ভারতের বর্তমান সরকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বলিউড অভিনেত্রী ও ভারতের সমাজবাদী পার্টির সংসদ সদস্য জয়া বচ্চন। মোদি সরকারের চলতি বছরের বাজেট নিয়ে রাজ্য সভায় এসব কথা বলেন অমিতাভ ঘরণী।

জয়া বচ্চন বলেন, “আপনারা একটি শিল্পকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করছেন। অন্যান্য সরকারও একই কাজ করছে। আপনারা আজ এটাকে অন্য এক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছেন। আপনি সিনেমা এবং বিনোদন শিল্পকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছেন। কারণ আপনি শুধুই নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য এগুলো ব্যবহার করেন।”

ভারতের বর্তমান সরকার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করতে চায়। এ তথ্য উল্লেখ করে জয়া বচ্চন বলেন, “এবার জিএসটি বাদ দিন, সমস্ত সিঙ্গেল স্ক্রিন (থিয়েটার) বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ সিনেমা হলে যাচ্ছেন না। কারণ সবকিছু অনেক ব্যয়বহুল হয়ে গিয়েছে। আপনি হয়ত এই শিল্পকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে চান। তবে এটাই একমাত্র শিল্প যা সমগ্র বিশ্বকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করে।”

আরো পড়ুন:

‘আমি রান্না করি আর রাজকুমার থালাবাসন ধুয়ে আমাকে সাহায্য করে’

চুম্বন দৃশ্যের শুটিংয়ের পর কেন কেঁদেছিলেন মাধুরী?

সরকারকে সিনেমা শিল্পের প্রতি দয়া করার অনুরোধ জানিয়ে জয়া বচ্চন বলেন, “আমি আমার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে বলছি, অডিও-ভিজ্যুয়াল শিল্পের পক্ষ থেকে এই সংসদের কাছে অনুরোধ করছি যে, অনুগ্রহ করে ওদের প্রতি দয়া করুন। ওদের উপর এই বোঝা চাপাবেন না। আপনি এই শিল্পকে হত্যা করার চেষ্টা করছেন। দয়া করে এটি করবেন না। এখন থেকে আপনি সিনেমাকেও টার্গেট করেছেন।”

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি তুলে ধরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে জয়া বচ্চন বলেন, “আমি অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি, এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য কিছু একটা করুন; দয়া করে কিছু ব্যবস্থা নিন।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ফ ল ম ইন ড স ট র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই’

রাজকী বেগমের চোখের সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। তাঁর ছেলেমেয়েদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহাজারি করতে করতে রাজকী বেগম বলছিলেন, ‘আমার তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, আমার স্বামী হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।’

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজকী বেগমের স্বামী হাসিম মোল্যা (৩৮)। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে হাসিম মোল্যার মরদেহ এসে পৌঁছায়। আসরের নামাজ পর জানাজা শেষে স্থানীয় বাগমারা কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়ার হামিদপুর ইউনিয়নের শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ঠান্ডু মোল্যা ও জনি মোল্যা পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৩ জন ও ২ পুলিশ সদস্য আহত হন৷ স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত জনি মোল্যা ও তাঁর ভাই হাসিম মোল্যাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিম মোল্যা মারা যান। ওই ঘটনায় সিরাজ মোল্যা ও আজিজার শেখ নামের দুজনকে ১টি একনলা বন্দুক, ২০টি গুলিসহ আটক করা হয়।

গতকাল বিকেলে শিলিমপুরে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার পরিবেশ থমথমে। নিহত ব্যক্তির প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানো হয়েছে। মরদেহ আসার খবরে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছেন হাসিম মোল্যাদের বাড়িতে। অঝোরে কাঁদছেন বৃদ্ধ মা জাহিদা বেগম। তাঁর পাশেই কাঁদছেন হাসিম মোল্যার স্ত্রী রাজকী বেগম।

রাজকী বেগমের অভিযোগ, বাড়ির পাশে তাঁর সামনেই প্রতিপক্ষের লোকজন স্বামী ও সন্তানকে কুপিয়েছিলেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী মারা গেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাজকী বেগম বলেন, ‘আমার সামনেই ওরা (প্রতিপক্ষ) স্বামীর মাথায় কোপ দেয়, হাত কেটে ফেলে। আমি কইছি, আর মারিস না, আমার কথা শুনল না। পাশেই আমার সন্তানরেও ওরা কোপাইয়ে ফেলাই থুইছে। ওই সময় আমার কেয়ামত হয়ে যাচ্ছে। আমি স্বামীর কাছে আসব, নাকি সন্তানের কাছে যাব। আমার ছেলের এক পায়ে তিনটে কোপ দেছে। আমি এসবের বিচার চাই।’

নিহত হাসিম মোল্যার বোন নাজনীন আক্তার বলেন, ‘প্রতিপক্ষ আমার এক ভাইয়ের হাত কেটে দেছে, ভাতিজাকে কুপিয়েছে। আমার আরেক ভাইকে খুন করিছে যারা, তাদের ফাঁসি চাই।’

এদিকে হাসিম মোল্যার মৃত্যুর পর প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের লোকজন এলাকায় না থাকায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

গতকাল রাত ১০টার দিকে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক। নিহত হাসিমের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি। তবে পুলিশকে মারধর এবং অস্ত্র, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ