ঋণ করে তিন বছর আগে লিবিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা আবদুর রব (২৫)। এক বছরের মাথায় ছোট ভাইকেও তিনি নিয়ে যান সেই দেশে। মানুষের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ এখনো শেষ হয়নি। এরই মধ্যে লিবিয়ায় আবদুর রবকে অপহরণ করেছে মানব পাচার চক্র। তাঁকে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে দাবি করা হচ্ছে মুক্তিপণ। শিগগিরই মুক্তিপণ আদায় না করলে হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন অপহরণকারীরা।

গত ১৪ জানুয়ারি আবদুর রবকে অপহরণ করা হয়। এরপর ২৬ জানুয়ারি থেকে তাঁকে নির্যাতনের ভিডিও বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ ইমোতে পরিবারের সদস্যদের পাঠানো হচ্ছে। মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে ২৬ লাখ টাকা। লিবিয়ায় অপহরণ করলেও বাংলাদেশের পাঁচটি ব্যাংক হিসাবে মুক্তিপণ পরিশোধ করতে বলা হয়।

ছেলেকে নির্যাতনের ভিডিও দেখে কাঁদতে কাঁদতে শয্যাশায়ী আবদুর রবের মা তাজনেহার বেগম। সারাক্ষণই বিলাপ করছেন তিনি। বাবা ও দুই বোনের চোখেও কান্না। ছেলেকে উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর জেলা কার্যালয়ে আবেদন করেছেন বাবা আবদুর রহিম।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের সুন্দলপুর গ্রামে আবদুর রবের বাড়িতে ঢুকতেই এক নারীর বিলাপ কানে আসে। সামনে এগিয়ে জানা গেল, বিলাপরত নারী আবদুর রবের মা তাজনেহার বেগম। ছেলেকে মনা নামে ডাকেন তিনি। বিলাপ করে তাজনেহার বলছিলেন, ‘ভাইরা গো, আন্নেরা সবাই আমার লাগি সাহায্য করেন গো। আমি নামাজ পড়ে দোয়া করুম। এই হাডারি টোলার মানুষ জানে, আমি আমার মনাকে কেমনে হাইলছি। আন্নেরা সরকাররে কন, মনারে যেন আঁর বুকে হিরাই আনি দেয়। আঁই আর মনারে ছাড়া বাঁইচতাম ন। আইজ এক মাস মনার কোনো খোঁজ নাই।’

মায়ের পাশে বসে কাঁদছিলেন আবদুর রবের বোন জান্নাতুল ফেরদাউস। ঘরের সামনে বসা আবদুর রহিমের চোখেও তখন পানি গড়িয়ে পড়ছিল। জানতে চাইলে আবদুর রবের বাবা আবদুর রহিম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, মানুষের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে ১০ লাখ টাকা খরচ করে বড় ছেলে আবদুর রবকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের ৯ তারিখে লিবিয়া পাঠিয়েছেন। একইভাবে পরের বছর ছোট ছেলে আবদুর রহমানকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। সেখানে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে দুই ভাই চাকরি করতেন।

অপহৃত আবদুর রবের বাবা আবদুর রহিম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা: আপিলে খালাস পেলেন মাহমুদুর রহমান

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যাচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের মামলায় সাজার বিরুদ্ধে আপিল করে খালাস পেয়েছেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

আজ সোমবার ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তারিক এজাজের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। এদিন সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান আদালতে উপস্থিত হন। তার উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্য দলগুলোর উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। 

এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় এ মামলা করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এপর্যন্ত এই মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জনের সাক্ষ্য নেয় আদালত। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নুর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনের সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালতে মাহমুদুর রহমান আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

পরে ওই বছরের ৩ অক্টোবর আপিলের শর্তে তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। পরে গত ১২ ডিসেম্বর সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। গত ২৩ জানুয়ারি আপিল শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ১০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালে খেয়াঘাটের দ্বন্দ্বের জেরে চাচাকে খুন, ১০ দিন পর নদী থেকে লাশ উদ্ধার
  • পূর্ব শক্রতার জেরে যুবদল নেতাকে ‘অপহরণ করে মারধর’
  • টেকনাফে নৌকাসহ ৪ জেলেকে অপহরণ করল আরাকান আর্মি
  • টেকনাফ থেকে নৌকাসহ চার জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি 
  • টেকনাফ থেকে নৌকাসহ চার জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি 
  • ব্যবসায়ীকে অপহরণ, মুক্তিপণ দিতে হবে ব্যাংকে, কেউ জানলে পড়বে লাশ
  • খালাস পেলেন মাহমুদুর রহমান
  • জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলা: আপিলে খালাস পেলেন মাহমুদুর রহমান
  • ছাত্র অধিকার পরিষদ নেতা রবিউলকে কলাপাড়া থেকে অপহরণ করে ভাঙ্গায় ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা