মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে থেমে থাকা গাংচিল পরিবহন নামের একটি বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট আগুন নেভালেও দগ্ধ হয়ে এক কিশোর নিহত হয়েছে। নিহত যাহাবির মিয়া (১৪) বাসে ঘুমিয়ে ছিল। সে পুড়ে যাওয়া বাসটির চালকের সহকারী।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টঙ্গিবাড়ী লৌহজং সড়কের বালিগাঁও বাজার সেতুতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত যাহাবির লৌহজং উপজেলা পালগাও গ্রামের সোহেল মিয়ার ছেলে।

তবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো.

শফিকুল ইসলাম, রাত আড়াইটার দিকে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে লৌহজং ও টঙ্গিবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিটের প্রচেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। বাসের ভেতর নিহত হেলপার ঘুমিয়েছিল, তার পুরো শরীর দগ্ধ হয়। বাসটিতে কোনো বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল না। সাধারণত বাসের চালক-হেলপার বাসে কয়েল জ্বালিয়ে ঘুমায়। তবে কেউ আগুন দিয়েছে কি না তার সঠিক কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত চলছে।

টঙ্গিবাড়ীত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জ্বলন্ত মশার কয়েল মোবাইলের সংস্পর্শে এলে মোবাইল বিস্ফোরণ ঘটে বাসে আগুন লাগে। দুর্ঘটনায় বাসে ঘুমন্ত চালকের সহকারী নিহত হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গণতান্ত্রিক উত্তরণের স্বার্থে সংলাপ চালিয়ে যেতে হবে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক উত্তরণের এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। ৫ আগস্ট–পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য যুগপৎভাবে সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ সামনে এনেছে। তাই জটিলতা আছে গণতান্ত্রিক উত্তরণের। এমন এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের স্বার্থে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নাগরিক সমাজের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে। আর সংলাপ শুধু আলোচনার স্বার্থে নয়। নিজেদের মধ্যে সংলাপ হতে হবে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশ নিয়ে এ প্রত্যাশার কথা বলেছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত নাগরিক সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা খোলাখুলিভাবে বাংলাদেশের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় ঢাকায় জাতিসংঘের দপ্তরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সম্ভাবনা এবং উদ্বেগ নিয়ে তাঁরা কথা বলেছেন। অপতথ্য আর বিভ্রান্তিকর তথ্যের দৌরাত্ম্য কীভাবে বাংলাদেশের জন্য বিরাট প্রশ্নচিহ্ন ছুড়ে দিয়েছে, সে বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য জুলাই-আগস্টে রক্ত দেওয়ার পরও শ্রমিকদের অধিকারের জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে।

আলোচনায় এ বিষয়ও এসেছে যে দীর্ঘদিনের দুঃশাসনের ফলে কাঠামোগত পরিবর্তন হলেও সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে নারী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের জনগণের এসব অংশের লোকজনের ঝুঁকি বেড়ে গেছে।

আন্তোনিও গুতেরেস আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি জটিল। তবে ব্যবসা, বিনিয়োগের জন্য নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে। তবু বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতির কিছু বিষয়ে তাঁর আরও জানা প্রয়োজন। বিদ্যমান পরিস্থিতি যে জটিল, তিনি এবার বাংলাদেশ সফরে এসে মতবিনিময়ের পর বুঝেছেন। তাই তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে।

আলোচনায় বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা যারা বাংলাদেশে এসেছে, তাদের মধ্যে সংখ্যাগুরু মুসলমান। কিন্তু এর মধ্যে সংখ্যায় অল্প হলেও বৌদ্ধ এবং হিন্দু রোহিঙ্গাও রয়েছে, যারা মিয়ানমার ত্যাগ করেছে। তাদের মানবাধিকারের বিষয়ও যেন বিবেচনায় নেওয়া হয়।

একজন আলোচক বলেন, এখন সংবিধান সংস্কার কমিশন থেকে যেসব সুপারিশ এসেছে, সেগুলোতে যথাযথভাবে বহুমাত্রিক দৃষ্টির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। তাই আদিবাসী ও অনেক সংখ্যালঘু নাগরিকদের ভয় হচ্ছে যে অদূর ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় সংবিধানে আবারও এক ভাষার, এক সংস্কৃতির এবং এক ধর্মের ভাবধারা প্রতিফলিত হতে যাচ্ছে।

নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নাসরিন হক, তাসনীম সিদ্দিকী, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়, শহিদুল আলম, কল্পনা আক্তার, আয়েশা কবীর, কল্পনা আক্তার প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ