দেশে বাণিজ্যিক ফুল চাষের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত শের আলী সরদার (৭৫) মারা গেছেন। আজ বুধবার সকাল ছয়টার দিকে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নানা রোগে ভুগছিলেন।

যশোর ফুল উৎপাদক ও বিপণন সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুর রহিম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘শের আলী সরদার ফুল চাষের প্রথম উদ্যোক্তাদের একজন ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানাচ্ছি।’

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শের আলীর বাবা আবদুর রহমান সরদারের নার্সারির ব্যবসা ছিল। ফলদ ও বনজ গাছের চারা বেশি উৎপাদন করতেন আবদুর রহমান সরদার। বাবার নার্সারিতে কাজ করতেন শের আলী। ১৯৮২ সালের এক বিকেলে শের আলী নার্সারিতে ছিলেন, তখন এক পথচারী এসে তাঁর কাছে পানি খেতে চাইলেন। ওই পথচারীর হাতে ছিল কিছু রজনীগন্ধা। কথায় কথায় জানলেন পথচারীর নাম নূর ইসলাম। বাড়ি যশোর সদরে। সেই নূর ইসলামের মাধ্যমে শের আলী আড়াই মণ রজনীগন্ধার বীজ নিয়ে নিজের ৩০ শতক জমিতে বপন করেন। রজনীগন্ধার ভালো ফলন পেলেন।

ঢাকায় তখন রজনীগন্ধা বেশি পাওয়া যেত না। চাঁপা, রঙ্গন বা কাঠগোলাপ বিক্রি হতো। ফুলের বাজারও বেশি বড় ছিল না। সাধারণত পূজা-পার্বণে লোকে ফুল ব্যবহার করতেন। তখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন এইচ এম এরশাদ। তিনি মালঞ্চ নামে শাহবাগে একটি ফুলের দোকান উদ্বোধন করলেন। দেশের প্রথম বাণিজ্যিক ফুলের দোকান সেটি। শের আলীর রজনীগন্ধা দিয়ে দোকানটির যাত্রা শুরু। শের আলী তত দিনে গ্লাডিওলাস, জারবেরা ইত্যাদি ফুল উৎপাদনেও সফল হন।

যশোর সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে গদখালী। গদখালী থেকে আরও কিছুটা দূরে পানিসারা গ্রাম। গ্রামের কমবেশি সবাই ফুল চাষ করেন। পানিসারার পাশের গ্রামের মানুষেরাও ফুল চাষ করেন। প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়। কর্মসংস্থান হয়েছে পাঁচ হাজার মানুষের। এ ছাড়া ফুল কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত আরও ৫০ হাজার মানুষ। গদখালীর ফুল ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেটসহ ৫৫টি জেলায় যায়। শের আলীর দেখানো পথেই ফুল চাষে এ সফলতা আসে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনা শের আলীর নার্সারি দেখতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘শের আলীর ফুল বিশ্বমানের।’

পৃথিবীর ২০টির বেশি দেশ ঘুরেছেন শের আলী। জীবনে কোনো দিন ফুলের বীজ বিক্রি করেননি। শের আলী বলেছিলেন, ‘আমি জীবনে কখনো ফুলের বীজ বিক্রি করিনি। যতটা পেরেছি বিতরণ করেছি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ র আল র সরদ র

এছাড়াও পড়ুন:

সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে ছাত্রদলের বৈশাখী উপহার

পয়লা বৈশাখে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে বৈশাখী উপহার তুলে দিয়েছেন ছাত্রদলের এক নেতা।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তনের সামনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ সন উপলক্ষে ৩২ জন শিশু-কিশোরের মাঝে এ উপহারসামগ্রী বিতরণ করা হয়।

ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজ আহমেদ প্রিন্সের উদ্যোগে এ আয়োজনে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রনেতা প্রিন্স বলেন, “পয়লা বৈশাখ আমাদের শত বছরের সামাজিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নববর্ষের উৎসবের সঙ্গে আমরা বরাবরই নিজেদেরকে রাঙিয়ে তুলি। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি প্রায়ই দেখেছি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কিছু সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা ঘোরাফেরা করে। যাদের জীবনে নেই কোনো নববর্ষের আনন্দ আয়োজন। তাই সেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাতে নতুন পোশাক, চকলেট ও তাদের শিক্ষায় উৎসাহিত করতে কলম-খাতা এবং আমাদের গর্বের জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছি। তাদের সঙ্গে নববর্ষের আনন্দ ভাগাভাগি করতে আমাদের এই প্রচেষ্টা। আমরা ভবিষ্যতে যে ঐক্যবদ্ধ ও ইতিবাচক বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি এই ক্ষুদ্র আয়োজন তারই প্রয়াস মাত্র।”

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্য ইউসুফ ভূঁইয়া নীরব, রাকিব হোসেন, কবি জসিমউদ্দীন হলের ক্রীড়া সম্পাদক আব্দুল ওহেদ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আজিজুল হাকিম, বিজয় একাত্তর হলের ইমতিয়াজ আহমেদ রনি, খন্দকার শাহরিয়ার, মুজিব হলের সানজিদ ইসলাম, সূর্যসেন হলের সাব্বির হাসান, মুহসীন হলের রাকিবুল ইসলাম, মাহমুদ, ড. শহীদুল্লাহ্ হলের তারেকুজ্জামান, জগন্নাথ হলের প্রান্ত চৌধুরী, শামসুন্নাহার হলের নূর রাদিয়া তাহিয়াত, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিল্লুর, নিলয়, তামিম, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের নাফিস, মার্কস মেডিকেলের আকিব, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবায়ের, নূর, শান্ত, জুনায়েদ, ঢাকা কলেজের মামুন, মিয়ারাজ, তিতুমীর কলেজের আরিফ, ঢাকা মহানগরের মাহফুজ, শাফিন, সিয়াম, মাহিবি, সানিম, জিহাদ, রতন, রাসেল প্রমুখ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ