আকিয়াব থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে একটি কাঠের বোট আটকে রেখেছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বুধবার বিকেল পর্যন্ত রাখাইন মংডু খারাংখালী খালে কাঠবাহী বোটি আরাকান আর্মির জিম্মায় রয়েছে।

এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপের গোলারচর এলাকা থেকে তল্লাশির কথা বলে স্পিড বোটে ধাওয়া করে কাঠবাহী বোটটি ধরে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। তিন দিন হলেও এখনো বোটটি ছেড়ে দেয়নি।

ফের তল্লাশির নামে আরাকান আর্মি হেফাজতে একটি কাঠের বোট রয়েছে বলে স্বীকার করেছেন টেকনাফ স্থলবন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, তিনদিন হলেও একটি কাঠের বোটটি এখানে এসে পৌঁছায়নি। বোটে ৩৫ টন কাঠ রয়েছে। এসব মালামাল ব্যবসায়ী আবদুল কাদেরের কাছে আসছিল। এছাড়া গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোনো পণ্যবাহী বোট আসেনি।

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী আবদুল কাদের বলেন, ‌‌‌‌‍৩৫ টন কাঠ নিয়ে মিয়ানমার থেকে একটি বোট আমার কাছে আসার পথে সেদেশের আরাকান আর্মি নিয়ে গেছে। শুনেছি তারা (আরাকান আর্মি) তল্লাশি চালাচ্ছে। হয়তো তাদের কেউ ভুল তথ্য দিয়েছেন। তবে সেদেশের ব্যবসায়ীর সাথে যোগাযোগ চলছে। কাঠগুলো তল্লাশি শেষে বোট ছেড়ে দেবে বলে শুনেছি।

এদিকে এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে মিয়ানমারের ইয়াংগুন থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদের মোহনায় আটকা পড়ে পণ্যবাহী তিনটি কার্গো। এসব কার্গোতে ৫০ হাজার বস্তা শুটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন মালামাল রয়েছে। এর মধ্য গত ২০ জানুয়ারি দুটি বোট ছেড়ে দিয়েছিল আরাকান আর্মি। সেখানে ২৭ হাজার ৭২২ বস্তা মালামাল ছিল। আরেকটি ১ ফেব্রুয়ারিতে ছেড়ে দিয়েছিল। এরপর দশ দিনের মাথায় আবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এর অংশ হিসেবে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে কোনো পণ্যবাহী বোট আসেনি।

জানতে চাইলে আমদানিকারক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়বে। সরকারের উচিত এর স্থায়ী সমাধান করা। এর আগেও পণ্যবাহী বোট আটকের ঘটনায় এখনো ইয়াঙ্গুন থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্যবাহী বোট আসা বন্ধ রয়েছে। তার ওপর এ ধরনের ঘটনা। এতে স্থলবন্দর আসতে অচল হয়ে পরবে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, টেকনাফ স্থলবন্দরে আসার পথে কাঠবাহী এক বোট নিয়ে গেছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর ক ন আর ম আর ক ন আর ম ব যবস য র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো

ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো। বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

আজ মঙ্গলবার এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। ওই সব স্থলবন্দর দিয়ে মূলত ভারত থেকে সুতা আমদানি হতো।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে।

জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় গুদামজাত করা হয়। এরপর সেখান থেকে সুতা বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এসব সুতা তুলনামূলক কম দামে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ কারণে দেশি সুতার পরিবর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আসা সুতা বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে দেশের বস্ত্রশিল্পকারখানাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ)।

জানা গেছে, চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান এবং দেশে উৎপাদিত সুতার দাম প্রায় একই রকম হলেও স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারতীয় সুতার দাম অনেক কম থাকে। অর্থাৎ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা সুতা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে আসে। এতে দেশের সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ
  • হিলি বন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ চাল আমদানি 
  • ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলো