সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে জ্যোতি ৭ দিনের রিমান্ডে
Published: 12th, February 2025 GMT
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান জ্যোতির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে ২০১৮ সালে এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এরশাদ আলীর বাড়িতে হামলা করে চাঁদাবাজি, লুটপাট, ক্ষয়ক্ষতি, গুম ও হত্যার হুমকির মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ধানমন্ডি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো.
গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানী উত্তরার একটি বাসা থেকে জ্যোতিকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। আশুলিয়া থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় ১৪ সেপ্টেম্বর শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ৪ জুলাই রাত থেকে ৫ জুলাই বেলা ১টা পর্যন্ত জ্যোতির নির্দেশে আসামিরা এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এরশাদ আলীর বাসায় হামলা চালায়। বাসা থেকে ৪০ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৫৫ লাখ টাকা, ৪৫ লাখ টাকার চাঁদা ও আগাম স্বাক্ষরিত দুটি চেক বই নিয়ে যায়। এর মোট পরিমাণ ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া আসবাবপত্র, সিসি ক্যামেরা ও প্রতিষ্ঠানে হামলার মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতি করে। পরে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর এরশাদ আলী ও তার পরিবারকে গুম ও হত্যার হুমকি দেয় মামলার চার নম্বর এজাহার নামীয় আসামি আসিব বিন আনোয়ার। এ ঘটনায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান জ্যোতিকে প্রধান আসামি করে ২১ জনের নামে ১১ ডিসেম্বর ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন এরশাদ আলী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক বুয়েট ভিসিসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় সাবেক উপাচার্য ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। গত রোববার বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী আল আরাফাত হোসেন এ মামলা করেন।
ঘটনার সময় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, হাসান সরোয়ার সৈকত, মিনহাজুল ইসলাম, নীলাদ্রি নিলয়, আকাশ দেবনাথ, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, রাউফুন রাজন ঝলক, রাফাত ইমতিয়াজ চৌধুরী, মেহেদি হাসান রবিন, ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না, জিয়া উদ্দিন রুবেল, অর্নব চক্রবর্তী সৌমিক, মেহেদি হাসান, সত্য প্রসাদ মজুমদারসহ ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ছাত্র কল্যাণ পরিচালক সত্য প্রসাদ মজুমদার পরবর্তীতে দুই মেয়াদে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন আর বুয়েট ছাত্রলীগের সেমসয়কার সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল বর্তমানে আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত।
এজাহারে বলা হয়েছে, বুয়েট ক্যাম্পাসের জিমনেসিয়ামের পেছনে ২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বিকেলে ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে যুক্ত থাকার কথা বলে বেধড়ক মারধর করেন মেহেদী হাসান রাসেলসহ ২০ থেকে ২৫ জন। এ সময় আল আরাফাত হোসেন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফিরলে আবার পেটাতে শুরু করে আসামিরা। এসময় মারধরকারীরা আল আরাফাত হোসেনকে এও বলেন, 'আর সময় পাবি না, কালিমা পড়ে নে।' পরেরবার জ্ঞান ফিরে আল আরাফাত নিজেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ট্রেচারে শোয়া অবস্থায় দেখতে পান।
এজাহারে বলা হয়, রাজশাহী নিউ ডিগ্রি কলেজে একসঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পড়া সহপাঠী হাসান সরোয়ার সৈকত সেদিন আল আরাফাত হোসেনকে স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান আর বলতে থাকেন, ‘তুই শিবির করতি, তুই শিবিরের মেসে থাকতি।’
মারধরের আগে ছাত্র কল্যাণ পরিচালক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার উপস্থিত হয়ে কী হয়েছে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান রাসেল বলেন, স্যার এগুলো ছোট সমস্যা আমরা মিটিয়ে নেব। সেসময় অপর শিক্ষক হুমায়ুন কবীর ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে অনুরোধ করেন যেন আল আরাফাত হোসেনকে তার সঙ্গে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি তা না শুনে তড়িঘড়ি করে চলে যান। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আল আরাফাতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন শুরু করেন।
ঘটনার সময় আল আরাফাত হোসেনের জুনিয়র আলি আম্মার মুয়াজ (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৬ ব্যাচ) এবং মুহাম্মাদ শামসুজ্জামান (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ২০১৬) প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলেও জানা গেছে।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. স্বপন মিয়া মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মুনসুরের কাছে মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি সমকালকে বলেন, বুয়েটে ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে। এর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।