ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শক বরখাস্ত
Published: 12th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) মহাপরিদর্শক পল মার্টিনকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইউএসএআইডির এক কর্মকর্তা গতকাল মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়, পল মার্টিনকে গতকালই বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের বিষয়টি তাঁকে ই–মেইলের মাধ্যমে জানানো হয়।
ইউএসএআইডির মহাপরিদর্শকের দপ্তর থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশের এক দিন পরই পল মার্টিনকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের নানা পদক্ষেপ ইউএসএআইডির সক্ষমতাকে পঙ্গু করে দিয়েছে। ফলে সংস্থাটি প্রায় ৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অব্যয়িত সহায়তার সঠিক তদারকি করতে পারছে না।
গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্ষমতায় বসেই তিনি ইউএসএআইডির ওপর খড়্গহস্ত হন। তিনি সংস্থাটি ভেঙে দিতে চান।
যুক্তরাষ্ট্র ইউএসএআইডির মাধ্যমেই মূলত বিদেশে তার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সংস্থাটির কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই বিভিন্ন দেশে কাজ করেন।
ট্রাম্পের পরিকল্পনা হলো, ইউএসএআইডির এই বিপুলসংখ্যক কর্মীর মধ্যে অপরিহার্য হিসেবে বিবেচিত মাত্র ৬১১ জনকে চাকরিতে বহাল রাখা হবে। আর ২ হাজার ২০০ কর্মীকে সবেতনে ছুটিতে পাঠানো হবে।
ট্রাম্প মনে করেন, ইউএসএআইডি দুর্নীতি ও জালিয়াতি করে। যদিও ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা আপাতত আটকে দিয়েছেন ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট আদালত।
আরও পড়ুনইউএসএআইডিকে ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা রুখতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইউএসএআইডিতে কাটছাঁট পদক্ষেপের একটা বড় অংশ তদারক করছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক। ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা এই ব্যবসায়ী যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্রকে সংকুচিত করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
আরও পড়ুনইউএসএআইডি বন্ধে তৎপর ট্রাম্প–মাস্ক: ‘এটি আমাদের শত্রুদের জন্য উপহার’০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনইউএসএআইডির কর্মীদের ছুটিতে পাঠানোর ট্রাম্পের পরিকল্পনা স্থগিত করলেন মার্কিন বিচারক০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউএসএআইড র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের সাক্ষাৎ, নির্বাচন–ডেভিল হান্টসহ নানা বিষয়ে আলোচনা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ও সংস্কারে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তা কামনা করেছেন। আজ মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি জ্যাকবসনের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ সহায়তা চেয়েছেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় এবং বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির কাজ স্থগিত করার বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। তাঁরা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডা, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন ও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন এবং এর তত্ত্বাবধানে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করার জন্য তাঁর সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সংস্কারগুলোর বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর পর রাজনৈতিক দলগুলো সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে।
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জ্যাকবসন জোর দিয়ে বলেছেন, নতুন সরকারের অধীন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়া উচিত। তিনি সম্প্রতি দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক শুরু হওয়া ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কেও প্রধান উপদেষ্টাকে জিজ্ঞাসা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি বাংলাদেশি সমাজে পুনর্মিলনের আহ্বান জানিয়েছেন। প্রতিশোধের চক্র ভেঙে দেশে শান্তি ও সম্প্রীতির ভিত্তি তৈরি করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমরা সবাই এই দেশের সন্তান। তাই আমাদের মধ্যে প্রতিশোধের কোনো স্থান থাকা উচিত নয়।’ তিনি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তাদের অভিযানের সময় যেকোনো মূল্যে মানবাধিকার বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য মার্কিন প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য মার্কিন সহায়তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত স্বাস্থ্য গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইসিডিডিআরবির জীবন রক্ষাকারী প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সহায়তা স্থগিত করার মার্কিন সিদ্ধান্তের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বাংলাদেশ ও হাইতির মতো দেশগুলোয় ডায়রিয়া ও কলেরাজনিত মৃত্যু প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে আইসিডিডিআরবির ভূমিকা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইউএসএআইডির ক্ষেত্রে যা–ই ঘটুক না কেন, পুনর্গঠন, সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশের মার্কিন সহায়তা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এটা এখন বন্ধ করার সময় নয়।