নিজস্ব ক্যাম্পাসের দাবিতে নরসিংদী টেক্সটাইল কলেজের শিক্ষার্থীদের
Published: 12th, February 2025 GMT
নিজস্ব ক্যাম্পাস করাসহ নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরে নেওয়ার দাবি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল হতে টানা সেখানে অবস্থান করছেন তারা।
এর আগে মঙ্গলবার প্রায় ৪ ঘণ্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। মঙ্গলবার রাত হতে টানা আজ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দিনেও চলছে এ কর্মসূচি।
নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, নিজস্ব ক্যাম্পাস করাসহ তাদের কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরে নেওয়ার দাবিতে দীর্ঘ ৭ মাস ধরে দফায় দফায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সমাবেশ, মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। তাদের এ ন্যায় সঙ্গত দাবি না মেনে গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক সপ্তাহের মধ্যে কলেজটির শিক্ষার্থীদের টাঙ্গাইলের কালিহাতির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সংযুক্ত হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
সিরাজগঞ্জ জেলা কমিটি স্থগিত, আন্দোলন প্রত্যাহার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন
কমিটি বাতিলের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা
কলেজের কার্যক্রম বন্ধ করে নেওয়া এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। জনভোগান্তির কথা বিবেচনা করে অবরোধ তুলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়। দিন ও রাতে টানা সেখানে অবস্থান করবেন বলে তারা জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিল করে নরসিংদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে বস্ত্র অধিদপ্তরের আওতায় নিয়ে পরিচালনা, অস্থায়ী ক্যাম্পাসে নতুন সেশনে ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখা, নিজস্ব ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করা, শিক্ষক নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক রাশেদুল হোসেন চৌধুরী জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের তিনি কথা বলেছেন। সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা/হৃদয়/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পরপর তিন মেয়ের পর এক ছেলে, তাদের পর এলো জমজ
ছেলের আশায় পরপর তিনটি মেয়ে হয়েছে তানিয়া বেগমের। পরবর্তীতে ছেলেও হয়েছে। সেই ছেলের বয়স এখন তিন। ইচ্ছাপূরণের পর দরিদ্র স্বামী ইস্রাফিল মোল্লা বা তানিয়া– কারোই আর সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। তবে বিধির লীলা বোঝা বড়ই ভার। তানিয়া নতুন করে যখন সন্তানসম্ভবা হন, তখন ভরসা রাখেন আল্লাহর ওপর। নড়াইলের এই গৃহবধূ সোমবার সকালে জন্ম দিয়েছেন জমজ ছেলের।
নড়াইল শহরের বেসরকারি মডার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিক অ্যান্ড চিকিৎসা কেন্দ্রে সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দুই ছেলের জন্ম দেন তানিয়া। তাঁর স্বামী ইস্রাফিল মোল্লা সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় ভ্যানচালক তিনি। ছেলেদের জন্মের পর মা তানিয়া তাদের নাম রেখেছেন– মোহাম্মদ ও আহম্মদ।
সন্তানসম্ভবা পুত্রবধূকে নিয়মিত নড়াইল সদর হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন বলে জানান শিশুদের দাদি রেবেকা খাতুন। তিনি বলেন, তারা দরিদ্র মানুষ। ইচ্ছা ছিল স্বাভাবিকভাবেই প্রসব করানোর। কিন্তু সোমবার সকাল ৬টার দিকে হঠাৎ করেই পুত্রবধূর ব্যথা ওঠে। তখন বাড়ি থেকে আসার সুবিধার কারণে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করেন তানিয়াকে।
রেবেকার ভাষ্য, ‘পুতা (সন্তানের ছেলে) জন্ম হওয়ার পর প্রথমজনকে আমি কোলে নিই, আরেকজনকে কোলে নেয় বৌমার মা (শিশুদের নানি) তসলিমা বেগম।’ শিশুদের জন্মের সময় নববর্ষের দিনে পড়েছে কি-না এ বিষয়ে কেউই জানতেন না। তাদের কোলে নেওয়ার পর দাদি-নানিই তাদের কানে আজান দেন। তাদের বাবা বাড়িতে গিয়ে ওজু-গোসল সেরে আজান দিয়েছেন।
প্রতিটি শিশুর ওজনই দুই কেজি ৭০০ গ্রাম করে হয়েছে জানিয়ে রেবেকা খাতুন বলেন, ‘বাচ্চারা এখনো ঠিকমতো মায়ের দুধ পাচ্ছে না। দুধ পাবার চেষ্টা করতিছি।’
১৮ বছর আগে নড়াইল সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের ইস্রাফিল মোল্যার সঙ্গে বিয়ে হয় সদরের বাঁশগ্রামের কিশোরী তানিয়া বেগমের। তখন তানিয়ার বয়স ছিল ১৩ বছর। প্রথম সন্তান মারিয়ার জন্ম হয় এর তিন বছর পর। সেই মেয়েটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পড়তো। ঈদুল ফিতরের তিনদিন পর বিয়ে হয়েছে এই কিশোরীর। তার স্বামীই জমজ শ্যালকদের জন্য সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি কিনে দিয়েছে বলে জানান ইস্রাফিল মোল্লা। তিনি বলেন, তাঁর মেঝ মেয়ে মরিয়ম (১০) ও ছোট মেয়ে হাবিবা (৮) বলরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। ছেলে আব্দুর রহমানের বয়স ৩ বছর। ইস্রাফিলের ভাষ্য, ‘৬ সন্তান হলেও আমরা খুশি, আনন্দিত। এ সন্তান আল্লাহর দান।’
মডার্ন সার্জিক্যাল ক্লিনিক অ্যান্ড চিকিৎসা কেন্দ্রে তানিয়ার অস্ত্রোপচারের নেতৃত্বে ছিলেন নড়াইল সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমার। তিনি বলেন, ‘প্রসূতিকে সোমবার সকালে জরুরি অবস্থায় ভর্তি করা হয়। সবাই তাদের বিষয়ে আন্তরিক ছিলাম। নবজাতক ও তাদের মা সুস্থ আছে। আমরা তাদের খোঁজ-খবর রাখছি।’