মঙ্গলবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন যান বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের রুমে। ১৫ মিনিট পর বের হওয়া সাবিনার কাছে আলোচনার বিষয়বস্তু জানতে চাইলে তাঁর উত্তর, ‘অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়েছে।’
প্রসঙ্গ যে এখন ১৮ নারী ফুটবলারের কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, তা অনুমেয়। যদিও সাবিনার সঙ্গে আলোচনার বিষয়টি ব্যক্তিগত পর্যায় বলে এড়িয়ে গেছেন সভাপতি তাবিথ। তবে বাফুফের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নারী ফুটবলারদের চলমান আন্দোলনের সময় মিডিয়ার সঙ্গে তাদের কথাগুলো ভালোভাবে দেখছে না ফেডারেশন। সেই বিষয়ে সতর্ক করতেই সাবিনাকে তলব। এর বাইরে অনুশীলনে ফেরার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ক্যাম্পে থাকা ৩৬ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর বিদ্রোহীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কঠোর মনোভাব থেকে আগের চেয়ে মেয়েরা নমনীয় হয়েছেন বলে গতকাল সমকালকে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারী ফুটবল দলের এক কোচিং স্টাফ, ‘ওদের আমরা বুঝিয়েছি। দিন শেষে তারা নিজেরাই ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যতটুকু বুঝতে পারলাম, তারা আগের চেয়ে নমনীয়।’
দুই সপ্তাহ গড়িয়েছে কোচ পিটার বাটলারের ডাকে অনুশীলনে ফেরেননি বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অনুরোধেও সায় মেলেনি সাবিনা খাতুনদের কাছ থেকে। দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানও এর পর চলে যান হার্ডলাইনে। সবার ধারণা ছিল, দেশের বাইরে যাওয়ার আগে নারী ফুটবলে চলমান সংকট দূর করবেন তাবিথ। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা দেখা যায়নি।
বিষয়টি জানতে চাইলে বাফুফে সভাপতি তাবিথ গতকাল সমকালের কাছে এভাবে ব্যাখ্যা দেন, ‘আমি মনে করি, প্রশ্নটি কিছুটা প্রভাবিত করার মতো। আমি যেখানেই থাকি বা যে সময়ই হোক না কেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং সমাধান খুঁজে বের করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে তাঁর উত্তর, ‘আমাদের আলোচনা সব সময় ব্যক্তিগত থাকে। তাই আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
৩৬ ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করা বাফুফে সভাপতি আশাবাদী, আন্দোলনরত খেলোয়াড়রাও অনুশীলনে যোগ দেবেন, ‘গত বছর যেখানে ৩০ জনের চুক্তি হয়েছিল, সেখানে এবার আমাদের ৫৫ জনের চুক্তি প্রক্রিয়াধীন আছে। ব্যক্তিগতভাবে ফুটবলাররা তাদের পেশাদারিত্বের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং ফেডারেশনের আশ্বাসে অনুশীলনে যোগ দেবে। তারা পেশাদার খেলোয়াড় এবং ফেডারেশনও তাদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রনেতাকে ৪৭ দিন গুম করে রাখার মামলায় চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান সোহায়েলকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ
আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুম করার অভিযোগে নতুন একটি মামলায় (মিস কেস) চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েলকে আসামি করা হয়েছে। তাঁকে এই মামলায় আগামী ১৮ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালে আজকে জনৈক গোলাম মোর্তোজা নামের একজন ছাত্রনেতাকে গুম করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। সেই মামলার একমাত্র আসামি করা হয়েছে নৌবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো মোহাম্মদ সোহায়েলকে। তিনি একসময় র্যাবে কর্মরত ছিলেন।
শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, জনৈক গোলাম মোর্তোজা নামের একজন ছাত্রনেতাকে র্যাব ৪৭ দিন গুম করে রাখা হয়। তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদ সোহায়েল বর্তমানে ডিএমপির দুটি মামলায় গ্রেপ্তার আছেন।
গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মোহাম্মদ সোহায়েলকে নৌবাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্য মামলায় ৩ পুলিশ কারাগারেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সাভারের আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
তাঁরা হলেন সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।