শেখ হাসিনার নির্দেশেই নির্বিচারে গুলি
Published: 12th, February 2025 GMT
ক্ষমতায় টিকে থাকতে অভ্যুত্থানের সময় ছাত্র-জনতার ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও। নির্দেশনা পেয়ে আন্দোলন ঠেকাতে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে উঠেপড়ে লাগে নিরাপত্তা বাহিনীগুলো। জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
পাশাপাশি জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণও পেয়েছে দলটি। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে মারণান্ত্র দিয়ে গুলি চালানো, গ্রেপ্তার, আটক, নির্যাতন, চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের বাহিনীগুলো। এসব কারণে আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলছে জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনে র্যাব ও এনটিএমসিকে বিলুপ্ত করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে মানবাধিকার নিশ্চিত করতে অবাধ ও সত্যিকারের নির্বাচনের জন্য নিরাপদ ও সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতের পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘ।
শেখ হাসিনা সরকার বিদায় নেওয়ার পর ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্যানুসন্ধান করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন। একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ দল বাংলাদেশে এসে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করে। তবে চাহিদা অনুযায়ী সম্পূর্ণ তথ্য পায়নি তথ্যানুসন্ধান দল। আজ বুধবার প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হতে যাচ্ছে। প্রকাশের আগেই প্রতিবেদনের অনুলিপি হাতে পেয়েছে সমকাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ, আধাসামরিক, সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর শীর্ষ কর্তার সমন্বয়ে গঠিত ‘কোর কমিটি’র সঙ্গে ২০ জুলাই থেকে নিয়মিত বৈঠক করতেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আন্দোলন দমাতে নানা পরামর্শ, বাহিনী মোতায়েনসহ অন্যান্য নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে দিত কোর কমিটি। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল। মধ্য জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশের বিশেষ শাখা, ডিজিএফআই ও এনএসআইর প্রধানদের কাছ থেকে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী সরাসরি প্রতিবেদন পেতেন। ২১ জুলাইয়ের প্রতিবেদনে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের বিষয়ে শেখ হাসিনাকে সাবধান করা হয়। একই ধরনের উদ্বেগের কথা আগস্টের শুরুতেও তাঁকে জানানো হয়েছিল। ২৯ জুলাই মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে আন্দোলনের আদ্যোপান্ত প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরা হয়। আর আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টারা সরাসরি ও টেলিফোনে নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি অভিযান পর্যবেক্ষণ করতেন। প্রতিবেদনে যাত্রাবাড়ীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাঠ পরিদর্শনের বর্ণনা তুলে ধরা হয়, যেখানে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বলতে শোনা যায়, ‘একজনকে মারলেও বাকিরা যায় না।’
সরকারের কিছু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তথ্য অনুসন্ধান দলের কাছে দাবি করেছেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইনের মধ্যে থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে বলপ্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাহিনীগুলো নিজ থেকেই অতিরিক্ত বল দেখিয়েছে। তবে এ তথ্যের সত্যতা পায়নি জাতিসংঘের দলটি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো ঢাকা শহরসহ পুরো দেশে একই ধরনের সমন্বিত অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে। যখন এ ধরনের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, তখন তা সত্যিকারের জবাবদিহি ও তদন্তের দাবি রাখে। ঘটনার সময় রাজনৈতিক শীর্ষ নেতারাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক তথ্য মাঠ থেকে পেয়েছেন। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে শেখ হাসিনাসহ অন্য কর্মকর্তারা তা গোপন করার পাশাপাশি আন্দোলনকারী ও বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপান।
জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের তথ্যের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা অতিরিক্ত বলপ্রয়োগে সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন। ১৮ জুলাই কোর কমিটির বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজিবিকে আন্দোলনকারীদের ওপর আরও মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন। এ ছাড়া আরেকটি কোর কমিটির বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে আন্দোলনকারীদের সরাতে বেআইনি মারণাস্ত্র ব্যবহারের সবক দেন। ১৯ জুলাই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে খোদ শেখ হাসিনা আন্দোলনের সমন্বয়কদের গ্রেপ্তার করে, মেরে ফেলে, লাশ গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার অনুযায়ী শেখ হাসিনা ছাত্রনেতাদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার করতে অনুমোদন দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার মাঠে সেনাবাহিনী নামিয়েছিল অন্য বাহিনীর মনোবল বাড়াতে। অন্য বাহিনী যখন নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করছিল, তখন তারা তাদের সুরক্ষা দেয়নি।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আওয়ামী লীগসহ মাঠে থাকা সব বাহিনী বলপ্রয়োগ করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু পুলিশ কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেনাবাহিনী, র্যাব, ডিজিএফআই বা এনএসআইতে সে সময় কর্মরতদের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৪৫৮ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। ৩৫ পুলিশ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ১৬৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিজিবি তদন্ত করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মধ্যম পর্যায়ের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। র্যাব তার কর্মকর্তাদের মূল বাহিনীতে ফেরত পাঠিয়েছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি ফৌজদারি ব্যবস্থা। এমনকি ডিজিএফআই, আনসার ও এনএসআই কোনো তদন্ত বা জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা ও তথ্য সংগ্রহ করেছে। সে অনুযায়ী পূর্ববর্তী সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা একত্রে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে পদ্ধতিগতভাবে শতাধিক বিচারবহির্ভূত হত্যা, অত্যাধিক বলপ্রয়োগের মাধ্যমে হাজারো আন্দোলনকারীকে গুরুতর আহত করা, নির্বিচারে আটকে রাখতে স্বেচ্ছাচারিতা, নির্যাতনসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল। আর এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন আন্দোলনকারী ও বিরোধী মত দমনের কৌশল হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত দিকনির্দেশনায় হয়েছে।
প্রতিবেদনে ৫ জুন হাইকোর্টের কোটা সংস্কার নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়টি তুলে ধরা হয়। তবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাওয়ার জন্য শুধু কোটা ইস্যুটি নয়, জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্যে দীর্ঘদিনের সুশাসন, কলুষিত রাজনৈতিক চর্চা, বাড়তে থাকা অর্থনৈতিক বৈষম্য, সামাজিক ও সংস্কৃতির অধিকার থেকে বঞ্চিত করায় গভীর ক্ষোভ বিরাজ করছিল। ফলে ধর্ম ও পেশাজীবী নির্বিশেষে সত্যিকারের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সংস্কারের উদ্দেশ্যে আন্দোলনে নামা হাজারো বাংলাদেশির মধ্যে নারী-শিশুরাও অংশ নেয়।
আন্দোলনকারী ও বিরোধী মত দমনে শুরু থেকে বলপ্রয়োগ বাড়াতে থাকে। আন্দোলন দমনে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবিকে মারণাস্ত্র, গুলিসহ সামরিক অস্ত্র ও শটগান দিয়ে মোতায়েন করা হয়। আকাশ ও মাটি দু’দিক থেকেই আন্দোলনকারীকে ভয়ভীতি ও দমন করা হয়। বাহিনীগুলোর গুলি থেকে বাঁচতে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা ছুড়ে মারে।
পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকলে এবং রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোর দমনপীড়নের জবাবে কিছু আন্দোলনকারী সহিংসতায় জড়ায়। তারা সরকারি ভবন, যানবাহন, অবকাঠামো ও পুলিশকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। ১৮ জুলাই থেকে সরকারি বাহিনীগুলোকে আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেয়। আর ১৯ জুলাই থেকে আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত বিজিবি, র্যাব ও পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে মারণাস্ত্র ব্যবহার করে। কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা খুব কাছ থেকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করে। এর পরও আন্দোলনকারীকে দমাতে না পেরে ২০ জুলাই থেকে সরকার কারফিউ দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। কিছু ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর সৈনিকরা কোনো প্রকার উস্কানি ছাড়াই আন্দোলনকারীর ওপর গুলি করে। কিছু সাক্ষীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নবীন সেনা কর্মকর্তারা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণকে প্রতিহত করেন।
আন্দোলনের সময় ডিজিএফআই, এনএসআই, এনটিএমসি, ডিবি, এসবি, সিটিটিসির মতো গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দোলনকারীর সহিংস দমনে সরাসরি জড়িত থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। গোয়েন্দা বাহিনীগুলো শিশুসহ নির্বিচারে আটক, গুম, নির্যাতন, তথ্য বের করা, স্বীকারোক্তি আদায়ের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসা পেতে বাধা, হাসপাতালে কর্মরত এবং ভর্তি থাকা আহতদের ভয়ভীতি দেখানোর মাধ্যমেও মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গণমাধ্যমকে পুরো সত্য প্রকাশে বাধা দিয়েছে। সেই সঙ্গে আন্দোলনকারীর পরিবার, আইনজীবীকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কোনো কর্মকর্তার জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসতে বিচার বিভাগ বা আইনজীবী পদক্ষেপ নেননি।
সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও অন্যান্য সূত্রের জবানবন্দির মাধ্যমে জাতিসংঘ এটি নিশ্চিত হয়েছে, রাজনৈতিক নেতৃত্ব সজ্ঞানে, সমন্বয় ও নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে পুরো পুলিশ বাহিনী, আধাসামরিক, সামরিক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর সহিংসতা ও নির্যাতন পরিচালনা করেছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমানভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন বলছে, ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়ে থাকতে পারে। এদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো সামরিক অস্ত্র ও শটগানের গুলিতে মারা যান। হাজারো ছাত্র-জনতা গুরুতর ও চিরতরে আহত হয়েছেন। ১১ হাজার ৭০০-এর বেশি মানুষকে র্যাব ও পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। নিহতের মধ্যে ১১৮ জনই শিশু। পুলিশসহ অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে টার্গেট কিলিং, ইচ্ছা করে পঙ্গু করা, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, অমানুষিক নির্যাতন এবং অন্যান্য বলপ্রয়োগ করেছে। আন্দোলনের শুরুতে নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের সদস্যরা নারী ও মেয়েদের ওপর হামলা করেছে– এগুলো যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ছিল। এগুলোকে প্রতিশোধমূলক সহিংসতা বলছে জাতিসংঘ। নিরস্ত্র নাগরিকের ওপর এসকেএস, টাইপ-৫৬ ও বিডি-০৮ বন্দুক দিয়ে ৭.
প্রতিবেদনে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ সংশোধনের পরামর্শ দেওয়া হয়। সাংবাদিক, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা বা মানবাধিকার কর্মীকে যাতে অবাধে গ্রেপ্তার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতে মত দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলসহ নাগরিক সমাজের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর অবৈধ নজরদারি এখনই বন্ধ করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
টেলিকমিউনিকেশন আইনের অস্পষ্ট ধারা বাতিল করতে বলা হয়েছে। দুর্নীতিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী আইনের যথাযথ প্রয়োগের পরামর্শ এসেছে প্রতিবেদনে। পুলিশের আইন সংশোধনের পাশাপাশি বাহিনীগুলোকে মানবাধিকার চর্চা ও শিক্ষার সুপারিশ দিয়েছে। পুলিশ কোন ক্ষেত্রে কতটুকু বলপ্রয়োগ করতে পারবে, তার মাত্রা নির্ধারণসহ সার্বিক সংস্কারে মত দেওয়া হয়েছে।
বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের সংস্কার করতে বলেছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশের আইনি কাঠামোর সংস্কারের কথাও বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে স্বাধীন ও পক্ষপাতহীন বিচার বিভাগ নিশ্চিতে সুপারিশ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে যথাযথ তহবিল ও পর্যাপ্ত জনবল দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া সর্বোচ্চ দণ্ড হিসেবে মৃত্যুদণ্ড বাতিলের সুপারিশ এবং বাজারে মজুতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ শ্রম আইন সংশোধনের মাধ্যমে শ্রমিকের সুরক্ষা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জুলাই-আগস্টে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন আরও স্বাধীন ও পক্ষপাতহীন তদন্তে মত দিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণহত য স ত র ব যবহ র গ র প ত র কর র ওপর গ ল র জন ত ক ক র কম ট ন র সময় তৎক ল ন র সমন ব ব যবস থ চ ত কর কর ত র আগস ট তদন ত সরক র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
এলআরবির ড্রামার রোমেলের নতুন ব্যান্ড
আইয়ুব বাচ্চু মৃত্যুর পর ৭ বছর চলছে। এরপর তাঁর গড়া দলটি আর নেই। ব্যান্ড এলআরবির কার্যক্রম বন্ধ। তবে তাঁর দলের সহযাত্রীরা নানাভাবে সংগীতচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ নিজের মতো করে গাইছেন। গানও বানাচ্ছেন। এর মধ্যে আজ বুধবার এলআরবির ড্রামার রোমেল জানালেন, তিনি একটি গানের দল তৈরি করেছেন। আইয়ুব বাচ্চুর চিন্তাচেতনাকে ধারণ করেই এই গানের দল নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। গানের দলের নাম দিয়েছেন রোমেল অ্যান্ড ফ্রেন্ডস।
নতুন কোনো গান প্রকাশ না করলেও রোমেল অ্যান্ড ফ্রেন্ডস তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। এরই মধ্যে দেশের কয়েকটি স্থানে এই দল নিয়ে স্টেজ শো করেছে। তবে গানের দলের উদ্যোক্তা রোমেল বললেন, ‘আমরা নতুন গান তৈরি করছি। ইচ্ছা আছে আগামী ঈদে নতুন গান প্রকাশের।’
আরও পড়ুননতুন গান নিয়ে এল নতুন এলআরবি১৮ অক্টোবর ২০২১আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে ব্যান্ড এলআরবি সদস্যরা, সবার বামে রোমেল