Prothomalo:
2025-04-15@18:48:42 GMT

অর্থবহ সংলাপের বিকল্প নেই

Published: 12th, February 2025 GMT

১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। এর আগে ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে এবং এর পূর্ণাঙ্গ বিবরণও অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।

এসব সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা মতামত দিচ্ছেন, যাতে এর নেতি ও ইতি উভয়ই উঠে এসেছে। সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোও অনানুষ্ঠানিক মতামত জানিয়েছে। ১৫ তারিখের জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোকেও ডাকা হবে। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া সংস্কারের পদক্ষেপগুলো ব্যাখ্যা করবেন প্রধান উপদেষ্টা।

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের মূল চেতনাই ছিল স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোও মনে করে রাষ্ট্রকাঠামোকে গণতান্ত্রিক রূপ দিতে যেসব বাধা আছে, সেগুলোও দূর করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে এখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার কথা বলা যায়। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক হয়ে ওঠার পেছনেও ছিল জনগণের ভোটাধিকার হরণ। পরপর তিনটি নির্বাচন তারা করেছিল জবরদস্তিভাবে।

এ ছাড়া আমাদের রাষ্ট্রকাঠামোর যেসব মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ব্যক্তির একচ্ছত্র ক্ষমতাচর্চা, সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের একাকার হয়ে যাওয়া, বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ। কেবল বিগত সরকার নয়, স্বাধীনতার পর থেকে এই একচ্ছত্র ক্ষমতাচর্চা চলে আসছিল।

এই প্রেক্ষাপটে সরকারের সংস্কার প্রস্তাবে সব রাজনৈতিক দলই সমর্থন জানিয়েছে। আবার বিএনপিসহ বেশ কিছু দল বলছে, সংস্কার প্রস্তাব তারা অনেক আগেই দিয়ে রেখেছে, যার সঙ্গে সরকার গঠিত কমিশনের প্রস্তাবের মৌলিক পার্থক্য নেই। একই সঙ্গে তারা এই যুক্তিও দিচ্ছে যে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকার করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম সংস্কার করেই নির্বাচন দেওয়া উচিত।

সবাইকে মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্রের মালিক জনগণ। আর জনগণের রায় নেওয়ার একমাত্র উপায় নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনের বিষয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি রূপরেখা তৈরি করা। নির্বাচন প্রশ্নে সরকার নিরপেক্ষ থাকবে, সেটাই রাজনৈতিক দল ও নাগরিকদের প্রত্যাশা। সে ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্ব নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে অর্থবহ সংলাপের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করা।

সরকারের পক্ষ থেকে যে আভাস–ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তাতে স্পষ্ট যে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তুতি তাদের আছে। এখন রাজনৈতিক দলগুলোকেই মোটাদাগে কতগুলো বিষয়ে একমত হতে হবে। কোনো দলের এমন অবস্থান নেওয়া ঠিক হবে না, যাতে পুরো উদ্যোগই ভেস্তে যায়।

রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ আছে, অতীতের আলোচনাগুলো এত সংক্ষিপ্ত ছিল যে তারা তাদের মতামত ঠিকভাবে জানাতে পারেনি। আমরা আশা করব, সরকার তাদের সংলাপ উদ্যোগকে এমনভাবে সাজাবে, যাতে সব দল খোলাখুলি তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। নির্বাচনের বিষয়ে সমঝোতা হলে রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে যেসব অস্থিরতা আছে, সেগুলোও ধীরে ধীরে কেটে যাবে আশা করা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র মত মত ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

মডেল মেঘনার সঙ্গে এ আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে না: খোদা বখস চৌধুরী

‘মডেল মেঘনা আলমের সঙ্গে এ আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে, বিষয়টা তা নয়। তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি আদালতে গেছে। বিচারাধীন বিষয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।’

মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী বলেন।

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে মেঘনা আলমের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে খোদা বখস চৌধুরী বলেন, আপনার প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছে সরকার একটা বেআইনি কাজ করে ফেলেছে। এই আইন যে ব্যবহৃত হচ্ছে না, তা নয়। তারা আদালতে গেছেন। আদালত আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। আমরা আদালতকে জবাব দেব।

মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়াটা সঠিক হয়নি বলে আইন উপদেষ্টা মন্তব্য করেছেন, আরেক সাংবাদিক এমন প্রসঙ্গ তুলে ধরে খোদা বখস চৌধুরীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন- আইন উপদেষ্টা কোনও প্রেক্ষিতে এই কথা বলেছেন, তা আমরা জানি না। তিনি আমাদের কাছে এ বিষয়ে কিছু জানতেও চাননি। এখন বিষয়টি আদালতে চলে গেছে।

১০ এপ্রিল সুনামগঞ্জে আপনি একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, জনগণ এই সরকারকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চায়, কোন পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেছিলেন- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি তো বলিনি সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়। এটা জনগণ বলেছে। সরকার তো বলে দিয়েছে আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। আমি রাজনীতিবিদ নই। আমার এই কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না।

ডিবির প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পুলিশের পদগুলোতে যাবে, আসবে এটাই নিয়ম। মেঘনা আলমের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাকে সরানো হয়নি। উনি হয়তো অসুস্থ আছেন, সে জন্য তাকে সরানো হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার আট মাস পেরিয়ে গেল, পুলিশ এখনো দায়িত্ব পালন করছে না, জনগণের অভিযোগ নিচ্ছে না এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে খোদা বখস চৌধুরী বলেন, পুলিশ অভিযোগ নেয় না, এটা আজকের অভিযোগ নয়। বহু পুরোনো। অন্তর্বর্তী সরকার দুটি বিষয় অনলাইনে করতে যাচ্ছে। এক, জেনারেল ডায়েরি (জিডি), দুই, এফআইআর বা অভিযোগপত্র। প্রথমে দুটি জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে অনলাইনে জিডি নেওয়া শুরু হবে। পরে এফআইআর নেওয়া শুরু হবে। ধীরে ধীরে একটা স্থায়ী সমাধান হবে।

জুলাই আন্দোলনে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তাদের মধ্যে ধরছেন চুনোপুঁটিদের, রাঘববোয়ালদের ধরছেন না, এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাঘববোয়ালদের কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। তাদের জালে আসতে হবে। রাঘববোয়ালরা জালে আসার পর যদি ছেড়ে দেওয়া হয়, তখন আপনারা অভিযোগ করতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সংলাপ শেষে স্পষ্ট হবে সরকার কতটুকু সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারবে : প্রেস সচিব
  • গ্যাস-তেলের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনের সংকট বাড়াবে: সিপিবি
  • জনগণ সব সময় ফিলিস্তিনের পাশে আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার কথা আমি বলিনি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • মডেল মেঘনার সঙ্গে এই আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে না: খোদা বখস চৌধুরী
  • মডেল মেঘনার সঙ্গে এ আইন প্রথম ব্যবহৃত হচ্ছে না: খোদা বখস চৌধুরী
  • আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় সনদ তৈরি করা যাবে: আলী রীয়াজ
  • জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির আকাঙ্ক্ষিত রাষ্ট্র সংস্কারের দিকে অগ্রসর হতে পারব: আলী রীয়াজ
  • সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মতামত দিল আরও দুই দল
  • নির্বাচনের লক্ষ্যে দ্রুত সংস্কারের তাগিদ