বইমেলা ২০২৫ এ অনার্য পাবলিকেশন্স লি. প্রকাশ করেছে এস এম জাহিদ হাসানের ভ্রমণ বিষয়ক বই ‘চলতি পথের বাঁকে’। এস এম জাহিদ হাসানের লেখায় উঠে এসেছে বাংলার সংস্কৃতি, গৌরবময় ঐতিহ্য আর বিশেষ ব্যক্তিত্বদের স্মৃতিধন্য সব স্থানের সর্বশেষ পরিস্থিতি। 

জাহ্নবী চৌধুরানীর সন্তোষ ভাসানীর গল্প বলে, আশি দুয়ারী বাড়িতে একজন মানুষও নেই!, বাড়ির নাম ‘উত্তর তরফ’, দিগন্ত বিস্তৃত মিঠামইন, এগারোসিন্দুর পাড়ে, ঈশা খাঁর জঙ্গলবাড়ি, চিত্র পাড়ে সুলতানের নাও— সহ মোট ২৮টি ভ্রমণগদ্য রয়েছে এ বইতে। 

এস এম জাহিদ হাসান বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতিই আমাদের পরিচয়। সংস্কৃতি, ঐতিহ্যই বলে দেয় আমরা কে, কোথায় ছিলাম, কোন দিকে যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি। আমার পিতা ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের একজন শিক্ষক ও সংস্কৃতি অনুরাগী মানুষ। শৈশবে তার মুখে বাংলাদেশের অনেক গুণী ব্যক্তিত্বের জীবনী সম্পর্কে জেনেছি। একটু বড় হয়ে বই পড়ে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী স্থান, স্থাপনা ও গুণী ব্যক্তিদের আরও বিশদে জানার চেষ্টা করেছি। যত জেনেছি তাদের প্রতি তত ভালোবাসা ও অনুরাগ জন্মেছে। কৈশোরে যুক্ত ছিলাম সংস্কৃতি সংগঠন ‘খেলাঘর’-এর সঙ্গে। এর ফলে সাংস্কৃতিক অনেক পুরোধা ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে কর্মজীবন শুরু করার পর থেকে কাজের সুবাদে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াতে হয়। চলার পথে যেখানেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ স্থানের খোঁজ পেয়েছি, সেখানেই ছুটে গিয়েছি দেখার জন্য। এই সব স্থাপনার সৌন্দর্য, গাম্ভীর্য আমাকে বিমোহিত করেছে। কিন্তু যখন দেখেছি অনেক স্থাপনা সংস্কারের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে। সেগুলো আমাকে ব্যথিত করেছে। ব্যক্তিগত ভালোলাগা, দায়বোধ আর পাঠককে জানানোর ইচ্ছা থেকে এইসব গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের স্মৃতিধন্য স্থান সম্পর্কে লিখতে শুরু করি।’’ 

আরো পড়ুন:

লেখককে ছুটতে হয় নতুন চিন্তার খোঁজে: ফজলুল কবিরী

বইমেলায় শফিক হাসান’র ভ্রমণগ্রন্থ ‘দেখি বাংলার মুখ’

লেখক আরও বলেন, ‘‘এ কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, যা দেখেছি তার সামন্যই লিখতে পেরেছি। বিষয়টি এরকম আকাশে জ্বলজ্বল করে জ্বলে থাকে অনেক বড় চাঁদ কিন্তু জানালা দিয়ে যেটুকু আলো আমার ঘরে পৌঁছায় সেটুকুই আমার। কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঐতিহ্য, স্থাপনা সম্পর্কে আমাদের দেখা সৌন্দর্য আর অনুভূতির আলোটুকু পাঠকের মনে ছড়িয়ে পড়ুক, এইটুকুই প্রত্যাশা। যাদের অনুসন্ধিৎসু মন তাদের এই বই ভালো লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’

চলতি পথের বাঁকে বইটির প্রচ্ছদ  এঁকেছেন ধ্রুব এষ।
বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৩০০ টাকা।
বইমেলায় স্টল নম্বর: ৩০৪, ৩০৫,৩০৬, ৩০৭

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বইম ল

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরের ১১ বছরের মেয়েটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশে সংবেদনশীলতার অভাব ছিল: ইউনিসেফের প্রতিনিধি

সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়া ১১ বছরের মেয়েটিকে নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সংবাদ পরিবেশনে সংবেদনশীলতার অভাব ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স। মেয়েটিকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশংসা করলেও পুরো পরিস্থিতি সামাল দেওয়া এবং উপস্থাপনের কিছু ক্ষেত্রে শিশু সুরক্ষা নীতি লঙ্ঘন হয়েছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, কোনো শিশু যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে, তখন সে নতুন কিছু শেখার সুযোগে ভরপুর এক জগতে প্রবেশ করে। এই জগতে নতুন সব সংযোগ তৈরি করার সম্ভাবনার পাশাপাশি অজানা বিপদের ঝুঁকিও থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশে একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে ১১ বছরের একটি মেয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে তাকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে উত্তরবঙ্গের একটি জেলা থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি দেশজুড়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠছে—কীভাবে এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে, শিশুরা সঠিক দিকনির্দেশনা পাচ্ছে কি না এবং শিশুদের সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট করা হচ্ছে কি না।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো আচরণ করবে, সেটা আশা করা ভুল। তাদের মস্তিষ্ক আবেগ, মনঃসামাজিক ও শারীরিক বিকাশের কাজে চলমান থাকে। তারা দুর্বল ও অসহায়। তাদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সমাজে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত সব বিষয় এখনো সুস্পষ্ট নয়। তবে এমন সংবেদনশীল ঘটনা কীভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে ভুক্তভোগীর মানসিক অভিঘাত থেকে বেরিয়ে আসা ও মর্যাদার বিষয়। ইউনিসেফ শিশুটিকে উদ্ধারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রচেষ্টার প্রশংসা করে। তবে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করে যেভাবে পুরো পরিস্থিতি সামাল দেওয়া ও উপস্থাপন করা হয়েছে, সে বিষয়ে। বিশেষ করে যেখানে শিশু সুরক্ষা নীতি লঙ্ঘন হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রেও সংবেদনশীলতার অভাব দেখা দিয়েছে।

ইউনিসেফের প্রতিনিধি বলেন, এই শিশুটিকে উদ্ধারের সময় যা যা ঘটেছে, তা গভীর উদ্বেগজনক। পুলিশের মাধ্যমে সুরক্ষিত ও বেষ্টিত থাকার পরিবর্তে তাকে ক্যামেরায় সবার সামনে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে, যা তার মানসিক অবস্থাকে আরও নাজুক করে তুলেছে। শিশু আইন ২০১৩-এ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা আছে, এ ধরনের ঘটনা কীভাবে সামাল দেওয়া উচিত। ধারা ৫৪ (১)–এ কন্যাশিশুদের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু প্রোটোকলের উল্লেখ রয়েছে। সেখানে বলা আছে, এমন পরিস্থিতিতে কন্যাশিশুদের একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে সংবেদনশীলভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করাতে হবে। এ সময় অবশ্যই শিশুটির আস্থাভাজন একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সহায়তার জন্য তার সঙ্গে থাকবেন। এ ছাড়া ধারা ৯১–এ আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুদের জন্য শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তাদের ভূমিকার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে শিশুটির সাক্ষাৎকার রেকর্ড করা হয়। এর চেয়েও ভয়ংকর বিষয় হলো, শিশুটির পরিচয় গোপন না করে সাক্ষাৎকারটির ফুটেজ তখনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা হয়, যা প্রমাণ করে যে আইন মানা হয়নি।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে এই অনৈতিক পোস্টগুলো অবিলম্বে সরিয়ে ফেলা উচিত ছিল। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো এই ভিডিওগুলো পরবর্তী সময়ে অনেক মূলধারার সংবাদমাধ্যমেও ব্যবহার করতে দেখা গেছে, যদিও এই সংবাদমাধ্যমগুলো এমন সংবেদনশীল ও নাজুক ঘটনা নিয়ে খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর পরিচয় ও অন্যান্য তথ্য গোপন রাখার আইন সম্পর্কে অবহিত। সংবাদমাধ্যম এমন বেশ কিছু ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ বারবার শেয়ার করেছে। এর চেয়েও ভয়ের বিষয় হচ্ছে সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের বর্ণনায় প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষকে শিশুটির ‘বয়ফ্রেন্ড বা প্রেমিক’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। এভাবে একটি বিপজ্জনক ও ভুল ব্যাখ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ‘আমাদের সবার পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত যে এই শিশুটি ভুক্তভোগী। তাকে আমাদের দোষারোপ করা বা তার ঘটনা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই। তার প্রয়োজন সুরক্ষা, গোপনীয়তা রক্ষা এবং নিজেকে সামলে নেওয়ার সুযোগ ও সহায়তা। সে নিতান্তই ১১ বছরের শিশু। সে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ক্ষেত্রে সচেতনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে মানসিকভাবে সক্ষম নয়। আর কোনো প্রাপ্তবয়স্কের কখনোই কোনো শিশুর বিশ্বাস, কৌতূহল বা দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাকে শোষণ করা উচিত নয়।’

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, ১১ বছর বয়সী শিশুটির এখন যা দরকার, তা হলো মানসিক ক্ষত থেকে সেরে ওঠার সময়, সুযোগ ও পরিবেশ। এটা তখনই সম্ভব যখন কর্তৃপক্ষ, সংবাদমাধ্যমসহ সবাই তার গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারকে সম্মান করবে। এমন একটি সমাজ গড়ে উঠুক, যেখানে প্রতিটি শিশু সুরক্ষিত থাকে, মূল্যায়িত হয়, সম্মানিত বোধ করে এবং ভয় বা ক্ষতি ছাড়াই বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ১১ বছরের শিশু ‘নিখোঁজ’, থানায় জিডিমোহাম্মদপুর থেকে ‘নিখোঁজ’ শিশুটির সন্ধান পেয়েছে পুলিশমোহাম্মদপুর থেকে ‘নিখোঁজ’ শিশুটি উদ্ধার হয়ে এখন র‍্যাবের হেফাজতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লেখককে ছুটতে হয় নতুন চিন্তার খোঁজে: ফজলুল কবিরী
  • যশোরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ
  • বগুড়ায় স্কুলছাত্র ফাহিম হত্যার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই আদালতে একজনের স্বীকারোক্তি
  • টাঙ্গাইলে আ. লীগের ২১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
  • সাবিনাদের চাপে রাখতেই কি বাকিদের সঙ্গে চুক্তি বাফুফের
  • বিজ্ঞানচর্চায় বাংলাদেশে নারীদের অংশগ্রহণ ও চ্যালেঞ্জ
  • টিসিবির ট্রাকে পণ্যের চেয়ে গ্রাহক বেশি
  • পেকুয়ায় পাইলিং ভেঙে নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরের ১১ বছরের মেয়েটিকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশে সংবেদনশীলতার অভাব ছিল: ইউনিসেফের প্রতিনিধি