বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে সরকারের পাঁচ কর্মকর্তা বেশ কয়েক বছর আগে অনুদান পেয়েছিলেন। অনুদান পাওয়া–সংক্রান্ত তথ্যের সঙ্গে তাঁদের ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য সরকারি ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত ছিল। অপরাধীরা এই তালিকা সংগ্রহ করে অনুদান পাওয়া কর্মকর্তাদের ফোন করে। তারা কর্মকর্তাদের আরও অনুদান দেওয়ার কথা বলে তাঁদের ব্যাংক কার্ডের তথ্য নেয়। এরপর জালিয়াতির মাধ্যমে পাঁচজনের কাছ থেকে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় অপরাধীরা।

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত থাকা অনেকটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনা দেশে প্রায়ই ঘটছে। বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, যারা মানুষের ব্যক্তিগত তথ্যের সবচেয়ে বড় ভান্ডার, তাদের থেকেই তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ফলে মানুষ প্রতারণাসহ নানা ধরনের ক্ষতির শিকার হচ্ছে।

গত দুই বছরে দেশে কিছু আলোচিত তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পক্ষের কাছে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ফাঁস করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুনসরকারের পাওনা ১২৬ কোটি টাকা, ফাঁকি দিতে অভাবনীয় জালিয়াতি ওসমান পরিবারের১৪ জানুয়ারি ২০২৫

ব্যক্তিগত তথ্য কী

একজন মানুষকে আলাদা করে শনাক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় যেসব তথ্য রয়েছে, সেগুলোই ব্যক্তিগত তথ্য। যেমন ব্যক্তির নাম, ঠিকানা, স্বাক্ষর, ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, জন্মতারিখ, আঙুলের ছাপ, আইরিশ (চোখের মণির ছবি) ইত্যাদি।

এর বাইরে রয়েছে স্পর্শকাতর তথ্য। এগুলোর মধ্যে আছে জাতিগত পরিচয়, লিঙ্গ, রাজনৈতিক মতাদর্শ, ধর্মীয় বিশ্বাস, স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত তথ্য, ব্যক্তিগত সম্পর্কের তথ্য, আর্থিক তথ্য, পেশাগত তথ্য ও ডিজিটাল তথ্য। আর্থিক তথ্যের মধ্যে আছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, টাকার পরিমাণ, পিন নম্বর, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, লেনদেনের তথ্য। পেশাগত তথ্যের মধ্যে আছে কর্মস্থল, পদবি, বেতন ও পদোন্নতির তথ্য। ডিজিটাল তথ্যের মধ্যে আছে ছবি, ভিডিও, অডিও, লিখিত কোনো কনটেন্ট, ই–মেইল ঠিকানা, পাসওয়ার্ড, পিন নম্বর, মোবাইলের লোকেশনের তথ্য, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রোফাইলের লিংক ইত্যাদি।

ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসে কী ক্ষতি

মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হলে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, তার উদাহরণ বাংলাদেশে অনেক আছে।

টাকা হাতিয়ে নেওয়া: মুঠোফোন থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় ফরিদপুরের একটি গ্রাম পরিচিতি পেয়েছে ‘প্রতারকদের গ্রাম’ নামে। এই গ্রামের প্রতারকেরা গ্রাহকদের মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে। তারা গ্রাহকদের ফোন দিয়ে কৌশলে পিন নম্বর নিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ব্যাংকঋণ: বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট কার্যালয়ে ২০১১ সালে ‘মো.

ফারুক মিয়া’ নামের এক ব্যক্তি প্রথমে অস্থায়ী ও দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে ‘হেলপার-টু-প্লাম্বার’ পদে নিয়োগ পান। ২০১২ সালে নিয়মিত কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ হয় তাঁর। পরবর্তী সময়ে চাকরিবিধি অনুসরণ করে অগ্রিম গৃহনির্মাণের জন্য দুই কিস্তিতে ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ নেন তিনি। ঋণ নেওয়ার পর তিনি উধাও হয়ে যান। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁকে খুঁজতে গিয়ে জানতে পারে, ফারুক আসলে মিনহাজ। তিনি অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত সনদ জালিয়াতি করে চাকরি নেন, ঋণ নেন।

আরও পড়ুনফারুকের নামে ব্যাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছিলেন মিনহাজ, ৫৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে উধাও০২ ডিসেম্বর ২০২৪

ভুয়া সম্পত্তি হস্তান্তর: জাতীয় পরিচয়পত্রের সব তথ্য ঠিক রেখে শুধু ছবি পরিবর্তন করে সম্পত্তি হস্তান্তরের মতো ঘটনা দেশে ঘটেছে। সরকারের পাওনা টাকার দায় এড়াতে নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পরিবার অভাবনীয় জালিয়াতি করেছে। এই পরিবারের নামে থাকা একটি কোম্পানির মালিকানা তিন ব্যক্তির নামে হস্তান্তর করা হয়। এই তিন ব্যক্তির দাবি, তাঁরা এই কোম্পানি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এ ক্ষেত্রে তিন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে এই প্রতারণা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

সিম তুলে প্রতারণা: দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের বাসুদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস। ২০২২ সালের আগস্টে তাঁর বাড়িতে তিন যুবক আসেন। তাঁরা একটি মুঠোফোন কোম্পানির সিম কার্ড বিনা মূল্যে দিচ্ছিলেন। তাঁদের কাছে থেকে সিম কার্ড নেন জান্নাতুল। যুবকেরা জান্নাতুলের আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি নেন। এরপর গত জুলাইয়ে থানা থেকে জান্নাতুলকে নোটিশ করা হয়। বলা হয়, তাঁর সিম দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। অর্থাৎ জান্নাতুলের আঙুলের ছাপ, চোখের মণির ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অপরাধী চক্র আর্থিক প্রতারণা করেছে।

আরও পড়ুনকার্ড জালিয়াতির হোতা শরিফুল ৪ দিনের রিমান্ডে২৫ এপ্রিল ২০১৮

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলা: অন্যের ছবি, নাম-পরিচয় চুরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। এমনকি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে বিভিন্নজনের কাছে টাকাও চাওয়া হয়।

আর্থিক তথ্য: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, টাকার পরিমাণ, পিন নম্বর, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, লেনদেনের তথ্য ইত্যাদি ফাঁস হলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। যেমন একটি সুপারশপের বিক্রয়কর্মী ছিলেন শরিফুল ইসলাম। সুপারশপে কেনাকাটা করতে আসা গ্রাহকদের তথ্য চুরি করে ব্যাংকের এটিএম কার্ড তৈরি করে টাকা তুলে নিতেন তিনি। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছিল, তথ্য চুরি করে হুবহু এটিএম কার্ড তৈরি করতেন শরিফুল। পরে কার্ড দিয়ে গ্রাহকের টাকা তুলে নিজের ও স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে জমা রাখতেন।

স্পর্শকাতর তথ্য: জাতিগত পরিচয়, লিঙ্গ, রাজনৈতিক মতাদর্শ, ধর্মীয় বিশ্বাস, স্বাস্থ্যগত তথ্য, ব্যক্তিগত সম্পর্কের তথ্য ফাঁস হলে একজন ব্যক্তি সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। ধরা যাক, কেউ লিঙ্গবৈচিত্র্যের মানুষ বা ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ। তাঁর এ-সংক্রান্ত তথ্য যদি ফাঁস হয়ে যায়, তাহলে তিনি উগ্রবাদীদের দ্বারা ক্ষতির শিকার হতে পারেন।

আরও পড়ুনরাশিয়া থেকে কার্ড জালিয়াতি শিখে আসেন শরিফুল২৫ এপ্রিল ২০১৮

করণীয় কী

ব্যক্তিসংশ্লিষ্ট তথ্য যদি ফাঁস হয়, তাহলে তা শুধু নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্যই ক্ষতির কারণ হয় না, পরিবারও ক্ষতির মুখে পড়ে। বাংলাদেশে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের বিপরীতে সরাসরি কোনো আইনি সুরক্ষা নেই। তবে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার জন্য সরকার একটি আইনের খসড়া করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যারিল্যান্ডের ডিভিশন অব ইনফরমেশন টেকনোলজির ওয়েবসাইটে গত বছরের নভেম্বরে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, ব্যক্তিগত পরিচয়সংক্রান্ত তথ্য চুরি কোনো মজার বিষয় নয়। কারও ব্যক্তিগত বা আর্থিক তথ্য চুরি বা ফাঁস হলে প্রথম হয়তো তা বোঝা যায় না। কিন্তু যখন বড় একটি বিল ধরিয়ে দেওয়া হয় বা ঋণদাতার কাছ থেকে হঠাৎ ফোন আসে, তখন বিপদ টের পাওয়া যায়।

আরও পড়ুনএনআইডির তথ্য ফাঁস হয়েছে পাঁচ প্রতিষ্ঠান থেকে১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেনও মনে করেন, মানুষ বুঝতেই পারে না ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হলে তার পরিণতি কী হতে পারে। সচেতনতার অংশ হিসেবে গ্রাহকের দিক থেকে বিশ্বস্ত জায়গা ছাড়া অন্যত্র ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে আসা উচিত নয়। পাবলিক জায়গায় সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। যেসব অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে তথ্য দেওয়া হচ্ছে, তাদের ব্যাপারে আগেই ভালোভাবে জানা উচিত।

এই অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল সাক্ষরতার হার যেহেতু অনেক কম, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে মানুষের সচেতনতা কম, তাই সেবাদাতাদের সুরক্ষার বিষয়ে জোর দিতে হবে। তারা তথ্যগুলো দিয়ে কী করছে, তার জবাবদিহি থাকা উচিত। তথ্য যাচাইয়ের বিষয়টি কয়েক ধাপে হওয়া উচিত। পাশাপাশি দরকার আইনি সুরক্ষা। আর ব্যক্তিগত তথ্য যদি ফাঁস হয়েই যায়, তবে বুঝতে পারামাত্রই দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। পাশাপাশি ঝুঁকি এড়াতে পাসওয়ার্ড, ফোন নম্বর, ই–মেইল পরিবর্তন করা যাতে পারে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র পর ব র র জন য র ঘটন অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায়, পরা যাবে না মুখোশ

আগামীকাল পয়লা বৈশাখ। চারুকলা অনুষদের আয়োজনে প্রতিবছরের মতো এবারও বের হবে শোভাযাত্রা। তবে শোভাযাত্রায় পরা যাবে না কোনো ধরনের মুখোশ এবং নিরাপত্তার স্বার্থে সঙ্গে নিতে হবে পরিচয়পত্র। 

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' শুরু হবে। 

রবিবার(১৩ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সব জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, উৎসবমুখর পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলা নববর্ষ উদযাপনে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আগামীকাল সকাল ৯টায় চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করা হবে।

বিজ্ঞপ্তির বর্ণনায় বলা হয়, সকাল ৮টা থেকে শোভাযাত্রার প্রস্তুতি চলবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা শুধু নীলক্ষেত ও পলাশী মোড় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। শোভাযাত্রা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রবেশ পথ ও সংলগ্ন সড়ক বন্ধ থাকবে। শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্য রক্ষার্থে আশপাশ দিয়ে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করা যাবে না। শেষ প্রান্ত দিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণের জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। নিরাপত্তার স্বার্থে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুদিনের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা অব্যাহত রেখে অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য লোক-ঐতিহ্য ও ২৪ এর চেতনাকে ধারণ করে আরো বড় পরিসরে এবং বৈচিত্র্যপূর্ণভাবে এবছর শোভাযাত্রায় সর্বজনীন অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। শোভাযাত্রায় এ বছর ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথিবৃন্দ অংশ নেবেন। এই বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় এ বছর থাকবে ৭টি বড় মোটিফ, ৭টি মাঝারি মোটিফ এবং ৭টি ছোট মোটিফ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, পয়লা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে চারুকলা অনুষদ থেকে প্রস্তুতকৃত মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজিলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। 

বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা চলাকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের জন্য ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ রাজু ভাস্কর্যের পেছনের গেইট,  চারুকলা অনুষদ সম্মুখস্থ ছবির হাটের গেইট এবং বাংলা একাডেমির সম্মুখস্থ রমনা কালী মন্দির সংলগ্ন গেইট বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

শৃঙ্খলা বজায়ের স্বার্থে যানবাহন সম্পর্কিত নির্দেশনা দেওয়া  হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়, ক্যাম্পাসে নববর্ষে সব ধরনের অনুষ্ঠান আগামীকাল বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে বিকাল ৫টা পর্যন্ত প্রবেশ করা যাবে। ৫টার পর কোনোভাবেই প্রবেশ করা যাবে না, শুধু বের হওয়া যাবে। 

নববর্ষ উপলক্ষে আজ ১৩ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা ৭টার পর ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত গাড়ি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। নববর্ষের দিন ক্যাম্পাসে কোন ধরনের যানবাহন চালানো যাবে না এবং মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসবাসরত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব গাড়ি নিয়ে যাতায়াতের জন্য শুধু নীলক্ষেত মোড় সংলগ্ন গেইট ও পলাশী মোড় সংলগ্ন গেইট ব্যবহার করতে পারবেন।

নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। 

গত শতকের আশির দশকে সামরিক শাসনের অর্গল ভাঙার আহ্বানে পয়লা বৈশাখে চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হয়েছিল; সেটিই পরে মঙ্গল শোভাযাত্রায় রূপ নেয়। ২০১৬ সালে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পায় এ কর্মসূচি। তবে বর্ষবরণের অন্যতম আয়োজন ‘মঙ্গল শোভযাত্রা’ নামটি এবারের আয়োজনে থাকছে না। এই শোভাযাত্রার নাম থেকে ‘মঙ্গল’ শব্দটি বাদ দিয়ে নতুন নামকরণ হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।

ঢাকা/সৌরভ/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায়, পরা যাবে না মুখোশ