যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবশেষ শুল্ক আরোপ পরিকল্পনাকে ‘সম্পূর্ণরূপে অন্যায্য’ দাবি করেছে কানাডা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগের ‘দৃঢ় ও স্পষ্ট’ জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসংক্রান্ত (এআই) এক সম্মেলনে ট্রুডো এ কথা বলেন। পরে তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের জবাব নিশ্চিতভাবেই দৃঢ় ও স্পষ্ট হবে।’

ট্রাম্প তাঁর দেশে প্রবেশ করা সব ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। গত সোমবার তিনি এ নিয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। আগামী ১২ মার্চ থেকে ট্রাম্পের আরোপ করা ওই শুল্ক কার্যকর হবে।

যুক্তরাষ্ট্রে উভয় ধাতু রপ্তানিতে শীর্ষ দেশ কানাডা। ফলে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে তাদের ওপর। যদিও এ নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দেশের হাতে এখনো এক মাস সময় আছে।

গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে একের পর এক পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পকারখানা এবং চাকরির বাজার সুরক্ষিত করতে তিনি এটা করছেন।

কিন্তু অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যের দাম বেড়ে যাবে এবং এতে সাধারণ মার্কিনরা বিপদে পড়বেন।

শুল্ক আরোপ নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার মুখোমুখি দুই প্রতিবেশী দেশ। ট্রুডো বলেন, ‘নতুন শুল্ক সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল।’

আরও পড়ুনইস্পাত-অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ট্রাম্পের শুল্কারোপে বহুমুখী বাণিজ্যযুদ্ধের ঝুঁকি কতটা১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কানাডা থেকে প্রতিবছর প্রায় ৬০ লাখ টন ইস্পাত পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর কানাডা থেকে ৩০ লাখ টনের বেশি অ্যালুমিনিয়াম পণ্য আমদানি করে থাকে।

বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করতে কোনো কোম্পানি তার দেশের সরকারকে যে কর দেয়, সেটাকে শুল্ক বলে। অর্থাৎ ট্রাম্পের নতুন শুল্ক কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে কানাডা থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম পণ্য আমদানিতে সরকারকে বাড়তি কর দিতে হবে।

অর্থনীতিবিদেরা সতর্ক করে বলেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের জন্য পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন, পণ্য আমদানিতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানিকারকেরা স্থানীয় বাজারে দাম বাড়িয়ে দিতে পারেন।

আরও পড়ুনইস্পাত-অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫% শুল্ক আরোপে নির্বাহী আদেশে সই করলেন ট্রাম্প১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র আমদ ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতি, অস্ত্রের মুখে শ্রমিকদের জিম্মি করে লুট

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২০-২২ দুর্বৃত্ত আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১৮ শ্রমিককে মারধর পরে জিম্মি করে ব্যাটারি তৈরির সিসা, প্লেট, কানেক্টরসহ অন্তত ৫৫ লাখ টাকার সামগ্রী লুট করেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এসব সামগ্রী ট্রাকে করে নিয়ে গেছে তারা।

বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তাড়াশ-বারুহাঁস সড়কের পশ্চিম দিকে হেদার খালে ভাই ভাই ব্যাটারি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের মারধরে কারখানার শ্রমিক আব্দুল হান্নান, মোস্তাক হোসেন, শামীম হোসেনসহ অনন্ত আটজন আহত হয়েছেন। তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় কারখানার মালিক মো. শয়নুল ইসলাম লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

শয়নুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি বড় ট্রাকে ২০ থেকে ২২ জন কারখানায় আসে। তারা টিনের বেড়া ভেঙে কারখানায় ঢুকে আগ্নেয় ও দেশীয় অস্ত্রের মুখে শ্রমিক আব্দুল হান্নান, মোস্তাক, শামীমসহ ছয়জনকে জিম্মি করে। তারা বাধা দিলে মারধর করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। বিশ্রামাগারে ঘুমিয়ে থাকা আরও ১০-১২ শ্রমিককে জিম্মি করে লুটপাট শুরু করে।

প্রায় চার ঘণ্টায় তারা কারখানা থেকে তিন টন ব্যাটারি তৈরির সিসা, ৩৪০ টাকা কেজি মূল্যের ১ হাজার ২০০ কেজি কানেক্টর, ২৫০ টাকা কেজির ১৬ টন প্লেট, ৬৩ হাজার টাকার ৯টি পুরোনো ব্যাটারিসহ প্রায় ৫৫ লাখ টাকা মূল্যের মালপত্র লুট করে ট্রাকে করে চলে যায়। তারা চলে গেলে শ্রমিকরা একে অপরের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে পুলিশে খবর দেন।

তাড়াশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাজমুল কাদের বলেন, খবর পেয়ে দুই দফা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাই ভাই ব্যাটারি কারখানায় ডাকাতির সত্যতা পাওয়া গেছে। ডাকাতি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ