চীনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ডিপসিক চ্যাটবট ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি সেগুলো সংরক্ষণ করছে। শুধু তা–ই নয়, সংগ্রহ করা ব্যক্তিগত তথ্যের মাধ্যমে ডিপসিকের নিজস্ব এআই মডেলকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এনআইএস)।

এক বিবৃতিতে এনআইএস জানিয়েছে, অন্য অনেক জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্মের তুলনায় ডিপসিক বেশ ব্যতিক্রম। এটি ব্যবহারকারীদের চ্যাট রেকর্ড সংরক্ষণ করে। এমনকি কি–বোর্ড ইনপুটের ধরন পর্যবেক্ষণ করতে পারে, যা কোনো ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি এটি চীনের প্রতিষ্ঠানের সার্ভারের সঙ্গেও সংযুক্ত হতে পারে।

আরও পড়ুনচীনের ডিপসিক এআই মডেল নিয়ে কেন এত আলোচনা২৮ জানুয়ারি ২০২৫

এনআইএসের তথ্যমতে, ডিপসিক ব্যবহারকারীদের তথ্য বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য চীনের সার্ভারে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। চীনের আইনের আওতায় দেশটির সরকার চাইলে এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। আর তাই ডিপসিকের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পদ্ধতি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

আরও পড়ুনচীনের ডিপসিক এআই ব্যবহার করবেন যেভাবে২৯ জানুয়ারি ২০২৫

সম্প্রতি আইফোন ও আইপ্যাডের জন্য তৈরি ডিপসিক চ্যাটবট অ্যাপে গুরুতর নিরাপত্তাত্রুটির সন্ধান পেয়েছে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান নাওসিকিউর। প্রতিষ্ঠানটির তথ্যমতে, ডিপসিকের আইওএস অ্যাপ কোনো ধরনের এনক্রিপশন ছাড়াই ব্যবহারকারী ও তাঁদের ব্যবহৃত যন্ত্রের বিভিন্ন তথ্য অনলাইনে আদান-প্রদান করে থাকে। এর ফলে নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছেন আইফোন ও আইপ্যাডে ডিপসিক চ্যাটবট ব্যবহারকারীরা।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

আরও পড়ুনতারকা বনে গেছেন ডিপসিকের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াং ওয়েনফেং০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে, নারীকে শিকল দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতন

বরগুনার আমতলীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে যাওয়ায় এক নারীকে (৩২) মারধর করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেছেন, ওই বাড়ির লোকজন তাঁকে শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেন। আহত ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তিন বছর আগে ওই নারীর সঙ্গে খালাতো দেবর আবুল কালাম মীরের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ ঘটনার জেরে গত মার্চ মাসে স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ওই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে। ওই তিন সন্তান তাদের দাদির কাছে থাকে। বিবাহবিচ্ছেদের পর ওই নারী আবুল কালাম মীরকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। তবে আবুল কালাম মীর রাজি হচ্ছিলেন না। গত রোববার সন্ধ্যায় ওই নারী কালামের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। ওই সময় কালাম বাড়িতে ছিল না। রাতে কালামের মা-ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা ওই নারীকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। তাঁর দুই হাত, দুই পা, বাহু, কোমরসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়।

খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছালাম সিকদার ও হাসনেহেনা বেগম তাঁকে উদ্ধার করে আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে গতকাল সোমবার তাঁকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী বলেন, ‘বিয়ের দাবিতে আবুল কালাম মীরের বাড়িতে অনশনে বসেছিলাম। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। আমাকে তিন ঘণ্টা নির্যাতন করেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে জানতে আবুল কালামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর বড় ভাই আবুল হোসেন মীর বলেন, ‘যে নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে, তিনি ও তাঁর স্বামী কালামের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। ওই টাকা যাতে শোধ করতে না হয়, সে জন্য তাঁরা প্রেমের সম্পর্কের নাটক সাজিয়েছেন। আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারও কোনো সম্পর্ক ছিল না।’

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ওই নারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাকা নেওয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁরা একটি নাটক সাজিয়েছেন। আমি তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’

আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা রাশেদ মাহমুদ রোকনুজ্জামান বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ