রাতের শেষ প্রহরে রাসুলুল্লাহ (সা.) কী আমল করতেন
Published: 12th, February 2025 GMT
রাত তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত সময়কে রাতের শেষ প্রহর বলা হয়। অনেক গবেষক রাত তিনটা থেকে সুবহে সাদিকের আগের সময়কে রাতের শেষ প্রহর বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রহর গণনার হিসাব অনুযায়ী এ সময়কে রাতের চতুর্থ প্রহর বলা হয়। রাতের চারটি প্রহর সম্পর্কে কবি লিখেছেন, ‘প্রথম প্রহরে সবাই জাগে, দ্বিতীয় প্রহরে ভোগী। তৃতীয় প্রহলে তষ্কর (চোর) জাগে, চতুর্থ প্রহরে যোগী (সাধক)।’
আবু হুরায়রা (রা.
সূর্যাস্ত বা মাগরিবের আজানের মাধ্যমে দিনের সমাপ্তি হয় এবং রাতের সূচনা ঘটে—এ ব্যাপারে সব ফকিহ একমত। তবে রাত শেষ হওয়ার সময় নিয়ে ফকিহদের মধ্যে বিভিন্ন মতামত দেখা যায়। কেউ বলেছেন, সুবহে সাদিক শুরু হওয়া মানে রাত শেষ হওয়া। আবার কেউ বলেছেন, ফজরের আজান পর্যন্ত রাত মানে সূর্যাস্তের মাধ্যমে রাতের সূচনা হয় আর সূর্যোদয়ের মাধ্যমে রাত শেষ হয়। ইসলামিক ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ রচিত নামাজ ও সাহরি-ইফতারের সময়সূচি অনুযায়ী সূর্যোদয়ের সর্বমধ্যম সময় হলো সকাল ৫টা ১০ মিনিট, আর সূর্যাস্ত বা ইফতারের সর্বমধ্যম সময় হলো সন্ধ্যা ৫টা ২৫ মিনিট। এই হিসাবমতে, একটি রাতের মোট সময় পাওয়া যায় ১১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। এই সময়কে ৩ ভাগে ভাগ করলে প্রতি ভাগে ৩ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটের কিছু কম-বেশি হয়। এই হিসাব অনুযায়ী, রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ৫টা ৫ মিনিট পর্যন্ত রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। রাতের শেষ প্রহরকে বিশেষভাবে তাৎপর্যমণ্ডিত করেছেন আল্লাহ–তায়ালা।
আরও পড়ুনসুরা তুরে জান্নাতের কিছু নেয়ামতের বর্ণনা১১ আগস্ট ২০২৩হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনার আলোকে রাতের শেষ প্রহরে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাজ ও আমলের বর্ণনাগুলো তুলে ধরা হলো।
১. আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) শেষ রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠতেন এবং তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতেন। (বুখারি, হাদিস: ১১২০)
২. রাসুল (সা.) রাতের শেষ প্রহরে ঘুম থেকে উঠে দোয়া পড়তেন। এ সময় তাঁর বেশ কয়েকটি দোয়া পাঠের অভ্যাসের কথা বিভিন্ন হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়। এর মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ দোয়াটি হলো: আলহামদুলিল্লা হিল্লাজি আহইয়ানা বায়দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।
এর অর্থ: সব প্রশংসা ওই আল্লাহ–তায়ালার জন্য, যিনি আমাদেরকে (ঘুমের মাধ্যমে) মৃত্যু দান করার পর পুনরায় জীবিত করেছেন এবং একমাত্র তাঁর কাছেই আমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে। (বুখারি, হাদিস: ৬,৩১২, ৬,৩১৪, ৭,৩৯৪)
৩. ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘুমিয়ে পড়লেন। রাত যখন অর্ধেক হয়ে গেল তার কিছু আগে বা পরে তিনি জাগলেন। এরপর বসে হাত দিয়ে তাঁর মুখমণ্ডল থেকে ঘুমের আবেশ মুছতে লাগলেন। অতঃপর সুরা আলে ইমরানের শেষ দশটি আয়াত তিলাওয়াত করলেন। (বুখারি, হাদিস: ১৮৩)
৪. রাসুল (সা.) প্রতি রাতে ঘুম থেকে জেগে মেসওয়াক করতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে একটি রাত যাপন করলাম। যখন তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠলেন, তখন অজুর পানির কাছে গেলেন এবং মেসওয়াক নিয়ে মেসওয়াক করলেন। (আবু দাউদ, হাদিস: ৫৮)
আরও পড়ুনজান্নাতে আল্লাহর প্রতিবেশী হতে চেয়েছেন যে নারী১১ আগস্ট ২০২৩৫. আনাস ইবনে মালেক (রা.) জানিয়েছেন, শৌচাগারে ঢোকার সময় রাসুল (সা.) পড়তেন, আল্লাহুম্মা ইন্ন আউজুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খকাবায়িছ।
এর অর্থ: হে আল্লাহ! আমি পুরুষ ও নারী জিনের (অনিষ্ট) থেকে আপনার আশ্রয় কামনা করছি। (মুসলিম, হাদিস: ৩৭৫)
শৌচাগার থেকে বের হওয়ার সময়ও একটি দোয়া পড়তেন রাসুল (সা.)। দোয়াটি হলো: গুফরানাকা আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আজহাবা আননিল আজা ওয়া আফানি।
এর অর্থ: হে আল্লাহ! আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দিয়েছেন এবং আমাকে মুক্তি দিয়েছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, ১০/৪৫৪)
আরও পড়ুনবাল্যবিবাহ নিয়ে ইসলামের অভিজ্ঞতা কী১২ আগস্ট ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ত র শ ষ প রহর আল ল হ কর ছ ন র সময় আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
ব্র্যাক ব্যাংক ও বিএসআরএম গ্রুপের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি
ব্র্যাক ব্যাংকের সাথে একটি স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিএসআরএম গ্রুপ।
ব্র্যাক ব্যাংকের বিভিন্ন বিশেষায়িত ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে বিএসআরএম গ্রুপের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করাই এই পার্টনারশিপের উদ্দেশ্য।
বিএসআরএম গ্রুপ ব্র্যাক ব্যাংকের বিস্তৃত ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক এবং উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে কাস্টমাইজড কর্পোরেট ও ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং সেবাগুলোর সুবিধা গ্রহণ করবে।
২০২৫ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সদরঘাটে অবস্থিত বিএসআরএম গ্রুপের কর্পোরেট অফিসে এই পার্টনারশিপ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বিএসআরএম গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমীর আলীহোসাইন এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড হেড অব কর্পোরেট অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল ব্যাংকিং তারেক রেফাত উল্লাহ খান।
এছাড়াও বিএসআরএম গ্রুপের পক্ষে ডিরেক্টর যোহায়ের তাহেরালী, হেড অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড কোম্পানি সেক্রেটারি শেখর রঞ্জন কর এফসিএ এবং ব্র্যাক ব্যাংকের হেড অব রিজিওনাল কর্পোরেট কায়েস চৌধুরীসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এই পার্টনারশিপ উভয় প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ও পরিচালনাগত উৎকর্ষ সাধনের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এটি ব্র্যাক ব্যাংকের আধুনিক, দক্ষ ও প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে কর্পোরেট গ্রাহকদের ক্ষমতায়িত করার প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।
ঢাকা/সাজ্জাদ/এসবি