজন অর্ঘ্য নিবেদন শুরু করেন। নাম দেন সন্ন্যাসী পূজা। পূজা ঘিরে লোকসমাগম বাড়তে থাকে ও বড় বড় মাছ বেচাকেনার জন্য মেলাটি প্রসিদ্ধ হয়ে ওঠে। কালক্রমে মেলাটি পোড়াদহের মেলা হিসেবে পরিচিতি পায়। ইছামতী, করতোয়া, যমুনা ও বাঙ্গালী নদীতে ধরা বাহারি মাছ বিক্রির জন্য মেলায় নেন জেলেরা। মেলায় মাছ কিনতে দূরদূরান্ত থেকে ভিড় করেন ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে, প্রতিবছরের মাঘ মাসের শেষ বুধবার ইছামতী নদীর তীরে পোড়াদহ মেলা বসে। মেলা এক দিনের হলেও আবহ থাকে কয়েক দিন।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ যমুনায় ধরা পড়া ২৭ কেজি ওজনের বাগাড়। সকাল ১০টার আগেই মাছটি ৩৫ হাজার টাকায় ভাগাভাগি করে কিনে নিয়েছেন মহিষাবান গ্রামের কয়েকজন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘একটা বাক্স ঘিরে হাজারটা প্রশ্ন, উত্তর মিলবে ২৮ মার্চ’
প্রথমবারের মতো নির্মাতা আশফাক নিপুণের পরিচালনায় অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। সেটিও আবার একটি ওয়েব সিরিজে। জয়ার জন্য ‘জিম্মি’ ওয়েব সিরিজটি বিশেষ। কেননা এই প্রথম জয়া আহসান কোনও ওয়েব সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
জয়া আহসান বহু বছর ধরে নাটক-সিনেমার মাধ্যমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন দেশ-বিদেশের দর্শকদের কাছে। তবে ওয়েব সিরিজে তার কাজ করা হয়নি তেমন। আশাফাক নিপুণের হাত ধরে সেটিও হয়ে গেলো।
জয়া বলেন, ‘আমি নতুন কোনো কাজ করার আগে তিনটা বিষয় সবসময় খেয়াল করি। সেটা হলো গল্প, চরিত্র ও পরিচালক। জিম্মি-র ক্ষেত্রে এগুলো সব মন মতো মিলে গিয়েছিল। সেই সাথে আমার ওয়েব সিরিজের শুরুটা করছি হইচই-এর সাথে। মুক্তি পাবে ঈদে, সব মিলিয়ে আমার জন্য বিষয়টা বেশ রোমাঞ্চের।’
এছাড়া ‘জিম্মি’ মুক্তির তারিখ ঘোষণা উপলক্ষে একটি প্রমোশনাল ভিডিও বানিয়েছে টিম হইচই। সেখানে বলা হয়েছে একটি বক্সের কথা। ভিডিওটি শেয়ার করে সমাজিক মাধ্যমে জয়া লিখেছেন, ‘একটা বাক্সকে ঘিরে হাজারটা প্রশ্ন! উত্তর কেবল এক জনের কাছে। কে এই রুনা লায়লা? প্রশ্নের উত্তর মিলবে ২৮ই মার্চ।’
‘মহানগর’, ‘সাবরিনা’র পর দর্শকদের জিম্মি করতে আবার আসছেন আশফাক নিপুণ। নতুন সিরিজ নিয়ে তিনি বলেন, “আমি ‘জিম্মি’ নির্মাণের মাধ্যমে নতুন রকমের গল্প বলার চেষ্টা করেছি। এইটুক বলতে পারি, দর্শক অবশ্যই নতুন কিছু উপভোগ করবে। এছাড়া জয়া আহসান দারুণ ও পরীক্ষিত একজন অভিনেত্রী। গল্পের প্রয়োজনে আমরা এমন একজন অভিনয়শিল্পী চেয়েছিলাম, যার অভিব্যক্তি ও অভিনয়গুণে চরিত্রটি জীবন্ত হয়ে উঠবে। তিনি আমদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন।”
এবারের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২৮ মার্চ ‘জিম্মি’ আসছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইতে।