মাতাল অবস্থায় টেলিভেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে জাম্বিয়ার শিক্ষাসচিব বরখাস্ত
Published: 12th, February 2025 GMT
জাম্বিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব জোয়েল কামোকোকে টেলিভিশনে বিতর্কিত উপস্থিতির ঘটনার পর বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাকাইন্দে হিচিলেমা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জেডএনবিসি’র নিউজ বুলেটিন অনুষ্ঠানে সাবেক ইউনিয়ন নেতা ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব জোয়েল কামোকো মাতাল অবস্থায় উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি সে সময় দেশটির নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে আলোচনা করছিলেন। এ ঘটনা পরে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় হাউসের প্রধান যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ক্লেইসন হামাসাকা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে কারিগরি পরিষেবার দায়িত্বে থাকা শিক্ষামন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব হিসেবে কামোকোর চুক্তি বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
হামাসাকা বলেন, “জাম্বিয়ার সংবিধানের ২৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারের প্রতি কামোকোর সেবার জন্য প্রেসিডেন্ট তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তার ভবিষ্যত জীবনের মঙ্গল কামনা করেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “প্রেসিডেন্ট সকল সরকারি কর্মকর্তাদের জাতীয় কর্তব্যের প্রতি সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সব গরু বিক্রি করে দিলেন সেই ডিআইজি প্রিজন
নিজের বাংলোতে গড়ে তোলা খামারের সব গরু বিক্রি করে দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) টিপু সুলতান। গতকাল মঙ্গলবার ১২ লাখ টাকায় তিনি খামারে থাকা গরু–বাছুর বিক্রি করে দেন। ফলে সরকারি বেতনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আর ডিআইজি প্রিজনের গরুর খামারে কাজ করতে হচ্ছে না।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী আবদুর রশিদ আজ বুধবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্যারের খামারে থাকা সব গরু বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের গরুর খামারে আর কোনো কাজ নেই।’
গত ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘চট্টগ্রাম কারাগারে দুধ বিক্রি করছেন ডিআইজি প্রিজন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাবিধি অনুযায়ী, কোনো কারা কর্মকর্তা-কর্মচারী বন্দীদের কাছে কোনো সামগ্রী বিক্রি কিংবা ভাড়া দিতে পারেন না। তা ছাড়া এভাবে তরল দুধ সরবরাহ করা বন্দীদের জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন সাবেক কারা কর্মকর্তারা। অভিযুক্ত চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) টিপু সুলতান চট্টগ্রামে যোগ দেন গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি। ময়মনসিংহ থেকে বদলি হয়ে আসার সময় গরুগুলো সঙ্গে নিয়ে আসেন তিনি। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পূর্ব সীমানাদেয়াল–সংলগ্ন এলাকায় নিজের কার্যালয় ও বাংলোর পাশে খামার গড়ে তোলেন তিনি। খামারে উৎপাদিত দুধ তিনি চট্টগ্রাম কারাগারে বিক্রি করে আসছিলেন।
কারাগারে বাইরে থেকে দুধসহ রান্না করা কোনো খাবার কারাবন্দীদের দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু গোপালগঞ্জের বাসিন্দা ডিআইজি প্রিজন টিপু সুলতান সে নিয়ম মানেননি। ১০ মাস ধরে নিয়মিত তাঁর খামার থেকে গড়ে ২০ লিটার করে দুধ কারা ক্যানটিনে সরবরাহ করা হতো। বাইরে খুচরা মূল্য ৮০ টাকা লিটার, পাইকারি দর ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। ডিআইজি প্রিজন কারাগারে বিক্রি করেছেন ১০০ টাকা দরে। সেই হিসাবে দৈনিক ২ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৬০ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করতেন তিনি।
প্রথম আলোয় এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরপর কারাগারে দুধ বিক্রি বন্ধ করে দেন ডিআইজি প্রিজন টিপু সুলতান। এরপর ৪ ফেব্রুয়ারি দেশের ৬৮ কারাগারে গরু পালনে সরকারি কর্মচারী ও অর্থ ব্যবহার না করতে নির্দেশনা জারি করেছে কারা অধিদপ্তর। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেনের পক্ষে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের সই করা এক চিঠিতে বিষয়টি জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, কারা কর্মকর্তারা গরু পালনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিধিবিধান অনুসরণ করছেন না। এখন থেকে গরু পালনের ক্ষেত্রে কারা অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তাকে কারা মহাপরিদর্শকের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। পাশাপাশি মানতে হবে কিছু শর্ত। এগুলো হলো কারাগারে দুটির বেশি গরু পালন করা যাবে না, কারা এলাকায় গরু পালনের ক্ষেত্রে কারাগারের পরিবেশ কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না, গরু পালনের ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারী নিযুক্ত করা যাবে না, ব্যয় করা যাবে না সরকারি কোনো অর্থ, ব্যক্তিগত গরু পালনের কাজে বন্দীদের ব্যবহার করা যাবে না, সরকারি কোনো স্থানে ঘাস চাষ করা যাবে না, গরু পালন কাজে ব্যবহৃত পানি ও বিদ্যুৎ বিল ব্যক্তিগতভাবে পরিশোধ করতে হবে, গরুর সংখ্যা দুইয়ের অধিক নেই এবং নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে—প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ বিষয়ে লিখিত প্রত্যয়ন দিতে হবে।