তাইওয়ান প্রণালীতে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, ক্ষুব্ধ চীন
Published: 12th, February 2025 GMT
ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর, এই সপ্তাহে মার্কিন নৌবাহিনীর দুুটি জাহাজ স্পর্শকাতর তাইওয়ান প্রণালীর মধ্য দিয়ে যাত্রা করেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনী বিষয়টিকে রুটিন কার্যক্রমের অংশ বলে অভিহিত করলেও এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে চীন।তাইওয়ানকে চীনের নিজস্ব অঞ্চল হিসাবে দাবি করে আসা বেইজিংয়ের মতে, কৌশলগত জলপথটি চীনের।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর তাইওয়ান প্রণালীতে ট্রাম্প প্রশাসনের দুটি জাহাজ পাঠানোর ঘটনায় চীন বেশ ক্ষুব্ধ। এ ঘটনা চীনের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়েছে মনে করছে বেইজিং।
মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, আর্লে বার্ক-ক্লাস গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস রালফ জনসন এবং পাথফাইন্ডার-ক্লাস জরিপ জাহাজ ইউএসএনএস বাউডিচ ১০-১২ ফেব্রুয়ারি প্রণালীর উত্তর-দক্ষিণে ট্রানজিট করেছে।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের মুখপাত্র ম্যাথিউ কমার বলেছেন, “ট্রানজিটটি তাইওয়ান প্রণালীর একটি করিডোরের মধ্য দিয়ে হয়েছে, যা কোনো উপকূলীয় রাষ্ট্রের আঞ্চলিক সমুদ্রের বাইরে অবস্থিত। এই করিডোরের মধ্যে সব দেশ সমুদ্রে নৌচলাচল, আকাশপথে বিমান চলাচল এবং এই স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত সমুদ্রের অন্যান্য আন্তর্জাতিকভাবে বৈধ ব্যবহারের স্বাধীনতা ভোগ করে।”
চীনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, নজরদারি রাখার জন্য চীনা বাহিনী পাঠানো হয়েছে।
পিপলস লিবারেশন আর্মির ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এক বিবৃতিতে বলেছে, “মার্কিন পদক্ষেপ ভুল সংকেত পাঠায় এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ায়।”
চীন তাইওয়ানকে তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সমস্যা বলে মনে করে এবং এটি চীন-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের বাধা।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার মধ্যে বৈঠকের পর জারি করা এক বিবৃতিতে চীনের প্রতি ‘নেতিবাচক’ মনোভাব প্রকাশের জন্য জাপানের কাছে অভিযোগ করেছে চীন।
জাপানের ওই বিবৃতিতে ‘তাইওয়ান প্রণালী জুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার’ আহ্বান জানানো হয়েছে এবং ‘আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে তাইওয়ানের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের’ প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে।
বুধবার বেইজিংয়ে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, চীনের তাইওয়ান বিষয়ক অফিসের মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান বলেন, “তাইওয়ান দেশের জন্য ‘মূল স্বার্থ’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতার সঙ্গে কাজ করা উচিত।”
তিনি বলেন, “আমরা এর দৃঢ় বিরোধিতা করছি এবং কখনই কোনো বহিরাগত হস্তক্ষেপের অনুমতি দেব না। দেশের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য আমাদের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি, পূর্ণ আস্থা এবং ক্ষমতা রয়েছে।”
তাইওয়ান প্রণালীতে সর্বশেষ জনসমক্ষে স্বীকৃত মার্কিন নৌবাহিনীর মিশন ছিল নভেম্বরের শেষের দিকে, তখন একটি পি-৮এ পোসেইডন সামুদ্রিক টহল বিমান ওই অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়েছিল।
মার্কিন নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ সর্বশেষ অক্টোবরে প্রণালী দিয়ে যাত্রা করেছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছিল, যা একটি কানাডিয়ান যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে যৌথ মিশন ছিল।
তাইওয়ানকে চাপে রাখতে চীন প্রায় প্রতিদিনই এ অঞ্চলে সামরিক মিশন চালিয়ে থাকে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা দ্বীপের চারপাশে ৩০টি চীনা সামরিক বিমান এবং সাতটি নৌবাহিনীর জাহাজ চলাচল করতে দেখেছে।
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, কেবল তাইওয়ানের জনগণই তাদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৈধ নথি ছাড়া হজে গেলে মিলবে না থাকার জায়গা
এবারের হজ মৌসুমে হজযাত্রীদের নিয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। এ বছর হজের উদ্দেশে যেসব যাত্রী বৈধ নথি বা অনুমোদন ছাড়া সৌদিতে যাবেন, তাদের থাকার জায়গা না দিতে মক্কার সব হোটেল, মোটেল, রেস্টহাউস ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। সৌদি আরবের পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে। আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে নির্দেশনাটি কার্যকর হবে। খবর গালফ নিউজের।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা ও হজের পবিত্রতার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নির্দেশনার মেয়াদ শেষ হবে হজ সমাপ্ত হওয়ার পর। নির্দেশ পালন হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করতে মক্কার আবাসিক এলাকাগুলোতে নিয়মিত টহল দেবেন সৌদির আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
মক্কার হোটেল-মোটেল-রেস্টহাউসের মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের নতুন এই নিয়ম মেনে চলতে আদেশ দিয়েছে সরকার। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ না মানার প্রমাণ মিললে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে।
প্রতি বছর হজের মৌসুমে লাখ লাখ মুসল্লি সৌদিতে হজ করতে যান। তবে তাদের সবাই যে বৈধভাবে যান, তা নয়। অনেকেই প্রয়োজনীয় নথি ব্যতীত অবৈধভাবে সৌদিতে প্রবেশ করেন। তাদের একটি অংশ আবার স্থায়ীভাবে সেখানেই থেকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই নথিবিহীন অভিবাসীদের ব্যাপারে কঠোর নীতি নিয়েছে সৌদি সরকার। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যেসব ওমরাহযাত্রীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের ২৯ এপ্রিলের মধ্যে সৌদি ত্যাগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এবারের ভারত থেকে আরও ১০ হাজার যাত্রী হজে যেতে পারবেন। দেশটির সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি জানিয়েছে। এবারে ৫২ হাজারের বেশি ভারতীয় বেসরকারি ট্যুর অপারেটরের মাধ্যমে হজ পালনের জন্য বুকিং করেছেন। এর আগে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, বেসরকারিভাবে হজ পালনের উদ্দেশে যারা নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ২০ শতাংশ যাত্রীকে নিশ্চিত করা হবে। এর ফলে, প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ এবার হজে যেতে পারবেন না বলে শঙ্কা তৈরি হয়। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।