স্কুলের নাম ‘টেন মিনিট স্কুল’, এই স্কুলের দুই শিক্ষক আয়মান সাদিক আর মুনজেরিন শহিদ। তাদের দশ বছরের জানাশোনা। একজন আরেকজনের প্রেমে পড়েছেন কিনা বুঝে ওঠার আগেই অন্যরা বুঝে যায় তাদের প্রেম আছে, বাতাসে গুঞ্জন ছড়িয়ে যায়। তবে কি না বলেও প্রেম হয়?— হ্যাঁ এমন উদাহরণও আছে। আয়মান-মুনজেরিনের প্রেম আর বিয়ের গল্প অনেকটা সেই রকম। ভালেন্টাইন সপ্তাহে আজ জানবো তাদের প্রেম, বিয়ে আর সংসারের গল্প।

আয়মান সাদিকের জন্ম কুমিল্লায় ১৯৯২ সালে। বেড়ে ওঠা ঢাকায়। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে। আয়মান সাদিক বাংলাদেশের বৃহত্তম ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টেন মিনিট স্কুল-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। বাবা সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা। আয়মান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকেই টিউশন করাতে শুরু করেন। একের পর এক আয়মানের টিউশনির সংখ্যা বেড়েই চলছিল। এরপর আয়মান ভেবেছিলেন যে শিক্ষকতা পেশাতে আমি ভালো করতে পারব। সেই থেকেই পথ চলা শুরু আয়মান সাদিকের।

অন্যদিকে মুনজেরিন শহীদের জম্ম ১৯৯৬ সালে চট্রগ্রামে। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজিতে। উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনলাইনে জনপ্রিয় একজন ইংরেজি শিক্ষিকা তিনি। ছোটবেলায় তিনি হতে চেয়েছিলেন আর্কিটেক্ট। ভালো আঁকাআঁকি করতেন তিনি। পরিবার চেয়েছিলেন তিনি ডাক্তার হোক। কিন্তু তিনি হয়ে উঠেছেন ইংরেজি শিক্ষক।

আরো পড়ুন:

ফেসবুকে তুমুল প্রেম, প্রেমিককে দেখে অবাক প্রবাসীর স্ত্রী

আজ ‘প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরা দিবস’

আয়মান ও মুনজেরিনের প্রথম দেখা ২০১৪ সালে। আয়মান ও মুনজেরিনকে নিয়ে তার চারপাশ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব জায়গায় ছিলো গুঞ্জন। আয়মানের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তাইয়েবুর আয়ামানের মাকে জিজ্ঞেস করেন, আচ্ছা, ওর কি মুনজেরিনের সঙ্গে কিছু আছে? ওকে জিজ্ঞেস করো তো। আয়মানের বাবাকে এই কথা বলেছিলেন তার চাচা। এরপর আয়মানের মা সকালবেলা আয়মানকে জিজ্ঞেস করে, আচ্ছা, তোর আর মুনজেরিনের কি বিয়ের পরিকল্পনা আছে?’ শুনে আয়মান বলেছিলেন, ‘মন্দ বলোনি। খারাপ হয় না।’ বেশ কয়েকদিন পর আয়মান কোন একটা কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, এ সময় আয়মানের বাবা আয়মানকে ফোন করেন। ফোন ধরে আয়মানের চাচা বলেন, আচ্ছা, ১৯ জুলাই সেনাকুঞ্জ খালি আছে। আয়মান যেন আকাশ থেকে পড়লেন। তখনো আয়মান ভাবেনি আনুষ্ঠানিক বিয়ের কথা। এর ঠিক চার মাস পর ১৫ সেপ্টেম্বর  রাজধানীর ডিওএইচএসে মসজিদে বিয়ে সারেন আয়মান ও মুনজেরিন। ছোটবেলা থেকেই এই মসজিদে নামাজ পড়তেন আয়মান। এখানেই সাদামাটা পাঞ্জাবি পড়ে বিয়ে করেন তিনি। আয়মান বলেন, বিয়ের দিন আমার এক ফ্রেন্ডও আমার মতো পাঞ্জাবি পড়েছিলো (হাসি) এরপরদিন হলো গায়ে হলুদ। আর ২৩ সেপ্টেম্বর সেনাকুঞ্জে হয় বিবাহোত্তর সংবর্ধনা।

আয়মানকে বিয়ের কারণ ও দাম্পত্য সম্পর্কে নিয়ে মুনজেরিন বলেন,  ‘‘আরমান হচ্ছে এমন একজন যার টেম্পার কম, রাগ কম। অনেক ঠান্ডা মেজাজের। আমাদের পুরো রিলেশনশিপে কোন কিছু নিয়েই আয়মানের কোন ইগো কাজ করে না।  আয়মানের ভেতর ডমিনেট করে রাখার কোন টেন্ডেন্সই নেই। এসব কারণে আমাদের ফ্যামিলির লাইফটা অনেক বেশি পিসফুল। আমি অনেক লাকি ফিল করি। আমি আশা করি সময়ের সাথে সাথে এই জিনিসটা আমাদের দুইজনের ভেতর আরো বেশি থাকবে। আমি যদি খাবার দাবার প্রস্তুত করি আয়মান তাহলে সেগুলো আমাকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। আমরা দুইজন দুজনের লাইফ ইজি করার চেষ্টা করি।


বিয়ের ক্ষেত্রে আয়মানের কোন দিকটা বেশি টেনেছিল মুনজেরিনকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে মুনজেরিন বলেন, আমি কোনো দিন দেখিনি শত্রুরও অমঙ্গল চেয়েছে আয়মান। ও সব সময় সবার ভালো চায়। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে অন্যের পাশে থাকে। এটাই ওর প্রতি আমাকে দুর্বল করেছিল।

কীভাবে প্রেমে পড়লেন তারা? এমন প্রশ্নের উত্তরে আয়মান বলেন, আসলে তেমন কিছুই নয়। আমাদের ১০ বছরের জানাশোনা। একসঙ্গে টেন মিনিট স্কুল এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে নানা প্ল্যান নিয়ে প্রায়ই আমাদের আলাপ হয়। যা প্রেমের গুঞ্জন হয়ে ওঠে সবার কাছে। প্রেমের গুঞ্জন আমার বাবা, মায়ের কাছেও চলে যায়। একদিন বাবা আমার মায়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। 
 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র ন বল ন গ ঞ জন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি ও ই-ক্যাবে প্রশাসক, ১২০ দিন পরেও নির্বাচনের কোনো ঘোষণা নেই

দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা খাতের সবচেয়ে পুরোনো সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিতে (বিসিএস) ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ই-ক্যাব) প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আদেশে বলা হয়েছে, প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবে। তবে ১২০ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো কোনো নির্বাচনের ঘোষণা আসেনি। দুই সংগঠনই বলছে, সময় বাড়ানো হয়েছে।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০ আগস্ট বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) কার্যনির্বাহী কমিটির সব সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেন। এরপর ২ সেপ্টেম্বর এক তলবি সভার মাধ্যমে স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামকে অন্তর্বর্তীকালীন আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়। এ সভায় বিসিএসের বেশ কয়েকজন সাবেক সভাপতিসহ সদস্যদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সমিতির এ সিদ্ধান্ত অনুমোদনের জন্য পরিচালক, বাণিজ্য সংগঠনে (ডিটিও) পাঠানো হয়। তবে ডিটিও বিষয়টি অনুমোদন করেনি। পরে সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগের অফিস আদেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিসিএসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নাহিদ আফরোজকে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। এই প্রশাসকের দায়িত্ব ছিল ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু ডিসেম্বরের ২৪ তারিখে সময়সীমা অতিক্রম করলেও এখন পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

নাহিদ আফরোজকে আজ রোববার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি একটু বাইরে আছি, ৩০ মিনিট পরে ফোন দেন।’ এরপর ৩০ মিনিট পরে তাঁকে ফোন দিলে তিনি আর ফোন ধরেননি। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বিসিএসের সভা ডাকলেও সেটি স্থগিত করা হয়।

স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেক ভুতুড়ে সদস‍্য রয়েছেন, যাঁদের কোনো কাগজপত্র ঠিক নেই। সেগুলোকে আমরা বাদ দিতে বলেছি। কিন্তু সেটাও সম্ভব হয়নি। আমরা বলেছি, যেহেতু লোকবল কম, তাহলে বিসিএসের একটা সহায়ক কমিটি করে দিতে।’

এদিকে একই অবস্থা ই–ক্যাবেও। ই-ক্যাবের ২০২২-২৪ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির পদ থেকে শমী কায়সার পদত্যাগ করেন ১৩ আগস্ট। এরপর ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশে (ই-ক্যাব) সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সেলের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। গত বুধবার তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুতই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করব আশা করছি, আগামী রোববার ঘোষণা হতে পারে।’

১২০ দিন বেঁধে দেওয়ার পরেও কেন এত দেরি হলো, এই প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ সাঈদ আলী আরও বলেন, ‘এটা এক্সটেন্ড করা হয়েছে, মানে সময়টা বাড়ানো হয়েছে। আশা করছি কোনো জটিলতা না থাকলে রোববারই তফসিল ঘোষণা হবে।’

এ ব্যাপারে আজ রোববার আবার প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ই-ক্যাবের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ তবে বিস্তারিত তফসিল এখনো ঘােষণা করা হয়নি।

ই-ক্যাবের সদ্যবিদায়ী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন বলেন, একজন ব‍্যবসায়ীই একজন ব‍্যবসায়ীর পালস বুঝবেন। যেহেতু এটা বাণিজ্য সংগঠন, সেহেতু একটা নির্বাচনের মাধ্যমে তাঁদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সড়ক বিভাজকে ধাক্কার পর উল্টে গেল ট্রাক, মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
  • হাসির জাদুঘর ‘হাহা হাউস’
  • শিক্ষকের মার খেয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীর বিষপান, বাঁচাতে পারলেন না চিকিৎসকেরা
  • হামাসের জন্য নরকের সব দরজা খুলে দেওয়ার সময় এসেছে: ইসরায়েলের মন্ত্রী
  • রোহিত-কোহলিদের ভারতকে তিন দিনেই হারাত তাঁর দল, দাবি রানাতুঙ্গার
  • রাস্তার পাশে গাইছিলেন এড শিরান, এরপর...
  • বিসিএস পরীক্ষা–নিয়োগ দেড় বছরে শেষ করার সুপারিশ
  • কুঁড়ার তেল রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্কারোপ করল এনবিআর
  • বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি ও ই-ক্যাবে প্রশাসক, ১২০ দিন পরেও নির্বাচনের কোনো ঘোষণা নেই