Prothomalo:
2025-03-17@04:40:00 GMT

চোখের অন্য রকম কিছু সমস্যা

Published: 12th, February 2025 GMT

চোখে যে শুধু ছানি বা পাওয়ারের সমস্যাই হয়, তা নয়; চোখের পেশি ও স্নায়ুতে নানা রকম সমস্যার জন্যও কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। আজ এ রকমই কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা যাক:

ডাবল ভিশন

এক চোখে ডাবল ভিশন (দুটি দেখা) হলে প্রথমে দেখতে হবে, চোখে ছানি পড়েছে কি না। দুই চোখেও ডাবল ভিশন হতে পারে। চোখের এক বা একাধিক মাংসপেশির দুর্বলতা, কিছু বিশেষ ধরনের ব্রেইন টিউমার, কিছু ক্ষেত্রে পক্ষাঘাতের কারণে ডাবল ভিশন হতে পারে। এ ক্ষেত্রে অবিলম্বে চক্ষুরোগবিশেষজ্ঞ দেখাতে হবে।

চোখ কাঁপা

ক্লান্তি, শরীরে লবণের ঘাটতি ও কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এ সমস্যা হয়। আপনা–আপনি কয়েক দিনের মধ্যে সেরে যায়। ১০-১৫ দিন পরও সমস্যা থেকে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

চোখ ‘ঠিকরে বেরিয়ে’ আসা

এ রোগ হতে পারে থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে অথবা চোখের পেছনে বা অপটিক নার্ভে কোনো টিউমার হলে। এমনটি মনে হলে দ্রুত চক্ষুরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

বিড়ালচোখ

এ রোগে রোগীর চোখ অন্ধকারে বিড়ালের চোখের মতো জ্বলজ্বল করে। চোখ হয় আকারে বড়। শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।

চোখে আলোর ঝলকানি

চোখের সামনে থেকে থেকে আলোর ঝলক, কালো বিন্দু বা কালো ঝুলের মতো কিছু ঘুরে বেড়ায়। কারণগুলোর অন্যতম হলো রেটিনা ডিটাচমেন্ট।

চোখের মণিতে সাদা দাগ

কর্নিয়াল আলসার সেরে যাওয়ার পর অনেক সময় মণিতে সাদা দাগ থেকে যায়। চোখে আঘাত লাগলেও এ রকম হতে পারে। সাদা দাগ মণির একেবারে মাঝখানে হলে দৃষ্টিশক্তি থাকে না। একমাত্র কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করেই অবস্থা সামলানো যায়। সমাধানের পথ দুটি। এক, রঙিন কনট্যাক্ট লেন্স; দুই, উল্কি।

চশমা পরেও আবছা দেখা

ছানি বা চোখের অন্য কোনো অসুখে এমন হচ্ছে কি না, চিকিৎসককে দেখিয়ে নিশ্চিত হোন। চোখের অসুখ না থাকলে দৃষ্টিশক্তি কমার কারণ অপটিক নার্ভের সমস্যা। এ অবস্থায় পড়াশোনা করতে হলে ঘরে বেশি আলোর ব্যবস্থা করুন।

চোখে কম দেখায় এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা মাঝেমধ্যে এখানে–সেখানে পড়ে যান। এ জন্য সাবধান হতে হবে।

চোখের নিচে কালি

আঘাত লেগে চোখের চারপাশ কালশিটে হতে পারে। ঘুমের সমস্যায়ও চোখের নিচে কালি পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয়, সে জন্য সবুজ শাকসবজি, পানি বেশি পান করতে হবে। মন দুশ্চিন্তামুক্ত রাখুন। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি।

ডা.

মো. ছায়েদুল হক: চক্ষুরোগবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, আইডিয়াল আই কেয়ার সেন্টার, রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সমস য ড বল ভ

এছাড়াও পড়ুন:

‘তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, স্বামীর হত্যাকারীদের বিচার চাই’

রাজকী বেগমের চোখের সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। তাঁর ছেলেমেয়েদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহাজারি করতে করতে রাজকী বেগম বলছিলেন, ‘আমার তিনটে ছেলে-মেয়ে এতিম হয়ে গেছে, আমার স্বামী হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই।’

নড়াইলের কালিয়া উপজেলার শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত শনিবার সকালে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাজকী বেগমের স্বামী হাসিম মোল্যা (৩৮)। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার বিকেলে গ্রামের বাড়িতে হাসিম মোল্যার মরদেহ এসে পৌঁছায়। আসরের নামাজ পর জানাজা শেষে স্থানীয় বাগমারা কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়ার হামিদপুর ইউনিয়নের শিলিমপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শনিবার সকালে ঠান্ডু মোল্যা ও জনি মোল্যা পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের ১৩ জন ও ২ পুলিশ সদস্য আহত হন৷ স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে গুরুতর আহত জনি মোল্যা ও তাঁর ভাই হাসিম মোল্যাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিম মোল্যা মারা যান। ওই ঘটনায় সিরাজ মোল্যা ও আজিজার শেখ নামের দুজনকে ১টি একনলা বন্দুক, ২০টি গুলিসহ আটক করা হয়।

গতকাল বিকেলে শিলিমপুরে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার পরিবেশ থমথমে। নিহত ব্যক্তির প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর ও পোড়ানো হয়েছে। মরদেহ আসার খবরে আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছেন হাসিম মোল্যাদের বাড়িতে। অঝোরে কাঁদছেন বৃদ্ধ মা জাহিদা বেগম। তাঁর পাশেই কাঁদছেন হাসিম মোল্যার স্ত্রী রাজকী বেগম।

রাজকী বেগমের অভিযোগ, বাড়ির পাশে তাঁর সামনেই প্রতিপক্ষের লোকজন স্বামী ও সন্তানকে কুপিয়েছিলেন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী মারা গেছেন। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে রাজকী বেগম বলেন, ‘আমার সামনেই ওরা (প্রতিপক্ষ) স্বামীর মাথায় কোপ দেয়, হাত কেটে ফেলে। আমি কইছি, আর মারিস না, আমার কথা শুনল না। পাশেই আমার সন্তানরেও ওরা কোপাইয়ে ফেলাই থুইছে। ওই সময় আমার কেয়ামত হয়ে যাচ্ছে। আমি স্বামীর কাছে আসব, নাকি সন্তানের কাছে যাব। আমার ছেলের এক পায়ে তিনটে কোপ দেছে। আমি এসবের বিচার চাই।’

নিহত হাসিম মোল্যার বোন নাজনীন আক্তার বলেন, ‘প্রতিপক্ষ আমার এক ভাইয়ের হাত কেটে দেছে, ভাতিজাকে কুপিয়েছে। আমার আরেক ভাইকে খুন করিছে যারা, তাদের ফাঁসি চাই।’

এদিকে হাসিম মোল্যার মৃত্যুর পর প্রতিপক্ষ ঠান্ডু মোল্যা পক্ষের লোকজন এলাকায় না থাকায় তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

গতকাল রাত ১০টার দিকে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক। নিহত হাসিমের মরদেহ দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহত ব্যক্তির পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি। তবে পুলিশকে মারধর এবং অস্ত্র, গুলিসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ