অপারেশন ডেভিল হান্টে আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি
Published: 12th, February 2025 GMT
অপারেশন ডেভিল হান্টে আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি, জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, “অভিযানে যে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার আশা করেছিলাম, সে পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। তবে, আস্তে আস্তে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে।”
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে গাজীপুরের সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৪৫তম জাতীয় সমাবেশ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আনসার বাহিনীর কার্যক্রমের প্রশংসা করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “আনসার সদস্যদের যেসব দাবি যৌক্তিক তা গুরুত্ব দিয়ে মানা হবে। তাদের কোনো অযৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া হবে না।”
আরো পড়ুন:
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক ১৫ ফেব্রুয়ারি
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ’ গঠনের ডাক প্রধান উপদেষ্টার
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা আমি এখনো জানি না।”
কতদিন অপারেশন ডেভিল হান্ট চলবে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, “যতদিন পর্যন্ত ডেভিলরা থাকবে।”
এর আগে আনসার ও ভিডিপি একাডেমির দরবার হলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ২০২৪ সালের আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে বাহিনীর সদস্যরা থানাসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দেশের ক্রান্তিকালে সড়ক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে এ বাহিনীর সদস্যরা শতভাগ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন।”
তিনি বলেন, “দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ১৬টি আনসার ব্যাটালিয়ন সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬ হাজার আনসান ব্যাটালিয়ন সদস্য এবং ১৩ হাজার হিল আনসার ও হিল ভিডিপি সদস্য মোতায়েন রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, কূটনৈতিক মিশন এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠানে এই বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। বর্তমানে ৫১ হাজার ৬৬৭ জন সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্য সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ৫ হাজার ৭৫৭টি স্থাপনায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। বাহিনীর ৩৯টি পুরুষ আনসার ব্যাটালিয়ন, দুইটি মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন এবং একটি বিশেষ আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন (এজিবি) রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন রয়েছে।
অনুষ্ঠান সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং আনসার বাহিনীর বিভিন্ন পদবীর কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য ভালো কাজের স্বীকৃতির জন্য ১৫৬ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সদস্যদের আনসার ও ভিডিপির বিভিন্ন পদকে ভূষিত করা হয়। পরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কুটির শিল্প প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট আনস র ও উপদ ষ ট আনস র ব সরক র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকার ভুল সময়ে ভুল নীতি নিচ্ছে: মুস্তফা কে মুজেরি
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ভুল সময়ে ভুল নীতি নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস পূর্ণ হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার মনে হয়, এ সময়ে অর্থনীতিতে সফলতা নেই বললেই চলে। আমাদের মৌলিক সমস্যা যেমন উচ্চ মূল্যস্ফীতি অথবা প্রবৃদ্ধির ধীরগতির কারণে অর্থনীতি অনেকটাই স্থবির হয়ে গেছে। অন্যান্য যেসব সমস্যা আছে সেখানেও খুব একটা সফলতা নেই। ফলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।’
মুস্তফা কে মুজেরি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের নেওয়া অর্থনৈতিক নীতিগুলোর একটা সাধারণ ধরন রয়েছে। সেটা হচ্ছে, ভুল সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া। জানি না, সেটি কেন হচ্ছে। তার একটা বড় উদাহরণ, অর্থবছরের মাঝপথে ভ্যাটের হার বাড়ানো। এটা একটা ভুল সিদ্ধান্ত, ভুল সময়ে নেওয়া হয়েছে। তার পরিণতি আগামী দিনগুলোতে ভালো হবে তা কিন্তু নয়।’
‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এ কথাগুলো বলেন অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি। নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ ২৪ ডটকমের আয়োজনে এই গোলটেবিল বৈঠক আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানের এমসিসিআই সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
অর্থনীতিবিদ মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে মুদ্রানীতি এককভাবে কোনো ফলাফল আনতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার ১০ শতাংশে উঠিয়ে রেখেছে। এটি মূল্যস্ফীতিতে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না। মূল্যস্ফীতি তার নিজের গতিতে চলছে। এতে বরং দেশের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে। ব্যাংকঋণের সুদের হার বেড়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। এটি ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে।’
বিআইডিএসের সাবেক এই মহাপরিচালক বলেন, অর্থনীতিতে যেসব নীতি নেওয়া হচ্ছে সেগুলো একটির সঙ্গে আরেকটির সম্পৃক্ততা নেই। খুব চিন্তাভাবনা করে নেওয়া হচ্ছে না। হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যেমন ভ্যাটের হার বৃদ্ধি। এটা একটা হঠাৎ সিদ্ধান্ত। এটা করার পেছনে আইএমএফের রাজস্ব বাড়ানোর ঋণের শর্ত ছিল। রাজস্ব বাড়ানোর সহজ উপায় কী? আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়ের যাঁরা আছেন, তাঁরা মনে করেছেন, সবচেয়ে সহজ উপায় ভ্যাট বাড়িয়ে দিই। তাহলেই ১২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব বাড়বে। তিনি আরও বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে, সেই আশির দশক থেকে আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক যেসব প্রেসক্রিপশন দিয়েছে সেগুলো কোনো কাজ করেনি। সবগুলো ব্যর্থ হয়েছে। এবারও ব্যর্থ হতে যাচ্ছে।
গোলটেবিল আলোচনায় কথা বলছেন প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী।