এশার নামাজের পর থেকে শেষ রাতের আগপর্যন্ত যেকোনো সময় বিতর নামাজ পড়া যায়। বিতরের নামাজ পড়ার সময় তৃতীয় বা শেষ রাকাতে রুকুতে যাওয়ার আগে দোয়া কুনুত পড়তে হয়। দোয়া কুনুতে রয়েছে গভীর রাতে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার একান্ত আলাপ। এ দোয়ার ফলে আল্লাহ বান্দার প্রতি খুশি হয়ে যান। বান্দার চাওয়া-পাওয়া পরিপূর্ণ করে দেন। দুনিয়ার সব বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি দেন।

রাসুল (সা.

) বিতর নামাজ পড়তেন। বিতর নামাজ পড়ার জন্য স্ত্রীকেও মাঝেমধ্যে জাগিয়ে তুলতেন। প্রথম রাকাতে সুরা আলা, দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কাফিরুন এবং তৃতীয় রাকাতে সুরা ইখলাস পড়তেন। কখনো কখনো সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়তেন। (বুখারি, হাদিস: ৫১২, ৯৯৭; মুসলিম, হাদিস: ৭৪৪; মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৭২০; তিরমিজি, হাদিস: ৪৬২)

কুনুত শব্দ দিয়ে নীরবতা, সালাত, কিয়াম, ইবাদত ইত্যাদি বোঝায়। কুনুতের উদ্দেশ্য হলো নামাজে দাঁড়ানো অবস্থায় আল্লাহর কাছে দোয়া করা। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে সুরা-কিরাত, দরুদ, তাশাহুদ, দোয়া মাসুরাসহ বিভিন্ন দোয়া পড়া হয়। নামাজে এসব পড়া আবশ্যক। এমন দোয়ার মতো আরেকটি আমল হলো দোয়া কুনুত।

দোয়া কুনুত বাংলা উচ্চারণ:

আল্লাহুম্মা ইন্না নাসতায়িনুকা ওয়া নাসতাগ ফিরুকা, ওয়ানুমিনু বিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আলাইকা ওয়া নুছনি আলাইকাল খাইর। ওয়া নাসকুরুকা ওয়ালা নাক ফুরুকা, ওয়ানাখলাউ উয়ানাত রুকু মাইয়্যাফযুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকানা’ বুদু ওয়ালাকা নুছল্লি, ওয়ানাস জুদু ওয়া ইলাইকা নাসয়া; ওয়া নাহফিদু ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আজাবাকা; ইন্না আজাবাকা বিলকুফফারি মুলহিক।

দোয়া কুনুতের অর্থ:

হে আল্লাহ! আমরা তোমারই সাহায্য চাই। তোমারই কাছে ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ইমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সব মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি, অকৃতজ্ঞ হই না। হে আল্লাহ! আমরা তোমারই দাসত্ব করি, তোমারই জন্য নামাজ পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি। আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত আশা করি এবং তোমার আজাবকে ভয় করি। আর তোমার আজাব তো কাফেরদের জন্যই নির্ধারিত।

আরও পড়ুনইয়াজুজ–মাজুজের আশ্চর্য কাহিনি ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩দোয়া কুনুতের ফজিলত

এই দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ আবেদনগুলো তুলে ধরা হয়।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি একরাতে নবী (সা.) কাছে ছিলাম। তিনি শয্যাত্যাগ করলেন এবং দুই রাকাত নামাজ পড়লেন। এরপর উঠে বিতর পড়লেন। প্রথম রাকাতে ফাতিহার পর সুরা আলা পাঠ করলেন। এরপর রুকু ও সেজদা করলেন। দ্বিতীয় রাকাতে ফাতিহা ও কাফিরুন পাঠ করলেন এবং রুকু-সেজদা করলেন। তৃতীয় রাকাতে ফাতিহা ও ইখলাস পাঠ করলেন। এরপর রুকুর আগে কুনুত পড়লেন।’ (কিতাবুল হুজ্জাহ ১/২০১; নাসবুর রায়াহ : ২/১২৪)

দোয়া কুনুত পড়ার নিয়ম

দোয়া কুনুত বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে সুরা মেলানোর পর পাঠ করতে হয়।

আরও পড়ুনদোয়া কুনুত: বাংলা উচ্চারণ, অর্থ, ফজিলত ও পড়ার নিয়ম০১ জানুয়ারি ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ করল ন

এছাড়াও পড়ুন:

আছিয়াকাণ্ডে আসামিদের বাড়িতে আবারও ভাঙচুর-লুট

মাগুরার সেই শিশুটির মৃত্যুর পর আসামিদের বাড়িতে গতরাতে অগ্নিসংযোগ ভাঙচুরের পর আজ শুক্রবার (১৪ মার্চ) আবারও মালপত্র লুটপাট এবং গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিন দুপুরে মাগুরা শহরতলীর নিজ নান্দুয়ালী মাঠ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। 

শিশুটির মৃত্যুর পর ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার আসামিদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান স্থানীয় লোকজন। 

দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির মূল কাঠামো ভাঙার পাশাপাশি সেখান থেকে গাছপালাও কেটে নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িতে কয়েকটি দেয়াল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ওই বাড়িতে লুটপাট শুরু হয়। প্রথমেই বাড়ির জানালা-দরজা ভেঙে বাড়িতে থাকা জিনিসপত্র লুট করে নেন কিছু লোকজন। এরপর সন্ধ্যা সাতটার পর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ওই বাড়িতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

গাছ কাটতে থাকা এক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই বাড়ির জন্য গ্রামের দুর্নাম হয়েছে। এ কারণে এই বাড়ির কোনো নাম-নিশানা আমরা রাখতে চাই না। এই বাড়ির পরিণতি দেখে অন্যরা যেন শিক্ষা নেয়, সে ব্যবস্থাই আমরা নিচ্ছি।”

স্থানীয় কয়েকজন জানান, ওই বাড়িতে আধা পাকা দুটি ঘর ছিল। একটি ঘরে পাশাপাশি তিনটি কক্ষ এবং আলাদা একটি এক কক্ষের ঘর। সেখানে মা, দুই সন্তান, এক পুত্রবধূ ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন মামলার মূল অভিযুক্ত (শিশুটির বোনের শ্বশুর) হিটু শেখ। 

ঘটনার পর হিটু শেখ, তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ওই বাড়িতে হিটু শেখের বৃদ্ধা মা একাই বসবাস করছিলেন। তবে গতকাল দুপুরের পর তাকে আর ওই বাড়িতে দেখা যায়নি। তিনি কোথায় আছেন, সে বিষয়েও এলাকার লোকজন কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘‘শিশুটির ন্যায়বিচারের কথা বলে এই লোকগুলো আরেকটি বড় অন্যায় করছে। এটা করছে মূলত লুটের উদ্দেশ্যে। এই বাড়ি ভাঙচুরের মধ্যে ভালো কিছু দেখি না।”

শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানাতে আজ মাগুরা শ্রীপুর উপজেলায় গিয়েছিলেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান। আসামিদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা এই ভাঙচুর-লুটপাটকে সমর্থন করি না। যারা এটা করেছে, তারাও অপরাধ করেছে। আমরা তাদেরও বিচার চাই। বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আমরা এ ঘটনায় ন্যায়বিচার চাই। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই। সেটা নিশ্চিত না হলে আমরা আন্দোলন করব। তবে এ ঘটনায় যারা বারবার মহাসড়ক অবরোধ করে জনভোগান্তি সৃষ্টি করছে, আমরা এটাও সমর্থন করি না।”

আসামিদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হলেও তা নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসেননি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সদস্যও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কাজে বাধা দেননি। 

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনো কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ওদিকে নজর দেওয়ার সুযোগ পাইনি।”

ঢাকা/শাহীন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, গরমে হাঁসফাঁস
  • এবার তামিম সেঞ্চুরি পাননি, জিতেছে মোহামেডান, আবাহনী ও গাজী
  • হেলিকপ্টারে মাগুরা যাওয়া নিয়ে সারজিস বললেন ‘সিট খালি ছিল’
  • প্রতিমা ভাঙার ঘটনায় ছেলেকে ধরিয়ে দিলেন বাবা
  • আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না নেইমারের
  • যেভাবে কেটেছে আয়নাঘরে চার দিন
  • স্ত্রীকে হত্যার পর পালিয়ে যাওয়া স্বামী গ্রেপ্তার
  • আইপিএলের শুরুতে বুমরাহকে পাচ্ছে না মুম্বাই
  • শিশু ধর্ষণের অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার
  • আছিয়াকাণ্ডে আসামিদের বাড়িতে আবারও ভাঙচুর-লুট