Samakal:
2025-02-12@04:37:47 GMT

প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসবের আবহ

Published: 12th, February 2025 GMT

প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসবের আবহ

ভিড় তো বেড়েছেই। বিভিন্ন স্টলে পছন্দের বইয়ের খোঁজে ছুটে আসছেন পাঠক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, শিশুতোষ রচনা– সব ধরনের বইয়ের চাহিদা বাড়ছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ওপর প্রকাশিত বইয়ের বিক্রি বেশি। 

গতকাল মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলায় কথাগুলো বলছিলেন ঐতিহ্য প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধি জোবায়ের। সরেজমিন দেখা যায়, ঐতিহ্যের স্টলে উপচে পড়া ভিড়। পাশে বাতিঘরের স্টলেও ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। স্বল্প পরিসরে সুন্দর করে সাজানো স্টলের প্রতি আগ্রহ বেশি তরুণদের। রিকশা পেইন্টের আদলে নকশা করা স্টল কুঁড়েঘরের সামনে শাড়ি পরে তরুণীদের ছবি তুলতে দেখা যায়। ঢাকা কমিকসের স্টলে শিশু-কিশোরদের ভিড় লেগেছিল। তাদের চোখ আটকে ছিল নতুন কমিকসে। 

স্কুল-কলেজে গতকাল ছিল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঘী পূর্ণিমার ছুটি। এর প্রভাব পড়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মেলা প্রাঙ্গণে। স্কুলপড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের ভিড় ও প্রাণচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে ওঠে পরিবেশ। এমনকি শিশু চত্বরেও দেখা যায় বেশ ভিড়। সন্তানদের নিয়ে এসেছেন অভিভাবকরা। ময়ূরপঙ্খী স্টলের সেলসের দায়িত্বে থাকা বীথি বলেন, গত শুক্রবার থেকে মেলায় ভিড় বাড়ছে। মাঝের দু’দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি একটু কম ছিল। তবে মঙ্গলবার তা আবার বেড়েছে।

সম্প্রীতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম বিল্লাল বলেন, যা প্রত্যাশা করেছিলাম, লোকসমাগম ও বিক্রি তার চেয়ে অনেক বেশি। লিটল ম্যাগ চত্বরেও গতকাল সন্ধ্যায় বেশ পাঠকের আনাগোনা দেখা যায়।

সন্তানদের স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের নিয়ে আজিমপুর থেকে এসেছেন আহমেদ শফী। তিনি বলেন, আজ অফিস খোলা। তবু এমন ভিড় হবে, ভাবিনি। তবে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড়ের মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণে বিপুল সংখ্যক হকারের আনাগোনাও দেখা গেছে। কয়েক স্থানে ধূমপান করতেও দেখা যায়, যা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন দর্শক ও পাঠকরা। দর্শনার্থী মাহিদ বলেন, এখানে নারী-শিশুসহ সবাই আসেন। তার মধ্যে ধূমপান বিরক্তিকর।

মেলা প্রাঙ্গণে গত সোমবার ‘সব্যসাচী’ স্টলে হট্টগোলের কোনো প্রভাব মেলায় পরিলক্ষিত হয়নি। কেবল মেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়েছে পুলিশের পাহারা। বন্ধ থাকা সব্যসাচী স্টলের সামনে উৎসুক জনতাকে ছবি তুলতে দেখা যায়। অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এর মেলার ১১তম দিনেও ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গানটি তেমন শোনা যায়নি। 

নতুন বই
গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ৯১টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য– বাংলা একাডেমি থেকে মোহাম্মদ আশরাফুল হাবীবের ‘কুশান গানের পরিবেশনা রীতির বিবর্তনে গায়েন-অভিনেতার ভূমিকা’; পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লি.

থেকে তাপস রায়ের ‘রসিক শরৎচন্দ্র’; ভাবনা প্রকাশ থেকে মো. গোলাম রব্বানীর ‘কুড়িয়ে পাওয়া’; বৃত্তকলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত ফিরোজ আহম্মেদের ‘রক্তের প্লাবনে আর্তনাদ’; মাছরাঙা প্রকাশন থেকে সম্পাদনা পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিত সাহিত্য সংকলন ‘২৪শের আলোর মিছিল’ (চতুর্থ সংকলন)।

মূল মঞ্চের আয়োজন
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আদর্শায়িত কল্পলোক ও শাহেদ আলীর ‘দ্বিধাচিত্ত মন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। চঞ্চল কুমার বোসের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিবলী আজাদ। আলোচনায় অংশ নেন মোস্তাক আহমাদ দীন। শিবলী আজাদ বলেন, শাহেদ আলীর গল্পে যেমন দার্শনিক প্রতীতি রূপায়ণের চেষ্টা রয়েছে, তেমনি রয়েছে সামাজিক বৈষম্য আর অনাচার ফুটিয়ে তোলার প্রয়াস। তাঁর রচনাগুলো উত্তাল সময়, ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধকালের বৌদ্ধিক ও নান্দনিক প্রতীতির প্রতি লেখকের এক ধরনের প্রতিক্রিয়া।

মোস্তাক আহমাদ দীন বলেন, রাজনীতি-সচেতন সক্রিয় ব্যক্তিত্ব শাহেদ আলী সাহিত্যের বিভিন্ন অঙ্গনে তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। তাঁর রাজনৈতিক ও সৃষ্টিশীল জীবনকে কখনও একাত্ম করেননি। এমনকি তাঁর গল্পের মধ্যে কঠোর নীতিবোধও আরোপ করেননি।

‘লেখক বলছি’ মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন নাসির আলী মামুন এবং মামুন সারওয়ার। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন কবি মুস্তাফা মজিদ, শফিকুল ইসলাম বাহার ও আনজুমান আরা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মো. সালমান, মাহমুনুল হক সিদ্দিক, জাকির হোসেন আখের, সঞ্জয় কুমার দাস, শরণ বড়ুয়াসহ অনেকে।

আজকের আয়োজন
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এর কবিতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। ফরহাদ মজহারের সভাপতিত্বে এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন হাসান রোবায়েত; আলোচনায় অংশ নেবেন মঈন জালাল চৌধুরী ও আশফাক নিপুন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল বইম ল উপস থ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইসলাম উদ্দিনের কিচ্ছার রাত শেষ হলো ‘দেওরা’ দিয়ে

ভৈরবে অনুষ্ঠিত হলো সপ্তম ভৈরব পিঠা উৎসব। গতকাল রোববার ইসলাম উদ্দিন পালাকারের পালার মধ্য দিয়ে শেষ হয় তিন দিনব্যাপী এ আয়োজন। পালা ছাড়াও উৎসবে লাঠিখেলা, পুতুল নাচ, আঞ্চলিক ভাষায় আবৃত্তি, নৃত্য, পুঁথিপাঠ, যন্ত্রসংগীতের মেলবন্ধন, মঞ্চনাটক, বাউলগানসহ বাঙালি সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক উঠে এসেছিল। উৎসব ঘুরে এসে লিখেছেন নাজমুল হক

মাঘের সন্ধ্যা, সরকারি কাদির বকস পাইলট মডেল হাইস্কুল মাঠে তখন তিলধারণের জায়গা নেই। ইসলাম উদ্দিন পালাকারের পালা দেখতে এদিন হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। এর মধ্যে কারও কারও পালা দেখার অভিজ্ঞতা থাকলেও বেশির ভাগই দর্শকই প্রথমবারের মতো সামনে থেকে দেখতে এসেছেন পালা। আবার তরুণদের অনেকেই এসেছিলেন ইসলাম উদ্দিনের কণ্ঠে ‘দেওরা’ গান শুনতে। রাত সাড়ে নয়টায় মঞ্চে এসে টানা দুই ঘণ্টা ‘কমলা রানির সাগর দিঘির পালা’র অংশবিশেষ শোনান ইসলাম উদ্দিন পালাকার। পালা শেষে ‘দেওরা’ ও ‘বিয়ে কেন হলো না’ গান গেয়ে মঞ্চ থেকে বিদায় নেন তিনি।

এদিন অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাট্যকার, নির্মাতা ও অভিনেতা কচি খন্দকার ও অভিনেতা আবদুল্লাহ আল সেন্টু। পালা শেষে প্রতিক্রিয়ায় কচি খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইসলাম উদ্দিনের অনেক নাম শুনেছি, আজ প্রথম সামনে থেকে তাঁর পালা শুনলাম। তিনি অসম্ভব গুণী একজন শিল্পী, মুগ্ধ হয়ে পালা শেষ করলাম। পালা শেষে তাঁর গানে, তরুণদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখলাম, তা অনেক দিন মনে থাকবে।’

আলোচনা পর্ব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভালোবাসা দিবসের আয়োজন
  • শেষ হলো কেয়ার অব ঢাকার স্প্রিং কার্নিভাল
  • গ্রিন ইউনিভার্সিটির পিঠা উৎসবে মিলনমেলা
  • কুমারখালীর নাট্যোৎসবে ‘রক্ত গন্ধা জুলাই’
  • সিনেমা হলে আবেগে ভাসলেন শতাধিক রিকশাচালক
  • নড়াইলে ঐতিহ্যবাহী পলো উৎসব
  • চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার আয়োজন: আনন্দ-উৎসবে মেজবান মিলনমেলা
  • সৃজনে-মননে তারুণ্যের প্রত্যয়
  • ইসলাম উদ্দিনের কিচ্ছার রাত শেষ হলো ‘দেওরা’ দিয়ে