সিন্ডিকেট থেকে দুই শিক্ষক প্রতিনিধিকে বাদ, উপাচার্যের বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ
Published: 12th, February 2025 GMT
মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের দুই শিক্ষক প্রতিনিধিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য শুচিতা শরমিনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়মবহির্ভূতভাবে তাঁদের সিন্ডিকেট থেকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ওই দুজন হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফরহাদ উদ্দীন ও সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মোস্তাকিম মিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী, সিন্ডিকেট সদস্যদের দুই বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয়। গত বছরের ৩০ এপ্রিল ৪৪তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় দুই বছরের জন্য ওই দুজন সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচিত হন। ৬ ফেব্রুয়ারি ৪৯তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তাঁদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মোস্তাকিম মিয়া অভিযোগ করেন, উপাচার্যের ব্যক্তিগত পছন্দের লোক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সাবেক কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অব.
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাডেমিক কাউন্সিলের দুজন সদস্য বলেন, ৬ ফেব্রুয়ারি একাডেমিক কাউন্সিলের সভার আলোচ্যসূচিতে সিন্ডিকেট সদস্যদের বিষয়টি ছিল না। তবে সভায় উপাচার্য উল্লেখ করেন, সিন্ডিকেট থেকে স্বৈরাচারের দোসরদের বাদ দেওয়ার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা। তখন ওই দুই সদস্যকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য অন্যদের সিদ্ধান্ত জানতে চান। এরপর তাঁদের বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপাচার্য শুচিতা শরমিনের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার ও আজ বুধবার একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। উপাচার্য দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি বরিশালের বাইরে আছেন।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ে উপাচার্য শুচিতা শরমিন ও সহ–উপাচার্য গোলাম রব্বানির মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ৭ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ওই দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের একাডেমিক অগ্রগতি জানতে চেয়ারম্যানদের সঙ্গে একটি সভা ডেকেছিলেন সহ–উপাচার্য। সহ–উপাচার্যের পক্ষে সহকারী রেজিস্ট্রার সাফিজ উদ্দিন ১০ ফেব্রুয়ারি সভার নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু উপাচার্য ওই দিনই সহ–উপাচার্যের নোটিশকে বিধিবহির্ভূত উল্লেখ করে সব বিভাগের চেয়ারম্যানকে এ ব্যাপারে সাড়া না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পাল্টা নোটিশ দেন। তাঁর পক্ষে রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম ওই নোটিশ জারি করেন। এ ঘটনার পর সহ–উপাচার্যের পক্ষে নোটিশ জারি করা সহকারী রেজিস্ট্রার সাফিজ উদ্দিনকে তাঁর দপ্তর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সিন্ডিকেট থেকে বাদ দেওয়া দুই শিক্ষক ফরহাদ উদ্দীন ও মোস্তাকিম মিয়া সহ–উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ও কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, উপাচার্য দুজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে মেয়াদপূর্ণ হওয়ার আগে সিন্ডিকেট থেকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বাদ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শূন্য পদ পূরণ করা উচিত ছিল, কিন্তু তিনি তা করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে স্বৈরাচারের দোসররা দায়িত্বে আছেন। অথচ সেখানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেওয়া সেই আ.লীগ নেতা কারাগারে
হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। দুই সপ্তাহ পর রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে সিলেটের হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার আকছার মিয়া উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বড় হাজিপুর গ্রামের সমসু মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ৩১ মার্চ আকছার মিয়াকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার পথে রামকৃষ্ণপুর এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ তার স্বজনরা তাকে ছিনিয়ে নেয়। ওই দিন স্থানীয় বাসিন্দা আওয়ামী লীগ কর্মী আজিম ও তার ভাই হাসান ফেসবুকে লাইভ দিয়ে লোকজন জড়ো করেন। একপর্যায়ে আছকারের আত্মীয়-স্বজনসহ দলীয় কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। পরদিন পুলিশ মুক্তারপুর হাওর থেকে হাতকড়া উদ্ধার করে। এ ঘটনায় গত ১ এপ্রিল ১৮ জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করে। মামলার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান করে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোনায়েম মিয়া জানান গ্রেপ্তার আকছার মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।