ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস শনিবার দুপুরের মধ্যে জিম্মিদের ফিরিয়ে না দিলে গাজায় যুদ্ধবিরতি বন্ধ করে তীব্র সামরিক অভিযান শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। খবর বিবিসির।

এঘটনায় হামাস জানিয়েছে, তারা অস্ত্রবিরতি চুক্তি মেনে চলতে প্রস্তুত এবং ইসরায়েলকেই যেকোনো জটিলতার জন্য দায়ী করা হবে।

নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের ঘোষণার পরই ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ভেতরে ও চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে এবং এই প্রস্তুতি খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে। যদি শনিবারের মধ্যে হামাস আমাদের জিম্মিদের ফেরত না দেয়, তাহলে অস্ত্রবিরতি শেষ হবে এবং হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।

তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, হামাস যদি শনিবারের জন্য নির্ধারিত তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তবে অস্ত্রবিরতি অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে ইসরায়েলের পরিবহনমন্ত্রী মিরি রেগেভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আমরা স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি— শনিবার সব জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে, যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।

ফলে হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল অস্ত্রবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে এবং মানবিক সহায়তা আটকে দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইসরায়েলকে অস্ত্রবিরতি চুক্তি বাতিল করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, যদি শনিবারের মধ্যে সব জিম্মি মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে যুদ্ধ শুরু হোক।

ঘটনার সূত্রপাত ট্রাম্পের নতুন ঘোষণার পরপরই। হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়, গাজায় মার্কিন প্রশাসন থাকবে এবং দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে সেখানে নতুন অবকাঠামো তৈরি করা হবে। হামাস এটিকে জাতিগত নির্মূলকরণের পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছে।

এদিকে চলমান অস্ত্রবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১৬ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি পাঁচজন থাই নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে হামাস। এখনও হামাসের কাছে ১৭ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়ে গেছে। তাদের মধ্যে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তবে একজনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় সৎ মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে আনোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক সাবেরা সুলতানা খানম এ রায় ঘোষণা করেছেন।

রায় ঘোষণার আগে আনোয়ার হোসেনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিমের মাকে তালাক দেন তার বাবা। এরপর ২০১৫ সালে আনোয়ার হোসেনকে বিয়ে করেন ভিকটিমের মা। দুই সন্তানকে নিয়ে মাদারীপুরে বাবার বাড়িতে থাকতেন তিনি। আনোয়ার হোসেন একা সংসার চালাতে পারছিলেন না। ভিকটিমের মা ঢাকায় এসে গৃহকর্মীর কাজ শুরু করেন। তার দ্বিতীয় সংসারে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। তাকে দেখাশোনার জন্য কেউ ছিল না। আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা বলে ভিকটিমকে ঢাকায় নিয়ে আসেন তার মা। হঠাৎ ভিকটিমের মাকে আনোয়ার হোসেন জানিয়ে দেন, তিনি সংসারের খরচ দিতে পারবেন না। সন্তানদের কথা চিন্তা করে আনোয়ার হোসেনকে ২০২২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তালাক দেন ভিকটিমের মা। ৪ আগস্ট বাসায় এসে আনোয়ার হোসেন ভয় দেখিয়ে সৎ মেয়েকে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ভিকটিমের মা ২০ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন। মামলা তদন্ত করে ২০২৩ সালের ১ এপ্রিল হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ছয় জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ