মুন্সীগঞ্জে নিখোঁজ স্কুলছাত্রের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভের পর থানায় ভাঙচুর
Published: 12th, February 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে নিখোঁজ স্কুলছাত্র রোমান শেখের (১৫) সন্ধানের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন বিক্ষোভে রূপ নেয়। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা সিরাজদীখান থানায় হামলা চালিয়ে দরজা-জানালা, আসবাবপত্র ও ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
বুধবার বেলা ১১টায় সিরাজদীখান উপজেলা মোড়ে স্থানীয়দের ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা অংশ নেন।
নিখোঁজ রোমান শেখ সিরাজদীখান উপজেলার থৈরগাঁও গ্রামের মিরাজ শেখের ছেলে। সে একইসঙ্গে স্কুল ছাত্র ও অটোরিকশা চালক। গত ২১ জানুয়ারি থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধরা সিরাজদীখান থানায় গিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় থানার দরজা-জানালা, আসবাবপত্র ও পুলিশের পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
সিরাজদীখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ইমরান খান বলেন, মানববন্ধনের পরপরই থানায় অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এতে বেশ কয়েকটি গাড়ি ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানববন্ধনকারীরা তিন দিনের মধ্যে নিখোঁজ রোমানের সন্ধান দাবি করেছেন।
নিখোঁজের দীর্ঘদিন পার হলেও তার সন্ধান না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে নামে। মানববন্ধনকারীরা ৩ দিনের মধ্যে রোমানের সন্ধান চেয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন: টার্গেট চাঁদাবাজি
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নামে-বেনামের সংগঠন ও অধিকার আন্দোলন ব্যানারে চলছে সভা-সেমিনার ও মানববন্ধন। খোলা চোখে তাদের পেছনের উদ্দেশ্য পরিষ্কার বোঝা না গেলেও মূলত ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করেই এসব আন্দোলন বা সভা সেমিনার হচ্ছে। তাদের টার্গেটে পড়ে কেউ হচ্ছেন সর্বস্বান্ত; আবার কোনো কোনো ব্যবসায়ী বা কোম্পানির সুনাম প্রশ্নের মুখে ফেলে আদায় হচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকা। ‘অধিকার আদায়ের’ নামে বিভিন্ন ব্যানার ব্যবহার হচ্ছে হরদম। এ ধরনের ডজনখানেক প্রতিষ্ঠানের খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
`ক্ষতিগ্রস্ত ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদ’ এমনই এক ভুঁইফোড় সংগঠন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি চিঠি বিলি করা হয়। তাতে বলা হয়, ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হবে। তবে মজার বিষয় হলো চিঠির তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ থাকলেও গণমাধ্যমে পাঠানো হয় ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রেরকের ঠিকানা না থাকলেও বাইপাল, আশুলিয়া, সাভারের ঠিকানায় চিঠি ছেড়েছে এই নামসর্বস্ব সংগঠন।
বিষয়টি জানতে এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন প্রেরকের সঙ্গে। তিনি জানান, তাকে ওপর থেকে যেভাবে বলা হয়েছে তিনি সেটিই করেছেন। প্রশ্ন করা হয়, “আপনি চিঠির তারিখ উল্লেখ করেছেন ১০ ফেব্রুয়ারি, তাহলে ৮ ফেব্রুয়ারি অগ্রিম তারিখ দিয়ে কীভাবে স্বাক্ষর করলেন?”
জবাবে জাহাঙ্গীর আলম রাজীব নামের এই চিঠি প্রেরক বলেন, তাকে যেভাবে বলা হয়েছে তিনি সেটিই করেছেন, আর কিছু জানেন না।
যে সংগঠনের ব্যানারে চিঠি পাঠিয়েছেন, সেটির নিবন্ধন আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “না নেই।” তবে তাকে এই চিঠি পাঠানোর জন্য ঢাকা থেকে জনৈক এক ব্যক্তি পরামর্শ দিয়েছেন, তাই তিনি স্বাক্ষর করে সেটি পাঠিয়েছেন বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম রাজীব।
শুধু একটি বা দুটি নয়, জানা গেছে এমন ডজনখানেক সংগঠনের খোঁজ পেয়েছে গোয়েন্দারা। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজির স্বার্থে এসব সংগঠনের নাম ব্যবহার করে থাকে।
জাহাঙ্গীর আলম রাজীবের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি গত এক দশক ধরে সাভারের বাইপালে স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি বেক্সিমকো গ্রুপে কাজ করতেন। মূলত বেক্সিমকো গ্রুপের অর্থায়নে গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় রয়েছেন যুবলীগের এই কর্মী।
বাইপালের আরেক আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল চৌধুরী। ৫ আগস্টের পর তিনি এখন অধিকার আন্দোলনের নেতা বনে গেছেন। তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে লোক জড়ো করে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, টঙ্গী, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক আন্দোলনের নামে শিল্পকারখানায় অস্থিরতার নেপেথ্যওে একই ধরনরে ভুঁইফোড় সংগঠন জড়িত বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে।