যমুনা রেলসেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন মার্চে
Published: 12th, February 2025 GMT
পরীক্ষামূলক যাত্রা শেষে যমুনার বুকে রেলসেতুতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি এই সেতু দিয়ে পার হয়েছে।
এই রেলসেতু দিয়ে এখন থেকে নিয়মিত ট্রেন চলবে বলে জানিয়েছেন যমুনা রেল সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান। তিনি আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সকাল ১০টার দিকে সিল্কসিটি ট্রেনটি সেতু অতিক্রম করেছে। এই রুটে অন্য ট্রেনগুলোও এই সেতু দিয়ে চলাচল করবে।’
মাসউদুর রহমান জানান, রেলসেতুতে দুটি লাইন আছে। প্রথম পর্যায়ে একটি লাইন দিয়েই উভয় দিকে ট্রেন চলাচল করবে। আগামী ১৮ মার্চ রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। যোগাযোগ উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে থাকবেন। ওই দিন থেকে দুই লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। এই সেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়ের বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) গৌতম মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, এখন থেকে এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩৪টি ট্রেন চলাচল করবে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এই সেতুতে ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগের এক নতুন দুয়ার উন্মোচিত হলো।
আরও পড়ুনযমুনার বুকে রেলওয়ে সেতুতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু২৬ নভেম্বর ২০২৪১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ শুরু হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরাল ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়। ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর রেলসেতুরটির নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়
আরও পড়ুনযমুনা রেলসেতুতে সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন০৫ জানুয়ারি ২০২৫প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাইকা।প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশীয় উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। দেশের বৃহত্তম রেল সেতুটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই।
প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পাল্টে যমুনা রেল সেতু করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র লস ত ত প রকল প এই স ত দশম ক প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ হত্যা করা হয়েছে: জাতিসংঘ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এতে বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। এ সময় আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। আহতরা বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীসমূহের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুর সংখ্যা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
বুধবার (১২ ডিসেম্বর) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত অফিসে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
আরো পড়ুন:
গাজা নিয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা জাতিগত নিধনের সামিল: জাতিসংঘ
কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ৭০০ জনের মৃত্যু
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে যে, তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে জাতিসংঘ আরো বলেছে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো গত বছর ছাত্রদের বিক্ষোভের দমনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে।
বিক্ষোভ দমনে নৃশংসতা, পদ্ধতিগত নিপীড়নের তথ্য এবং গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচারের আহ্বানো হয়েছে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত এবং সমন্বিত কৌশল, যা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল।বিক্ষোভ দমনের কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা যে সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধও গঠন করতে পারে। জাতীয় নিরাময় এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা এবং ন্যায়বিচার অপরিহার্য।”
ঢাকা/ফিরোজ