গাজীপুরে অপারেশন ডেভিল হান্ট অভিযানে জেলা ও নগর থেকে আরও ৪৮ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর থেকে ৪০ জন ও জেলা থেকে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর নগরের সদর থানার পুলিশ ৯ জনকে, বাসনে ৭ জন, কোনাবাড়িতে ৪ জন, গাছায় ৫ জন, পুবাইলে ৩, কাশিমপুরে ১, টঙ্গী পূর্বে ৩, টঙ্গী পশ্চিমে ৪ জনকে আটক করা হয়। এ ছাড়া পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিবি) ৪ জন ও জেলা পুলিশ ৫টি থানায় ৮ জনকে আটক করে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (বিশেষ শাখার) আলমগীর হোসেন জানান, মেট্রোপলিটন ৮টি থানায় অভিযান চালিয়ে নতুন করে ৪০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

পুলিশ সুপার চৌধুরী মো.

যাবের সাদেক বলেন, ডেভিল হান্ট অভিযান অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নতুন আরও ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন গাজীপুরে দিনভর বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। বিক্ষোভের মুখে দায়িত্বে অবহেলার কথা স্বীকার করে ক্ষমা চান মহানগর পুলিশ কমিশনার। প্রত্যাহার করা হয় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে।

আরও পড়ুন‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’: গাজীপুরে আটক আরও ৮১ জন১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এ ঘটনার পরদিন শনিবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের গাজীপুরের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ মোহিত বাদী হয়ে গাজীপুর সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় ২৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি আমজাদ হোসেন মোল্লা নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মী।

আরও পড়ুনঅপারেশন ডেভিল হান্টে আরও ৬০৭ জন গ্রেপ্তার, তিন দিনে গ্রেপ্তার দুই হাজারের বেশি১৪ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভৈরবে দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ২০

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-পুরুষসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে সিএনজি পাম্প, খাবার হোটেলসহ বেশ কয়েকটি দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

মঙ্গলবার রাত ৮টায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিলেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌর শহরের রমজান মিয়ার বাড়ি ও আড়াই ব্যাপারি বাড়ির যুবকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। পরে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে শফিক মিয়া (৫০), অনিক মিয়া (২১), মানিক মিয়া (৪৫), ভট্টু মিয়া (৩৫), আব্দুল রহিম (১৬), রোকেয়া বেগম (৪৫), সুজন (৩৪), অনিক মিয়া (১৬), দিনার (২৭), শ্রাবন (২১), সোহাগ (৪০) ও নাদিম মিয়া (৩০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

গুরুতর আহত শফিক মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া আহত আলমগীর মিয়া (৪০), কামাল মিয়া (৪৮), বিল্লাল মিয়া (৫০) ও মেহেদী (২৮) স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গুরুতর আহত মেহেদীকে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার আড়াই ব্যাপারি বাড়ির শফিক মিয়া সিলেট বাসস্ট্যান্ড এলাকার রমজান মিয়ার বাড়ি থেকে সজীব মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে দোকান ভাড়া দেন।

ভাড়ার মেয়াদ শেষ হলে সজীব মিয়ার চাচা ও ভাই নাদিম মিয়া নতুন করে ভাড়া দিতে বাধা দেন, যা নিয়ে প্রথমে বাকবিতণ্ডা হয়। শফিক মিয়া ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করলে তিনিও বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

রাত ৯টার দিকে দুই পক্ষই দা, বল্লম, ইটপাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালে সিএনজি পাম্প, দুটি খাবার হোটেল, দোকান ও বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।

সিএনজি পাম্প ম্যানেজার তুর্জয় মিয়া বলেন, আমরা পাম্পে বসে ছিলাম, হঠাৎ কিছু লোকজন এসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আমাদের কোনো দোষ ছিল না, কিন্তু আমিও ইটের আঘাতে আহত হয়েছি।

রমজান মিয়ার বাড়ির বাসিন্দা বিল্লাল মিয়া বলেন, আমরা দোকান ভাড়ার বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলাম। তখন শফিক মিয়া ও তার লোকজন এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

অন্যদিকে আড়াই ব্যাপারি বাড়ির অনিক মিয়া বলেন, আমার বাবা শালিসি দরবারে গিয়ে ঝগড়া থামাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কামাল মিয়া, অনিক মিয়া ও দিনার মিয়া আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমার বাবাকে কুপিয়ে আহত করা হয়।

ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দোকান ভাড়াকে কেন্দ্র করে এমন সহিংস ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ