সারা দেশে আয়নাঘরের সংখ্যা ৭০০ থেকে ৮০০–এর মতো হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান শফিকুল আলম।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ ঢাকার তিনটি গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘর পরিদর্শন করেন। সে বিষয়ে প্রেস উইং এই সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।

প্রেস সচিব জানান, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আয়নাঘর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সে সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছয়জন উপদেষ্টা, গুম কমিশনের প্রধানসহ পাঁচজন ও গুমের শিকার আটজন। যে তিনটি আয়নাঘর পরিদর্শন করা হয়েছে তার মধ্যে দুটি র‍্যাবের এবং আরেকটি ডিজিএফআইয়ের। পরিদর্শনের সময় কয়েকজন সাংবাদিকও ছিলেন।

প্রসঙ্গত, গুম করে এসব গোপন বন্দিশালায় মানুষকে আটকে রাখা হতো। এসব বন্দিশালা ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশে যত ‘আয়নাঘর’ আছে, প্রতিটি খুঁজে বের করা হবে। গুম কমিশনের তদন্ত এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত অনুযায়ী এর সংখ্যা কয়েক শ; ৭০০ থেকে ৮০০–এর মতো হতে পারে। বোঝা যাচ্ছে, এটি শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এ রকম আয়নাঘর ছিল।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতির বক্তব্য, সমালোচনা

কক্সবাজারে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নীলিমা চৌধুরীর উপস্থিতি ও বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে।

গতকাল শুক্রবার (১৪ মার্চ) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কক্সবাজার সফরে আসেন। দুপুর পৌনে ১টায় বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে তারা কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান।

সফরের অংশ হিসেবে কক্সবাজারের বিয়াম ফাউন্ডেশন অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নীলিমা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন এবং বৈঠকে বক্তব্য রাখেন। এরপর থেকে ছাত্র প্রতিনিধি ও সচেতন মহল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।

জাবেদ ইকবাল নামের একজন ফেসবুকে লেখেন, প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে প্রবেশের ব্যবস্থা কে করলো এবং কীভাবে বক্তব্য রাখলো? তদন্ত পুর্বক সহযোগিতাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

রেজাউল করিম রেজা নামের এক পর্যটন সংগঠক মন্তব্য করেন, ‘‘এদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিতে গিয়ে পর্যটন নিয়ে মতবিনিময় সভা হলেও  আমরা পর্যটনের লোকজন কথা বলার সুযোগ পাইনি।’’  

তবে তিনি একজন উন্নয়নকর্মী হিসেবে ব্যাপারটি স্বাভাবিক চোখে দেখেছেন অনেকে। 

শাখাওয়াত হোসাইন সুজন নামের একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেন, উনি একজন মানবিক নেত্রী, মানুষের জন্য কাজ করেন। তাকে নিয়ে এমন মন্তব্য খুবই দুঃখজনক। তাহলে তো দেশটা একটা গোষ্ঠীকে দিয়ে দিতে হবে।

নীলিমা চৌধুরী আওয়ামী রজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন বলে জানা যায়। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে তার একনিষ্ঠ প্রচার-প্রচারণার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ব্যাপারে নীলিমা চৌধুরীর মুঠোফোনে সংযোগ না পাওয়ায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

কক্সবাজার সফরে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্মাণাধীন কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও খুরুশকূল জলবায়ু উদ্বাস্তু কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে তিনি ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উখিয়ায় এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেন।

ঢাকা/তারেকুর/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ