তালানিতে নেমেছে দেশের দ্বিতীয় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য। এর আগে এমন সময়ে ভারত থেকে এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন দেশে প্রবেশ করতো ৩০০ থেকে ৪০০ ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক। বর্তমান প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ ট্রাক পণ্য আমদানি হচ্ছে এই বন্দরে। 

তবে আমদানি কিছুটা হলেও রপ্তানি একবারে তলানিতে নেমেছে। এ বিষয়ে ভারত কাস্টমসকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে হিলি বন্দর ঘুরে জানা যায়, ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য হিলিকে শুল্ক স্টেশন হিসেবে ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ সরকার। দেশের মানুষের চাহিদা মেটাতে অনেক পণ্যই আমদানি করতে হয় পাশের দেশ ভারত থেকে। আর এক্ষেত্রে দেশের সম্ভাবনাময় স্থলবন্দর হিসেবে গুরুত্ব পায় হিলি স্থলবন্দর। 

শুরুর দিকে বিভিন্ন ফল ও যানবাহনের যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন পণ্য এ বন্দর দিয়ে আমদানি হতো। কিন্তু বর্তমানে সামান্য কিছু ভোজ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং গোখাদ্য আমদানি হচ্ছে এ বন্দর দিয়ে। কিছু দিন আগেও এই স্থলবন্দর দিয়ে পাথর আমদানি হতো, বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। 

আমদানি-রপ্তানিকারক নুর-ইসলাম বলেন, “এই স্থলবন্দরের জায়গা তিনটি স্তরে রয়েছে। বন্দরে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ ট্রাক লোডিং-আনলোডিং করার সুবিধা আছে। ব্যাপক উন্নয়নের পরও এ বন্দরের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা বিরাজ করছে। আমদানি বাণিজ্য কমে আসায় কমেছে বন্দরের দৈন্যদিন আয়ও। বহু আমদানিকারক পণ্য আমদানি করতে না পারায় বকেয়া টাকা তুলতে পারছেন না।” 

হিলি সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর ব্যাংকগুলো চাহিদা মতো এলসি না দেওয়ার কারণে আমদানি-রপ্তানিতে প্রভাব পড়ে। এতে বন্দরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।” 

তিনি আরও বলেন, “কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি পড়লে আমদানি-রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে এই স্থলবন্দর। এতে পরিবহন ব্যয় কম এবং আমদানি করা পণ্যের দামও কমবে।”

হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, “ভারত থেকে আমদানিকৃত সকল পণ্য দ্রুত ছাড়করণে সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে কিছুটা আমদানি-রপ্তানি কমেছে। ভারতের অভ্যন্তরে কোয়ারেন্টাইন অফিস না থাকার কারণে বাংলাদেশ থেকে পণ্য ভারতে রপ্তানি করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।”

ঢাকা/মোসলেম/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো

ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো। বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আজ মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। ওই সব স্থলবন্দর দিয়ে মূলত ভারত থেকে সুতা আমদানি হতো।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে।

জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় গুদামজাত করা হয়। এরপর সেখান থেকে সুতা বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এসব সুতা তুলনামূলক কম দামে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ কারণে দেশি সুতার পরিবর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আসা সুতা বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে দেশের বস্ত্রশিল্পকারখানাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ)।

জানা গেছে, চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান এবং দেশে উৎপাদিত সুতার দাম প্রায় একই রকম হলেও স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারতীয় সুতার দাম অনেক কম থাকে। অর্থাৎ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা সুতা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে আসে। এতে দেশের সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ
  • হিলি বন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি 
  • ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো