বরিশালের উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীতে ট্রলারসহ নিখোঁজ হওয়ার ১০ দিন পর চালক মাহবুব হাওলাদারের (৫২) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাবুগঞ্জের সন্ধ্যা নদীর মোল্লারহাট–সংলগ্ন থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। মাহবুব উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের মুণ্ডপাশা গ্রামের সেকান্দার আলী হাওলাদারের ছেলে।

পুলিশ জানায়, উজিরপুরের শিকারপুর খেয়াঘাট নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে মাহবুবকে খুন করে পাথর বেঁধে লাশ সন্ধ্যা নদীতে ফেলে দিয়েছিলেন তাঁর ভাতিজা সুজন হাওলাদার। এ ঘটনায় নিহত মাহবুবের আপন ছোট ভাই শহিদুল ইসলামের ছেলে সুজন হাওলাদার, তাঁর মামাতো ভাই রিয়াদ হোসেন, বন্ধু নাঈম (১) ও নাঈম (২), তাসিন এবং অপর একজনসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি দুজনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তার আসামিরা আজ বুধবার দুপুরে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। চাচাকে হত্যার পর তাঁর ট্রলারটি বিক্রি করে দিয়েছেন ভাতিজা সুজন।

মাহবুব নিখোঁজ হওয়ার পর স্বজনেরা অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাঁর সন্ধান পাননি। পরে একটি সূত্রে পরিবার জানতে পারে, ৩১ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে বাবুগঞ্জের রাহুতকাঠি খেয়াঘাট থেকে উজিরপুরের শিকারপুর বন্দরে আসার জন্য ৭/৮ জন যুবক মাহবুবের ট্রলারে ওঠেন। এর পর থেকে ট্রলারসহ নিখোঁজ হন মাহবুব। পরে পরিবার সন্দেহ করে মাহবুবকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গত ১ ফেব্রুয়ারি মাহবুবের বড় ভাই জামাল হোসেন হাওলাদার বাদী হয়ে বাবুগঞ্জ থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাতনামা সাত–আটজনকে আসামি করা হয়।

পুলিশ জানায়, মাহবুব অপহরণ হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের হওয়ার পর বাবুগঞ্জ থানার পুলিশ এই ঘটনায় নিবিড় তদন্ত শুরু করে। এ সময় বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে কয়েকজনকে সন্দেহ করে তাদের নজরদারিতে রাখে তদন্তকারীরা। তদন্তের সূত্র ধরে সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে অধিকতর নিশ্চিত হয়ে গত সোমবার রাতে অপহৃত মাহবুবের ছোট ভাই শহিদুল ইসলাম হাওলাদার, তাঁর ছেলে সুজন হাওলাদারকে আটক করা হয়। পরে সুজনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে একপর্যায়ে চাচাকে হত্যা করে পাথর বেঁধে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় তাঁর সঙ্গে যারা ছিল তাদের নামও জানায়। এরপর একে একে বাকি পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহবুবের ছোট ভাই শহিদুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম ঘটন য় হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

২৫ লাখ মুক্তিপণ দিলেও ছেলে ফেরেনি, মানববন্ধনে পরিবারের আকুতি

মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা দিয়েও মিলনকে ফিরে পাননি বাবা। প্রায় ১৮ দিন অতিবাহিত হলেও ছেলেকে ফিরে না পেয়ে ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। মিলন হোসেন (২৩) পীরগঞ্জ উপজেলার ৩নং খনগাঁও ইউনিয়নের চাপাপাড়া এলাকার বাসিন্দা পানজাব আলীর ছেলে। তিনি দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র। অপহৃত হওয়া কলেজ পড়ুয়া সেই শিক্ষার্থীকে দ্রুত ফিরে পেতে ও অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁওবাসীর আয়োজনে এ মানববন্ধনে অংশ নেন মিলনের পরিবারসহ এলাকাবাসীরা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষে একটি মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌরাস্তাায় এসে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে মিলনের মা বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে অপহরণ করে তারা কোথায় রেখেছে জানি না, কেমন আছে জানি না। অপহরণকারীরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছিল, আমরা গরিব খেটে খাওয়া পরিবার; সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েছি। মুক্তিপণের দাবি পূরণ করার পাঁচদিন অতিবাহিত হলেও তারা আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেয়নি।’’ দ্রুত ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে এবং অপহরণকারীদের আটক করে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

আরো পড়ুন:

ধর্ষণ ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে আইএসইউ শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মাগুরায় শিশুকে ধর্ষণের প্রতিবাদে যবিপ্রবিতে মানববন্ধন

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার সময় ভুক্তভোগী পরিবারকে মুঠোফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় অপহরণকারীরা। প্রথমে ১২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তিপণের ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পর দিন দুপুরে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হয় মিলনের পরিবার। তবে পরে চক্রটি ৫ লাখ টাকা দাবি করে। পরদিন মুক্তিপণ বেড়ে ১০ লাখ হয়। তিন দিন পর ১৫ লাখ চায় চক্রটি। সর্বশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র।

সর্বশেষ ৯ মার্চ রাতে ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকাগামী ১০টার ট্রেনে উঠতে বলে অপহরণকারীরা। এরপর জেলার পীরগঞ্জের সেনুয়া এলাকায় চলন্ত ট্রেন থেকে ২৫ লাখ টাকার ব্যাগটি বাইরে ফেলে দিতে বলে চক্রটি। মিলনের জন্য দুই সেট পোশাকসহ ২৫ লাখ টাকা ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ১০ মিনিট পর টাকা পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অপহরণকারী চক্র। এরপর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে অপহৃত মিলনকে পাওয়া যাবে বলে তথ্য দেয় চক্রটি। কিন্তু স্টেশনে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে।

ঢাকা/হিমেল/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা ও চাচাকে পিটিয়ে জখম
  • পিরোজপুরে সাংবাদিকের ছেলেসহ দুই স্কুলছাত্রকে অপহরণ, টাকা দিয়ে মুক্ত
  • ২৫ লাখ মুক্তিপণ দিলেও ছেলে ফেরেনি, মানববন্ধনে পরিবারের আকুতি
  • পাকিস্তানে ট্রেন অপহরণে জড়িত কারা এই সশস্ত্র যোদ্ধা
  • পাকিস্তানে ট্রেন অপহরণে জড়িত কারা এই সশস্ত্র যোদ্ধারা
  • চাঁদপুরে শিশু অপহরণের সময় জনতার হাতে আটক ১
  • ‘বাবাকে বলেছিলাম মামলা করে বিচার পাব না, এখন বাবাকেই হারালাম’
  • স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা, আসামি ছাত্রদল নেতাসহ ২